কলিন চাকমা,(খাগড়াছড়ি) মহালছড়ি প্রতিনিধি :
খাগড়াছড়ি জেলার মহালছড়ি উপজেলার মুবাছড়ি ইউনিয়নের সিঙ্গিনালা মহামুনি বৌদ্ধ বিহারে মহান দানোত্তম কঠিন চীবর দানানুষ্ঠান উৎসাহ উদ্দীপনা ও ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্যে দিয়ে সম্পন্ন হয়েছে।
এই চীবর দানের মধ্য দিয়ে শেষ গেল বৌদ্ধদের এক মাস ব্যাপী কঠিন চীবর দান উৎসব। সিঙ্গিনালা মহামুনি বৌদ্ধ বিহারের দায়ক-দায়িকাদের আয়োজনে এই কঠিন চীবর দানানুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। ১১ নভেম্বর সকাল ৯ ঘটিকায় ভিক্ষুদের কাছ থেকে ত্রিশরণ সহ পঞ্চশীল গ্রহনের মাধ্যমে সারাদিন ব্যাপি বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মধ্যে পিন্ড দান, বুদ্ধ মূর্তি দান, সংঘদান, অষ্টপরিষ্কার দান, হাজার প্রদীপ দান, কঠিন চীবর দান, কল্পতুরু দান, আকাশ প্রদীপ দান সহ বিবিধ দান করা হয়। এর আগে উপস্থিত ভিক্ষু সংঘকে ফুলের তোড়া দিয়ে বরন করে নেয় আয়োজক কমিটি। এই সময় বিভিন্ন বিহারের অধ্যক্ষসহ ভিক্ষু সংঘ উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন খাগড়াছড়ি জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কংজরী চৌধুরী। আরো ছিলেন অত্র ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ সভাপতি মংরে মারমা, সাধারণ সম্পাদক অংসাথোয়াই মারমা, উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান সুইনুচিং চৌধুরী, মুবাছড়ি মৌজার হ্যাডমেন খ্যাচিং চৌধুরী, সিঙ্গিনালা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মমং মারমা, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হ্লাথুই কার্বারী সহ শত শত দায়ক/দায়িকা উপস্থিত ছিলেন। শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন অত্র বিহারের সভাপতি মংছুপ্রু মারমা। অনুষ্ঠানের শেষের দিকে দায়িক-দায়িকাদের উদ্দেশ্যে উপস্থিত ভিক্ষুসংঘ স্বধর্ম দেশনা প্রদান করেন। স্বধর্ম দেশনায় ভিক্ষুরা সবাইকে বুদ্ধের পথ অনুসরণ করে ধর্মীয় অনুশাসন মেনে চলার আহবান জানান। এছাড়াও মহান কঠিন চীবর দানের ফল সম্পর্কে দেশনা প্রদান করেন ভিক্ষুরা। এছাড়াও সন্ধ্যার সময় প্রায় দুইশত ফানুস বার্তি চূলামনির উদ্দেশ্য আকাশে উড়ানো হয়। এই দানানুষ্ঠানের মাধ্যমে এই বছরের মত শেষ হয়ে গেল বৌদ্ধদের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব কঠিন চীবর দানানুষ্ঠান। বুদ্ধের সময়ে বিশাখা কতৃক প্রবর্তিত এই কঠিন চীবর দানে ভিক্ষুদের জন্য এক দিনের মধ্যে চীবর তৈরি করে ভিক্ষুসংঘকে দান করা হয়। বৌদ্ধ ভিক্ষুদের তিন মাস বর্ষাবাসের পর প্রতিবছর এই সময় একমাস ব্যাপি বৌদ্ধরা পালন করে এই কঠিন চীবর দানানুষ্টান।