দায়ক বেশে এক প্রতারক একটি রাখাইন বৌদ্ধ বিহারের একজন ভিক্ষু সহ ৪ জনকে খাবার (পিন্ডদান) খাইয়ে অজ্ঞান করে হাতিয়ে নিয়েছে বিহারের ৯ লাখ টাকা। অজ্ঞান অবস্থায় বিহারে পড়ে থাকা রাখাইন ভিক্ষুসহ ওই ৪ জনকে এক রাত একদিন পর শুক্রবার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কক্সবাজারের খুরুশকুল রাখাইন পাড়া বিহারে গত বৃহস্পতিবার এ ঘটনাটি ঘটে।
বৌদ্ধ বিহারের অধ্যক্ষ ভদন্ত উশাসন বংশ মহাথের (৬৮) কক্সবাজার সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তার জ্ঞান ফিরেছে শনিবার। তিনি শনিবার রাতে জানিয়েছেন, বিক্রম চাকমা নামের এক ব্যক্তি পিন্ড নিয়ে আসেন বিহারে। লোকটার পীড়াপিড়িতে আমি অত্যন্ত সরল বিশ্বাসে পিন্ড খেয়েছি। আমার অপর দুই শ্রমণ (ছাত্র) ও এক শিষ্যকেও খেতে দিই। এরপর সবাই একসাথে জ্ঞান হারাই।
তিনি জানান, প্রতারক নিজেকে বিক্রম চাকমা নামে পরিচয় দিয়ে ঘটনার আগে প্রায়শ তাকে মোবাইলে কথা বলতেন। এমনকি বিহারেও কয়েকবার আসা-যাওয়া করেছেন। তিনি (বিক্রম) রাঙ্গামাটির বাসিন্দা এবং কক্সবাজার শহরের অগ্যমেধা রাখাইন বিহারের পার্শ্বে ভাড়া থাকার কথা ভিক্ষুকে জানান।
ভিক্ষু বলেন, তার কাছে বিহারের তিনটি আলমিরায় নগদ ৯ লাখ টাকা ছিল। হয়তো বা টাকার তথ্য জেনে লোকটি অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবেই বাটপারির এমন ঘটনাটি ঘটিয়েছেন বলে ভিক্ষু মনে করেন।
কক্সবাজার সদর হাসপাতালে রাখাইন বৌদ্ধ বিহার পরিচালনা কমিটির সভাপতি কাহ্লাচিং রাখাইন এ বিষয়ে কক্সবাজার সদর মডেল থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। তিনি বলেন, হয়তো চেতনানাশক কিছু মিশানো খাবার খাইয়ে প্রতারক বিহারের টাকা-পয়সা ও মূল্যবান কাগজপত্র নিয়ে গেছে। ঘটনার পরের দিন সকাল ৬টার সময় পাড়ার লোকজন ভিক্ষুর জন্য সকাল বেলার খাবার নিয়েই দেখতে পান তারা ৪ জনই অজ্ঞান অবস্থায় পড়ে রয়েছেন। শনিবার জ্ঞান ফিরে আসার পর বিহারের দুই শ্রমণ চুইমং (১৭) ও পাইথা অং (১৬) কে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। ভিক্ষু ও অপর শিষ্য অংছা ছিং (২০) এখনো হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
এ বিষয়ে কক্সবাজার সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) বিপুল চন্দ্র দে শনিবার রাতে জানিয়েছেন, বিহার পরিচালনা কমিটির সভাপতির লিখিত অভিযোগটি পেয়ে পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে।