“আমি বুদ্ধের নামে গেরুয়া বসনে পঞ্চশীল শুনাবো আমি বুদ্ধের নামে সংকীর্তনে সারাটি বিশ্ব ঘুরিব। অহিংসা মন্ত্রে অশান্ত পৃথিবী; শান্ত করিয়া দেব।” শাক্যমিত্র বড়ুয়ার কীর্তনের হৃদয়স্পর্শীয় এইটুকু চরণখানির ভাবাবেগ একটি কাল্পনিক
ভ্রাতৃত্ববোধ কথাটার ব্যাপকতার চেয়ে গভীরতা খুব বেশি। কোনো মানুষকে সহজে আপন বা নিজ ভাইয়ের মতো করে নেওয়া সহজ নয়। আবার মৌখিকভাবে ‘ভাই’ সম্বোধন করে নৈকট্য লাভ করা এক জিনিস, অন্যদিকে
বাংলা ভাষার উৎপত্তি সম্পর্কে নানা মুনির নানা মত রয়েছে। কারও মতে খ্রিস্টীয় নবম-দশক শতকে। কারও মতে, হাজার থেকে দ্বাদশ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে এবং কারও কারও মতে, সপ্তম থেকে অষ্টম খ্রিস্টাব্দের মধ্যে
জীবনের উদ্দেশ্য হল সুখের জন্য চেষ্টারত হওয়া। আমরা এখানে আছি; আমরা বেঁচে আছি এবং আমাদের বেঁচে থাকার অধিকার আছে। এমনকি নির্জীব বস্তু, যেমন- ফুলদেরও বেঁচে থাকার অধিকার আছে। যদি তাঁদের
দক্ষিন এবং দক্ষিনপূর্ব এশিয়ায় থেরবাদী বৌদ্ধধর্ম ভারত সপ্তম শতাব্দী থেকে ভারতে বৌদ্ধধর্মের প্রভাব কমতে থাকে। তারপর দ্বাদশ শতকে পাল সাম্রাজ্যের পতনের পর হয় অন্তর্হিত। টিকে রইল শুধু উত্তরের হিমালয় অঞ্চলে।
মিশনারি (ধর্ম-প্রচারক) আন্দোলনের বিকাশ কখনও না হওয়া সত্ত্বেও বুদ্ধের শিক্ষাগুলি বহু শতাব্দী ধরে দূর-দূরান্তে ছড়িয়ে পড়েছিল। প্রথমে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়াতে, তারপর মধ্য-এশিয়ার মধ্য দিয়ে চীন ও বাকী পূর্ব এশিয়া, এবং অবশেষে
বাংলাদেশের ইতিহাসে জাতিসত্তা হিসেবে বৌদ্ধরা অতি প্রাচীন। ভারত-বাংলা উপমহাদেশের ইতিহাস-ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি বিনির্মাণে বৌদ্ধদের অসামান্য অবদান রয়েছে। এদেশের মহান স্বাধীনতা সংগ্রামসহ প্রতিটি প্রগতিশীল আন্দোলন-সংগ্রামে বৌদ্ধদের গৌরবময় ইতিহাস লক্ষ্য করা যায়।
রক্তাক্ত যুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশ সৃষ্টির ইতিহাসের সাথের এদেশের বৌদ্ধরাও জড়িত। ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোরনের কর্ম ধারাকে অব্যাহত রেখে রাঙালি বৌদ্ধসম্প্রদায় পাক আমলে এদশের সকল গণতান্ত্রিক ও প্রগতিশীল আন্দোলনে অংশ গ্রহণ করেছিলেন।
প্রখ্যাত রবীন্দ্র-জীবনীকার কৃষ্ণ কৃপালনির জবানিতে জানা যায়, রবীন্দ্রনাথ বলেছেন যে, ‘জীবনে একবারমাত্র একটি মূর্তির সামনে আমার প্রণত হওয়ার প্রেরণা জেগেছিল, সেটা বুদ্ধগয়ায়, যখন আমি বুদ্ধমূর্তি দর্শন করি।’ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের এই
বুদ্ধ ও বৌদ্ধধর্ম সম্পর্কে পৃথিবীর বিখ্যাত মানুষের গবেষণার শেষ নেই। এশীয় খণ্ডের লোকেরা যতটুকু গবেষণা করেছেন বা করে চলেছেন, তারচেয়েও অধিক গবেষণা করে চলেছেন আধুনিক পাশ্চাত্য বৈজ্ঞানিক, ঐতিহাসিক ও দার্শনিকগণ।