এখন আর আগের মতো আয়োজন না হলেও মন্দিরে প্রতিদিনই বিভিন্ন এলাকা থেকে মানুষ প্রার্থনা করতে আসে।
মন্দিরের তত্ত্বাবধায়ক মংসাথোয়াই চৌধুরী বলেন, ‘নদীভাঙনে মন্দিরের দুই একরের বেশি জমি বিলীন হয়ে গেছে। নদীগর্ভে ছয়টি বটগাছ তলিয়ে গেছে। এখন বৃষ্টি হলেই ভয়ে থাকি, কখন যেন বনভান্তের স্মৃতিমন্দিরটি তলিয়ে যায়। মন্দিরটি ঘিরে আছে আমাদের বৌদ্ধসম্প্রদায়ের অনেক স্মৃতি।’
স্থানীয় কলেজপাড়ার বাসিন্দা সুগত চাকমা জানান, শুধু মন্দির নয়, আশপাশের চৌধুরীপাড়া, কলেজগেট, বগাপাড়া, স্কুলপাড়া, লতিবান, শান্তিপুরসহ আশপাশের এলাকার তিন শ একরের বেশি জমি ও বাগান নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।
মন্দির কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ১৯১৭ সালে স্থাপিত মন্দিরটি একসময় উপজেলার বৌদ্ধধর্মালম্বীদের একমাত্র উপাসনালয় ছিল। মন্দির প্রাঙ্গণে বছরে দুইবার মেলাও বসত। এ ছাড়া বৈসাবি উপলক্ষেও থাকত নানান আয়োজন। তবে এখন আর আগের মতো আয়োজন না হলেও মন্দিরে প্রতিদিনই বিভিন্ন এলাকা থেকে মানুষ প্রার্থনা করতে আসে।
এলাকাবাসী জানান, মন্দির রক্ষার্থে পার্বত্য জেলা পরিষদ, উন্নয়ন বোর্ড, পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ (পাউবো) প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে একযুগ ধরে অভিযোগ জানানোর পরও কোনো কাজ হয়নি।
মন্দিরে আসা রুমেল মারমা, প্যাইক্রই মারমা ও সুজিতা চাকমা বলেন, মন্দিরে প্রতিদিন তিনবার পূজা হয়। পূর্ণিমা, অষ্টমী ও অমাবস্যা উপলক্ষেও বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। বিশেষ দিবস ছাড়াও প্রতিদিনই মন্দিরে অনেক মানুষ আসে।
পানছড়ি উপজেলার প্যানেল চেয়ারম্যান চন্দ্র দেব চাকমা বলেন, পরিষদের স্বল্প বরাদ্দে এত বড় প্রকল্প হাতে নেওয়া সম্ভব নয়। তিনি দায়িত্ব নেওয়ার আগেও মন্দিরটি রক্ষার জন্য বিভিন্ন দপ্তরে তিনি যোগাযোগ করেছেন। এখনো সেটি অব্যাহত আছে, কিন্তু এতে কোনো কাজ হয়নি। শতবর্ষী এই মন্দির রক্ষার জন্য জেলা পরিষদ, উন্নয়ন বোর্ড ও পাউবোর সহযোগিতা প্রয়োজন।
পাউবোর খাগড়াছড়ি কার্যালয়ের উপপরিচালক নুরুল আফসারী বলেন, একটি প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। বরাদ্দ এলেই প্রথমে মন্দির রক্ষার কাজটি শুরু করা হবে।
(প্রথম আলো থেকে নেয়া….)