1. pragrasree.sraman@gmail.com : ভিকখু প্রজ্ঞাশ্রী : ভিকখু প্রজ্ঞাশ্রী
  2. avijitcse12@gmail.com : নিজস্ব প্রতিবেদক :
  3. wp-configuser@config.com : James Rollner : James Rollner
মঙ্গলবার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭:০১ পূর্বাহ্ন

পছন্দের শাড়িটি পরে বেরোতেই ছিন্নভিন্ন স্কুলশিক্ষিকা অ্যানি বড়ুয়া

প্রতিবেদক
  • সময় রবিবার, ১৭ নভেম্বর, ২০১৯
  • ১৬৩৯ পঠিত

নুসরাত জাহান:

প্রতিটি মানুষের জীবনে বেঁচে থাকাটা যেন একটা স্বপ্ন। এখন একটা মুহূর্তেরও বিশ্বাস নেই কে কিভাবে মৃত্যূমুখে পতিত হচ্ছে। কাল রাতে যারা ভবিষ্যতের স্বপ্ন বুকে নিয়ে ঘুমিয়েছিল, সকাল হতে না হতেই তারা আজ পরপারে চলে গেল। কে জানতো! গতকাল রাতে বসে যারা একসাথে বাসায় ফিরে একটেবিলে রাতের খাবার খেয়েছে, ঘুমোতে যাওয়ার আগে শুভরাত্রি বলেছে— সেই মা-বাবা-ভাই-বোনগুলো সকালে কেউ কারও মুখ আর দেখবে না, তারা কি জানতেন? গ্যাসের লাইন থেকে এত বড় দুর্ঘটনা ঘটে যাবে কার সামান্য ধারণায়ও ছিল?
পটিয়ার মেহেরআটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা অ্যানি বড়ুয়াও (৩৫) জানতেন না সকালে তার জীবনে কী ঘটবে? তার যাওয়ার কথা ছিলো পিইসি পরীক্ষার ডিউটিতে। কিন্তু সেখানে যাওয়া হলো না। মৃত্যু এসে তাকে নিয়ে গেল মৃত্যুযাত্রী করে। হয়তো তিনি ভেবেছিলেন পরীক্ষার ডিউটি সেরে বাসায় এসে আবার প্রতিদিনের মতো পরিবারের সবার সাথে সময় কাটাবে। একসাথে খাওয়া দাওয়া করে বিকেল ছেলেদের পড়তে বসাবে। কিন্তু তার সবকিছুই চাপা পড়ে গেলো পাথরঘাটা বড়ুয়া ভবনের দেয়ালের চাপায়।
জানা যায়, অ্যানি বড়ুয়া পাথরঘাটা ব্রিকফিল্ড রোডের পাশে অবস্থিত বড়ুয়া ভবনের তৃতীয় তলার নিজস্ব ফ্ল্যাটে স্বামী সন্তান নিয়ে থাকতেন। সকাল ৯টায় তিনি প্রাথমিক সমাপনী পিইসি পরীক্ষার ডিউটিতে যাওয়ার উদ্দেশ্যে বাসা থেকে বের হয়ে রিকশায় উঠেন। ঠিক সেই মুহূর্তে গ্যাসলাইনের বিস্ফোরণ ঘটে। দেয়াল ধসে তার গায়ে পড়ে। সাথে রিকশাটিও ছিন্নভিন্ন হয়ে যায়। রিকশাওয়ালাও মারা যান সাথে সাথেই।
অ্যানি বড়ুয়ার দুই ছেলে। বড় ছেলের নাম অভিষেক বড়ুয়া এবং ছোট ছেলের নাম অভিজিৎ বড়ুয়া। বড় ছেলে এবার জেএসসি পরীক্ষা দিয়েছে এবং ছোট ছেলে ষষ্ঠ শ্রেণীতে পড়ছে। স্বামী পলাশ বড়ুয়া পটিয়ার শিকলবাহায় বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) কর্মকর্তা। তার শ্বশুরবাড়ি পটিয়ার চরকালয় এবং বাবার বাড়ি কক্সবাজার রামুতে।
অ্যানি বড়ুয়ার স্বামী পলাশ বড়ুয়া বললেন, ‘স্কুলে যাওয়ার সময় অ্যানি পরেছিল তার পছন্দের শাড়িটি। বাসা থেকে বের হওয়ার সময় তার শাড়ির কুচিও ঠিক করে দিয়েছিলাম। কিন্তু বাসা থেকে বের হয়েই সব শেষ হয়ে গেল।’
অ্যানি বড়ুয়ার স্কুল জীবনের সহপাঠী সঙ্গীতা দাশ বেদনাভরা কন্ঠে চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘স্কুলজীবন থেকে অ্যানির সাথে আমার পরিচয়। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গণিত বিষয়ে অনার্স মাস্টার্স করেছে। এখন আমরা দুজন ভিন্ন স্কুলে চাকরি করছি। মাঝে মাঝে দেখা হতো। কিন্তু আজ সকালে ঘুম থেকে জেগে এমন ঘটনার কথা শুনতে হবে চিন্তাই করিনি।’
সঙ্গীতা দাশ বলেন, ‘আজ থেকে পিইসি পরীক্ষা শুরু। প্রথম দিনেই পরীক্ষার সেন্টারে যাওয়ার জন্য বের হয় অ্যানি। তারপর এমন নির্মম দুর্ঘটনা ঘটে গেল। বুক ছিঁড়ে যাচ্ছে।’
অশ্রুভরা চোখে ধরে আসে সঙ্গীতা দাশের কন্ঠ— ‘এত অসময়ে কেন চলে গেলে? তোমার রাজপুত্ররা কাকে মা ডাকবে? ভালো থেকো ওপারে। তুমি বড় বেশি ভাল ছিলে!’
সুত্রঃ চট্রগ্রাম প্রতিদিন।।

Facebook Comments Box

শেয়ার দিন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো
© All rights reserved © 2019 bibartanonline.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com
themesbazarbibart251
error: Content is protected !!