কলকাতা মানেই তিলোত্তমা এই শহরে শাক্ত বাঙালি ছাড়াও বিভিন্ন ধর্মের মন্দিরের অবস্থান রয়েছে, এ কথা কতজন কলকাতাবাসী জানেন? চিনা, বৌদ্ধ, শিখ ধর্মাবলম্বীদের ধর্ম প্রতিষ্ঠানগুলিতে পরিদর্শন করলে আপনি শান্তির সন্ধান করতে পারেন। তবে জানেন কী, এই শহরের বুকেই রয়েছে জাপানি বৌদ্ধ বিহার। কালীঘাট মন্দির থেকে ১২ মিনিট দূরে নিপ্পনজান মায়োহোজি নামে এক জাপানি বৌদ্ধ মঠ অবস্থিত। জাপানিদের বিশ্বাস, এই মঠটি শান্তি ও প্রশান্তির জন্য আদর্শ জায়গা।
দক্ষিণ কলকাতার লেক রোডে অবস্থিত এই বিহারটি ১৯৩০ সালে প্রতিষ্ঠা করা হয়। বৌদ্ধধর্মের নিপ্পনজান মায়োহোজি রূপ বা নিপ্পনজান-মায়োহাজি-ডাইসাঙ্গা বৌদ্ধধর্ম অনুসরণ করে অপূর্ব সুন্দর বিহারটি তৈরি করা হয়েছে। ১৯১৭ সালে নিচিদাতসু ফুজি দ্বারা প্রতিষ্ঠিত। জানা যায় এই সম্প্রদায়ের মানুষ লোটাস সূত্রকে শ্রদ্ধা জানিয়ে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। সুন্দর এই বিহারটি শান্তির আবাসস্থল। কলকাতাবাসীরা তো বটেই, যারা আসন্ন শীতে কলকাতার আনাচে-কানাচে ঢুঁ দেওয়ার পরিকল্পনা করছেন, তাঁরা একবার এ বিহারটি পরিদর্শন করার ইচ্ছা প্রকাশ করতে পারেন।
একান্তে শান্তিতে সময় কাটানার জন্য এই বিহারে দু-দণ্ড বসলেই তা টের পাবেন। দোতলা বিহারের একটি তল প্রার্থনা হল, যা দর্শনার্থীদের জন্য খোলা থাকেষ এখানে প্রার্থনা কক্ষে বেদীর উপর বুদ্ধমূর্তি প্রতিষ্ঠিত। নিপ্পনজান মায়োহোজির দ্বিতীয় তলে রয়েছে ধ্যান কক্ষ, আর্য ধর্মগ্রন্থাগার। যারা জাপানি ভাষা জানেন, তাঁরা এখানে লাইব্রেরিতে প্রচুর জাপানি সাহিত্যের বই পাবেন।
সকালে প্রার্থনার সময় ও সন্ধ্যেতে প্রার্থনার সময় মন্দির পরিদর্শন করার সুযোগ পাবেন। ভোর ৫টা থেকে সকাল ৭টা পর্যন্ত সকালের প্রার্থনা হয়। অন্যদিকে বিকেল ৫টা থেকে সন্ধ্যে ৭টা পর্যন্ত সন্ধ্যের প্রার্থনা করা হয়ে থাকে। বুদ্ধ পূর্ণিমার সময় এই বিহারে অত্যন্ত ধুমধাম করে পালন করা হয়। বৌদ্ধদের অন্যতম শুভ উত্সবের দিন এই মন্দিরে অবাধ প্রবেশের অনুমতি থাকে।