পটুয়াখালীর কুয়াকাটায় মিশ্রিপাড়া রাখাইন সীমা বৌদ্ধ কলাপাড়ার মিশ্রিপাড়ায় ঐতিহ্যবাহী ১১০ বছরের প্রাচীন রাখাইন সীমা বৌদ্ধ বিহার বাউন্ডারির মধ্যের অবৈধ দোকানপাট অপসারণের দাবিতে সেখানকার রাখাইনরা মানববন্ধন করেছেন।
শনিবার (৬ মার্চ )সকাল ১০টায় বৌদ্ধবিহার সংলগ্ন সড়কে এ মানববন্ধন করা হয়েছে।
বিহারাধ্যক্ষ ভদন্ত উত্তম ভিক্ষু জানান, বৌদ্ধ বিহার বাউন্ডারির মধ্যে দীর্ঘদিন আগে আটটি দোকান ঘর স্থাপন করা হয়েছে। এরা বিহার কর্তৃপক্ষকে মাটি ভাড়া দিত। এখন বিহারের বাউন্ডারি সীমানা প্রাচীর করার কাজ শুরু করলে ওই দোকানপাট সরানোর জন্য বলা হয়। কিন্তু কোন দোকানপাট সরিয়ে নেয়নি। বিহারাধ্যক্ষ আরও জানান, এসব অবৈধ দোকানপাটের কারনে তাঁদের ধর্মীয় ও সামাজিক অবস্থার বিঘœ ঘটছে। উপজেলা ভূমি প্রশাসনের সহায়তা নিয়েও অবৈধ এ দখলদাররা দোকানপাট অপসারন করতে পারেননি। প্রায় ঘন্টাব্যাপী মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন এমং তালুকদার, উচু মাদবর, অংজো ওয়েন। রাখাইন উত্তম ভিক্ষু বলেন, সর্বশেষ জরিপে বিএস দাগ নম্বর ৮৪২২ নম্বরের এক একর ৮৬ শতাংশ জমি রেকর্ডে দেবালয় এবং মগ সাধারণের ব্যবহৃত ইন্দিরা লেখা রয়েছে। প্রায় ৪০ বছর আগে থেকে ডঙ্কুপাড়া ও মিশ্রিপাড়া গ্রামের ইউনুচ মাস্টার, সেলিম মাওলানা, মোঃ জাহাঙ্গীর, মোতালেব হাওলাদার, জাহাঙ্গীর গাজী, শাহআলম, মোঃ সালাউদ্দিন, নির্মল ওরফে নিরু ওই জায়গায় মাটি ভাড়া বাবদ প্রত্যেকে ৫০ টাকা করে দেয়ার মৌখিক চুক্তিতে অস্থায়ী দোকান তুলে ব্যবসা করে আসছিল। সর্বশেষ মাটি ভাড়া ছিল দোকান প্রতি তিন শ’ টাকা। বর্তমানে ২০২০ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মাটিভাড়া বাবদ বকেয়া রয়েছে ২১ হাজার এক শ’ টাকা। তাও দেয়নি। বর্তমানে বৌদ্ধ বিহার এলাকার বাউন্ডারি করতে দোকানপাট পেছনে সরানোর জন্য বলা হলে কেউ সরায়নি। এ বিষয়টি নিষ্পত্তির জন্য রাখাইনরা ২০১৩ সাল থেকে জেলা প্রশাসন উপজেলা প্রশাসনের কাছে দেন-দরবার করছেন। কিন্তু অবৈধ দোকানপাট অপসারন হয়নি। তাই বাধ্য হয়ে রাখাইনরা মানববন্ধন করেন। বক্তব্য রাখেন উত্তম ভিক্ষু ছাড়াও রাখাইন নেতৃবৃন্দ। রাখাইনরা জানান, ১৯১১ সালে রাখাইন মিশ্রি মাদবর এই বৌদ্ধবিহার প্রতিষ্ঠা করেন। বর্তমানে মিশ্রিপাড়ায় ২২টি রাখাইন পরিবারের ১০২ জন লোক বসবাস করছেন। কুয়াকাটায় বেড়াতে আসা পর্যটকরা মিশ্রিপাড়ার সীমা বৌদ্ধবিহার ও মন্দিরে রক্ষিত বিশালকায় বৌদ্ধ মূর্তিটি দর্শন করেন। এই এলাকার ঐতিহ্য বহন করে আসছে এই বৌদ্ধবিহার ও বৌদ্ধ মূর্তি। প্রায় ৩২ ফুট উচু এ বৌদ্ধ মূর্তিটি রক্ষায় সরকারের নিরাপত্তা রয়েছে। ২০১৪ সালে জার্মান সরকারের আর্থিক সহায়তায় এ বৌদ্ধবিহার এক দফা সংস্কার করা হয়। এছাড়া সরকারিভাবে ফি বছর রক্ষণাবেক্ষণের কাজ করা হয়। উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবু হাসনাত মোহাম্মদ শহিদুল হক জানান, বিষয়টি নিষ্পত্তি করতে স্থানীয় চেয়ারম্যান, দোকানি এবং রাখাইনদের সমন্বয়ে দুই দফা বৈঠক করা হয়েছে। দ্রুত সমাধানের চেষ্টা চলছে।