আজ সোমবার বিকাল সোয়া ৩টায় মামলার দায়িত্বপ্রাপ্ত তদন্ত কর্মকর্তা র্যাপিড অ্যাকশান ব্যাটালিয়ন (র্যাব) এর উপপরিদর্শক অর্জুন চৌধুরীর উপস্থিতিতে লাকিংমের চাচাতো ভাই ক্যচিং চাকমা সই করে কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতাল মর্গের হিমঘর থেকে লাকিংমে চাকমার মরদেহ গ্রহণ করেন।
লাকিংমের বাবা লালা অং চাকমা বলেন- ‘অভাবের সংসার, এত টাকা দেওয়ার সামর্থ্য নেই আমার। তাই মেয়ের লাশ নিতে পারছিলাম না। অবশেষে র্যাব এই টাকা দিতে রাজি হয়েছে।
লালা অং চাকমা বলেন, তাদের মেয়ে লাকিংমেকে অপহরণের পর জোর করে বিয়ে এবং পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। তারা প্রিয় সন্তানের (লাকিংমে) মরদেহ গ্রামে নিয়ে শেষকৃত্য করতে চান।
র্যাব-১৫ এর অধিনায়ক উইং কমান্ডার আজিম আহম্মেদ বলেন, ভিকটিমের বাবা খুবই দরিদ্র। মর্গের বিল ২৫ হাজার টাকার জন্য মেয়ের লাশ নিতে পারছিলেন না লালা অং চাকমা। খবর পেয়ে আমরা মর্গের বিল পরিশোধ করেছি। লাকিংমে চাকমার লাশ নিতে আর কোনো বাধা রইলো না।
কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার সমুদ্র উপকূলীয় ইউনিয়ন বাহারছড়ার দক্ষিণ শিলখালী এলাকার চাকমা পল্লিতে বসতি লালা অং চাকমার। জীবিকা নির্বাহ করেন সমুদ্রে মাছ ধরে ও পাহাড়ে জুম চাষ করে। তার পাঁচ সন্তানের মধ্যে দ্বিতীয় মেয়ে লাকিংমে চাকমা।
বাবা লালা অং চাকমার দাবি, ২০২০ সালের ৫ জানুয়ারি তার মেয়ে লাকিংমেকে স্থানীয় যুবক আতাউল্লাহর নেতৃত্বে কয়েকজন অপহরণ করে। এরপর জোরপূর্বক বিয়ে করে হত্যা করা হয়। এখন মেয়ে হত্যার বিচার চান তিনি।
হাসপাতালের লাশঘরের সামনে লাকিংমে চাকমার মা কেচিং চাকমা কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘মেয়ের লাশটা পেয়েছি। আমরা নিতান্তই অসহায় দরিদ্র মানুষ। এখন আমাদের চাওয়া-একটাই যাতে আমার মেয়ের অপহরণকারি ও হত্যাকারীদের বিচার হয়।’
আজ বিকেল সাড়ে ৫টায় কক্সবাজার জেলার রামুর উপজেলার জাদিমুড়া কেন্দ্রীয় বৌদ্ধ মহাশ্মশানে লাকিংমে চাকমাকে সমাহিত করা হয়। এসময় র্যাবের একটি দল সেখানে উপস্থিত ছিল।
কক্সবাজারের একটি আদালত নিহত কিশোরীর ধর্মান্তরকরণ এবং অপহরণের ঘটনা তদন্ত করতে দায়িত্ব দেন র্যাবকে। আদালতের নির্দেশে র্যাব-১৫ রোববার আদালতে প্রাথমিক তদন্ত প্রতিবেদন দেয়। র্যাবের প্রাথমিক তদন্ত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে আদালত রোববার লাকিংমের মরদেহ শেষ পর্যন্ত বাবার জিম্মায় দেওয়ার নির্দেশ দেন।