বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষক, একুশে পদক প্রাপ্ত, ড. প্রণব কুমার বড়ুয়াকে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য করা হয়েছে।
আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দলের গঠনতন্ত্রের ২৬ (ক) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী ড. প্রণব কুমার বড়ুয়াকে দলের উপদেষ্টা হিসেবে মনোনয়ন দেন।
প্রণব কুমার বড়ুয়া দীর্ঘ ৩৫ বছর শিক্ষকতা করেছেন শিক্ষা বিস্তারে বিশেষ করে নারী শিক্ষার প্রসারে কাজ করেছেন তিনি। বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে তোলায়ও রেখেছেন অনন্য ভূমিকা।
শিক্ষার প্রসারের জন্য, বিশেষ করে নারী শিক্ষার প্রসারে পদুয়ায় এবং পটিয়ায় দুইটি স্কুল ও দুইটি কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন তিনি। রাঙ্গুনিয়ার পদুয়া ডিগ্রি কলেজ, ঢাকার ধর্মরাজি উচ্চ বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠায়ও তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন। এছাড়া রাউজানে অগ্রসর বালিকা মহাবিদ্যালয়, পটিয়ার করল উচ্চ বিদ্যালয়ের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা তিনি।
১৯৩৪ খ্রিস্টাব্দের ২৩ আগস্ট রাউজান উপজেলার আবুরখীল গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন ড. প্রণব কুমার বড়ুয়া। তিনি বাংলা সাহিত্যে এমএ পাস করেছেন। একই সঙ্গে এমএ (পালি) এবং বিএড প্রথম শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হন। পিএইচডি করেছেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। এছাড়া তিনি ধর্মীয় শিক্ষা পালি সূত্র, আদ্ধ্য, বিনয় আদ্ধ্য, অভিধর্ম আদ্ধ্যর ওপর ডিগ্রি অর্জন করেছেন।
তিনি দীর্ঘ ৩৫ বছর শিক্ষকতা করেছেন। এর মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পালি বিভাগের ভিজিটিং প্রফেসর ছিলেন। বিভিন্ন সময়ে সহকারী প্রধান শিক্ষক, উপাধ্যক্ষ, অধ্যক্ষ পদেও কর্মরত ছিলেন। তিনি কানুনগোপাড়া কলেজ, রাঙ্গুনিয়া কলেজ, অগ্রসর বালিকা মহাবিদ্যালয় এবং কুণ্ডেশ্বরী কলেজের অধ্যক্ষ ছিলেন। দীর্ঘ ৪৫ বছর বাংলাদেশ বৌদ্ধ কৃষ্টি প্রচার সংঘের মহাসচিব ছিলেন। বিশ্ব বৌদ্ধ শান্তি সম্মেলন সংস্থা, এশীয় ধর্ম শান্তি সম্মেলন সংস্থা এবং এশীয় বৌদ্ধ ধর্ম শান্তি সম্মেলন সংস্থার মাধ্যমে দেশ-বিদেশে আন্তঃধর্মীয় শান্তি সৌহার্দ্য ও সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠায় ভূমিকা রেখেছেন।
তিনি অনেকগুলো গ্রন্থ লিখেছেন। এর মধ্যে ‘মুক্তিযুদ্ধে বাঙালি বৌদ্ধদের অবদান’ এবং ‘বাংলাদেশের বৌদ্ধ ধর্ম ও সংস্কৃতি’ গ্রন্থ দুটো প্রকাশিত হয়েছে বাংলা একাডেমি থেকে। তাঁর উল্লেখযোগ্য অন্যান্য গ্রন্থের মধ্যে আছে, অতীশ দীপংকর, বৌদ্ধ আচরণবিধি, মহাথেরোকে যেভাবে দেখেছি, পৃথিবীর পথে পথে, গৌতম বুদ্ধের জীবন ও বাণী, শতবর্ষের বৌদ্ধ সাহিত্যিকদের অবদান ও সমাজজীবন। এছাড়া তাঁর লেখা অনেক প্রবন্ধ দেশ-বিদেশের সাময়িকীতে স্থান পেয়েছে।