কুমিল্লার নব শালবন বিহারের পাশেই দর্শনীয় এক স্থাপনা বিশ্বশান্তি প্যাগোডা। লকডাউন ঘোষণার আগ পর্যন্ত এই প্যাগোডা দেখতে প্রতিদিন আসতো দর্শনার্থীরা। নব শালবন বিহার কুমিল্লা নগরীর কোটবাড়ি শালবন বিহার মাঠের পশ্চিম পাশে অবস্থিত। আকর্ষণীয় স্থাপনা বিশ্বশান্তি প্যাগোডা বৌদ্ধ ধর্মীয় সম্প্রদায়ের উপাসনালয়। শান্তি প্যাগোডার সোনালি রঙের ডিজাইন আর বুদ্ধ মূর্তিতে সূর্যের আলো পড়ে চারপাশ ঝলমল করে উঠে। পাশে রয়েছে বর্ণিল ফুলের মেলা।
নব শালবন বিহারের সূত্রমতে, ১৯৯৫ সালে দেড় একর ভূমির উপর নব শালবন বিহার প্রতিষ্ঠিত হয়। সেখানে ধর্মীয় উপাসনালয়, অনাথ আশ্রম, অতিথিশালা স্থাপন করা হয়। তার পাশে ২০১৭ সালে থাইল্যান্ডের বিভিন্ন ব্যক্তির অর্থ সহায়তায় নির্মিত হয় বিশ্বশান্তি প্যাগোডা। বিশ্বশান্তি প্যাগোডা নির্মাণে ব্যয় হয় প্রায় ১৮ কোটি টাকা। এর উপরে ওঠার তিন দিকে সিঁড়ি রয়েছে। ওঠার মুখে রয়েছে সোনালি রঙের নাগরাজের প্রতিকৃতি। ২য় তলায় পূর্বপাশে বড় আকারের বুদ্ধের মূর্তি। ২য় তলায় উপাসনালয়। ৩য় ধাপে চার পাশে চারটি মূর্তি। সেগুলো শ্রীলংকান, থাইল্যান্ড, জাপানিজ ও গান্দারা (ভারত) অঞ্চলে প্রচলিত মূর্তির আকৃতিতে তৈরি। তার উপরের ধাপে চারটি পিতলের চূড়া। সবার উপরে পিতলের বড় চূড়া। সেটির ওজন পাঁচ টন, আনা হয় থাইল্যান্ড থেকে। দরজায় করা হয়েছে থাই গাছের কাঠের নকশা। ফি দিয়ে দর্শনার্থীরা বিশ্বশান্তি প্যাগোডা দেখতে আসেন।
আরও পড়ুনঃ প্রতিযোগিতা ঘোড়দৌড়ের মিলনমেলা মানুষের
নব শালবন বিহারে গিয়ে দেখা যায়, বিশ্বশান্তি প্যাগোডায় শেষ বিকালের আলো ছড়িয়ে পড়েছে। সোনালি রঙের নকশা আর স্থাপনায় আলো পড়ে বর্ণিল পরিবেশের সৃষ্টি করেছে। প্যাগোডার উত্তর পাশে বর্ণিল ফুলের মেলা। উপাসনালয় হওয়ায় প্রবেশের পর দর্শনার্থীরা জুতা খুলে আঙিনায় ঢুকছেন। দর্শনার্থীদের মাঝে বৌদ্ধ ছাড়াও রয়েছে মুসলিম, হিন্দুসহ বিভিন্ন ধর্মের মানুষ।
নব শালবন বিহারে ঘুরতে আসা হেলাল উদ্দিন বলেন, শালবন বৌদ্ধ বিহার, ময়নামতি জাদুঘরের পাশে বিশ্বশান্তি প্যাগোডার স্থাপন নতুন সংযোজন। দৃষ্টিনন্দন স্থাপনা দর্শনার্থীদের মুগ্ধ করছে।
নব শালবন বিহারের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ শ্রীমৎ শীলভদ্র মহাথের বলেন, লকডাউনের আগের দিন পর্যন্ত বিশ্ব শান্তি প্যাগোডা দেখতে দর্শনার্থীদের প্রচুর ভিড় ছিলো। লকডাউনের সাথে সাথে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দিলে দর্শনার্থীদের এই সংখ্যা আরো বাড়বে। তিনি আরো বলেন, এখানকার অনাথ আশ্রমে ৭০ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। ৪০ জন শিক্ষার্থীর খরচ চলে সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায়। আরো সহযোগিতায় পেলে অনাথ আশ্রম ভালো ভাবে চালাতে পারবেন।