বাংলাদেশ সংঘরাজ ভিক্ষু মহাসভার উপসংঘরাজ, রামু কেন্দ্রীয় সীমা বিহারের পূজনীয় অধ্যক্ষ, বাংলাদেশ সরকার কতৃর্ক একুশে পদকপ্রাপ্ত, পণ্ডিতপ্রবর ভদন্ত সত্যপ্রিয় মহাথেরো পরলোকগমন করেছেন। (অনিচ্ছা বত সংখারা..)
চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুক্রবার (৪ আক্টোবর) মধ্যরাতে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
ভদন্ত সত্যপ্রিয় মহাথের’র প্রকৃত নাম বিধু ভূষণ বড়ুয়া। প্রবীণ এ বৌদ্ধ ধর্মীয় গুরু ২০১৫ সালে সমাজসেবায় একুশে পদক পান।
সংসার ত্যাগী সত্যপ্রিয় মহাথের ১৯৩০ সালের ১০ জুন কক্সবাজারের রামু উপজেলার ফতেখাঁরকুল ইউনিয়নের পশ্চিম মেরংলোয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা প্রয়াত হরকুমার বড়ুয়া ও মাতা প্রেমময়ী বড়ুয়া।
রামু সীমা বিহারের অধ্যক্ষ শ্রীমৎ সত্যপ্রিয় মহাথের ১৯৫০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে বিনয়াচার্য আর্যবংশ মহাথেরর কাছে প্রব্রজ্যা গ্রহণ করেন। এর ৬ মাস পরই পবিত্র মাঘী পূর্ণিমার দিনে তিনি উপ-সম্পদা গ্রহণ করেন।
বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা সত্যপ্রিয় মহাথের ১৯৫৫ সালে মায়ানমারের ধর্মদূত পালি কলেজে অগ্রমহাপন্ডিত উ. বিশুদ্ধায়ু মহাথের ও প্রজ্ঞালোক মহাথেরর কাছে পালি ভাষা ও বিনয় শিক্ষা লাভ করেন। এ মহান পূণ্যপুরুষ পৃথিবীর বহু ভাষায় পারদর্শী। বুদ্ধ ধর্মের পবিত্র ধর্মীয় গ্রন্থ পালি ভাষার মূল ত্রিপিটকের বিভিন্ন অধ্যায় থেকে বাংলা ভাষায় অনুবাদ করে বাংলা ভাষাকে সমৃদ্ধ করেন সত্যপ্রিয় মহাথের।
১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধেও অসাধারণ সাহসী ভূমিকা রাখেন শ্রীমৎ সত্যপ্রিয় মহাথের। যুদ্ধ-চলাকালীন তিনি এলাকার সহস্রাধিক অসহায় ও নির্যাতিন মানুষকে ঐতিহ্যপূর্ণ পুরাতন কাঠের সীমা বিহারে আশ্রয় দেন। এ নিয়ে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে বাকবিকণ্ডা হয় এ বৌদ্ধ ভিক্ষুর।
দেশের সবচেয়ে কলঙ্কময় অধ্যায় ২০১২ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর গভীর রাতে কক্সবাজারে রামু, উখিয়া, টেকনাফ ও পটিয়ার লাখেরায় ঘটে যাওয়া সাম্প্রদায়িক হামলার পর গৌতম বুদ্ধের সাম্য-মৈত্রী ও অহিংসার বাণীকে সর্বময় ছড়িয়ে দিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে সত্যপ্রিয় মহাথেরের। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি পুনঃস্থাপনসহ বর্হিবিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করতে অন্যন্য ভূমিকা পালন করছেন তিনি।