আজ পবিত্র প্রবারণা পূর্ণিমা, ০১ অক্টোবর ২০২০ ইং, ১৬ আশ্বিন ১৪২৭ বাংলা, ২৫৬৪ বুদ্ধাব্দ, বৃহস্পতিবার। পূর্ণিমা শুরু বুধবার রাত ১২ টা ২১ মি. থেকে বৃহস্পতিবার রাত ০২ টা ০১ মি. পর্যন্ত।
প্রবারণা অর্থ কী ? উত্তরে বলা যায়: প্রবারণা অর্থে বরণ ও বারণ দৃষ্ট হয়। নির্দিষ্ট সময় তিন মাসের মধ্যে জ্ঞানের পরিধিকে বরণ করা, লৌকিক ও লোকুত্তর জ্ঞানকে বৃদ্ধি করা আবার যা অকুশল, ক্লেশকে ধ্বংস করা, অকুশল – অবিদ্যাকে বারণ করা। নিজের সমস্ত প্রকার দোষ হতে মুক্ত হওয়া, শুদ্ধাচার জীবনে, নির্মল – নিরাসক্ত জীবনে প্রবেশ করে জ্ঞান আলোয় উদ্ভাসিত হওয়া। ওই বর্ষাবাস তিন মাসের নির্দিষ্ট স্থানে বন্দি হতে মুক্ত হয়ে অধীত জ্ঞান মানুষের কল্যানে বিতরণের জন্য ছুটি লাভ করা অর্থে প্রবারণা। এই দিনে ভগবান বুদ্ধ কর্তৃক মাতৃদেবীকে ধর্মদেশনার পর তাবতিংস স্বর্গ হতে সাংকাশ্য নগরে অবতরণ করেন এবং বহুজন হিতায়, বহুজন সুখায়, ধর্ম প্রচারের জন্য ভিক্ষু সংঘকে নির্দেশ প্রদান করেন। ষড়ঙ্গ সূত্রে বলা হয়েছে: ভিক্ষুগণ ! ছয় অঙ্গ যুক্ত মহাফল দায়ক হয়। তার মধ্যে তিন অঙ্গ দায়কের, যেমন: দায়ক ১. দান করার পূর্বে, ২. দান করার সময় ও ৩. দান করার পরে চিত্ত প্রসন্ন রাখা। অন্য তিন অঙ্গ গ্রাহকের যেমন: গ্রাহক ১. তৃষ্ণাহীন বা তৃষ্ণাবিনাশে নিরত, ২. দ্বেষহীন বা দ্বেষবিনাশে নিরত ও ৩. মোহহীন বা মোহবিনাশে নিরত। যেমন: ভিক্ষুগণ ! মহাসমুদ্রের জলরাশি এত সের বা মণ বলে, পরিমাণ করা যায় না, তেমন ছয় অঙ্গযুক্ত দানের পুণ্যপ্রবাহ কুশলাভিসন্দ, যা সুখহরণকারী সৌভাগ্যোৎপাদক সুখফলপ্রদ স্বর্গদাতা কমনীয় প্রিয় মনোজ্ঞ ও হিত সুখপ্রবর্ধক, তা এত বলে পরিমাণ করা যায় না। উহা মহাসমুদ্রের জলের মত অসংখ্য ও অপ্রমেয় পুণ্যস্কন্ধ। অতএব ভগবান বলেন: ১. দান করার পূর্বে, করার সময় ও করার পর চিত্তকে প্রসন্ন রাখাই দানযজ্ঞের সম্পদ। ২. রাগ – দ্বেষ – মোহহীন অনাস্রব এবং সংযত ব্রহ্মচারীগণই দানগজ্ঞের উত্তম ক্ষেত্র। ৩. মুখ হস্তপদাদি ধৌত করে শুদ্ধ করে শুদ্ধ দেহমনে স্বহস্তে দান করলে সে দানময় যজ্ঞ নিজের ও পরের হিতাবহ মহাফলপ্রসূ হয়ে থাকে। ৪. শ্রদ্ধাবান মুক্তচিত্ত মেধাবী পণ্ডিত ব্যক্তি এরূপে দানযজ্ঞ সম্পাদন করে দুঃখহীন সুখলোকে উৎপন্ন হয়। পরিচিতিঃ ধর্মদূত ড. সুমনপ্রিয় ভিক্ষু, পূর্ব সাতবাড়ীয়া বেপারীপাড়া রত্নাঙ্কুর বিহার, চন্দনাইশ, চট্টগ্রাম।