আগামীকাল ২৪ অক্টোবর ২০১৮ খ্রি. মহিমান্বিত পবিত্র আশ্বিনী পূর্ণিমা বা প্রবারণা পূর্ণিমা। ২৫৬২ বুদ্ধাব্দের পূত পবিত্র প্রবারণা পূর্ণিমা।
বিশ্বের অপরাপর থেরবাদী বৌদ্ধের মতো বাংলাদেশের সমতল ও পার্বত্য চট্টগ্রামের বৌদ্ধ জনগোষ্ঠী মহাসাড়ম্বরে মহামহিমান্বিত পূতপবিত্র এ আশ্বিনী পূর্ণিমা বা প্রবারণা পূর্ণিমাকে বুদ্ধের ধর্ম-দর্শনসম্মত নানাবিধ বহু বর্ণিল অনুষ্ঠান সাজিয়ে প্রতিটি বৌদ্ধবিহার ও প্যাগোডায় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে উদযাপন করার সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে।
প্রবারণা পূর্ণিমার পরদিন ২৫ অক্টোবর, বৃহস্পতিবার থেকে দেশের প্রতিটি বিহারে মাসব্যাপী দানোত্তম শুভ কঠিন চীবর দানোৎসব শুরু হবে।
আগামীকাল এদিন উপলক্ষে সকালে বৌদ্ধ নরনারী শুচি শুভ্র হবে, পরিস্কার পোশাকে বৌদ্ধ বিহার সমবেত হয়ে বুদ্ধকে পূজা, ভিক্ষুদের আহার্য দান, অষ্টশীল ও পঞ্চশীল গ্রহণ, দুপুরে বিহারে বিহারে ভাবনা অনুশীলন, বিকেলে ধর্ম সভার আয়োজন করা হয়েছে।
এবার প্রথম সন্ধ্যায় ফানুস উড়ানো উৎসব আয়োজন হচ্ছে দেশের কিছু বৌদ্ধ বিহার ও কিছু বৌদ্ধদের ঘরে ঘরে।
প্রবারণার পালি শব্দ ‘প্রবারণা’। থেরবাদী বৌদ্ধ বিশ্বে আশ্বিনী পূর্ণিমাকে ‘প্রবারণা পূর্ণিমা’ বলা হয়। এ প্রবারণা পূর্ণিমা থেরবাদী বৌদ্ধদের কাছে একটি উল্লেখযোগ্য পূর্ণিমা। বৌদ্ধ ইতিহাসে এ পূর্ণিমার তাৎপর্য ও মাহাত্ম্য অপরিসীম।
প্রবারণা শব্দের অর্থ হলো আত্মনিবেদন। বৌদ্ধ ভিক্ষুরা আষাঢ়ী পূর্ণিমা থেকে আশ্বিণী পূর্ণিমা পর্যন্ত তিন মাস ব্যাপী সময়ে বর্ষাব্রত পালন করেন। সে সময়ে তাদের মধ্যে ভুলভ্রান্তি হতে পারে। তাই বর্ষাব্রত পালন শেষে তারা আশ্বিণী পূর্ণিমায় প্রবারণা করে। সেদিনে তারা যদি গোচরে এবং অগোচরে কোন ভুল করে থাকেন তার জন্য জেষ্ঠ ভিক্ষুর কাছে তা জানান এবং তা সংশোধনের আহবান জানান। তেমনিভাবে জ্যেষ্ঠ ভিক্ষুরাও নবীনদের কাছে তাদের ভুলের কথা জানাবেন। এজন্য এটি হলো ভিক্ষুদের আত্নসমর্পন ও আত্ননিবেদনের অনুষ্ঠান।
প্রবারণার পর মহাকারুণিক বুদ্ধের শিক্ষাকে মানব কল্যাণে প্রচারের জন্য ভিক্ষু সংঘ, বহুজনের হিতের ও মঙ্গলের জন্য দিকে দিকে ধর্মপ্রচারের বের হবেন।
এছাড়া প্রবারণা পূর্ণিমা বৌদ্ধদের কাছে বড় ছাদাং নামেও পরিচিত। এর অর্থ বড় উপোসথ দিবস।