1. pragrasree.sraman@gmail.com : ভিকখু প্রজ্ঞাশ্রী : ভিকখু প্রজ্ঞাশ্রী
  2. avijitcse12@gmail.com : নিজস্ব প্রতিবেদক :
সোমবার, ০৫ জুন ২০২৩, ০৪:০৭ অপরাহ্ন

কক্সবাজারে প্যাগোডা ধসে ৬০ ফুট নিচে, আরেকটিতে ফাটল

প্রতিবেদক
  • সময় বুধবার, ১ আগস্ট, ২০১৮
  • ৯৫২ পঠিত

আশপাশের অর্ধশতাধিক পরিবার ঝুঁকিতে
কক্সবাজারে প্যাগোডা ধসে ৬০ ফুট নিচে, আরেকটিতে ফাটল

পাহাড় কাটা রোধ ও রক্ষণাবেক্ষণ না করার কারণে ধংস হয়ে যাচ্ছে কক্সবাজারের ঐতিহ্যবাহী বৌদ্ধ প্যাগোডা। এতোমধ্যে একটি প্যাগোডা ধসে পড়েছে। সাথে লাগায়ো আরও একটি প্যাগোডাতে ফাটল দেখা দিয়েছে। অরক্ষিত রয়েছে পাহাড়ের উপর আরও তিনটি ঐতিহ্যবাহী প্যাগোডা। শহরের বৈইল্যা পাড়া এলাকায় জাদি পাহাড়ের উপরে (প্রায় ৬০ ফুট উঁচু পাহাড়ে) অবস্থিত বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের বড় পাঁচটি প্যাগোডা। তারমধ্যে গত তিন আগে টানা বর্ষণে একটি ধসে পড়ে। স্থানীয় বাসিন্দা ডালিম বড়ুয়া বলেন, কক্সবাজার শহরে বৌদ্ধদের একমাত্র ঐতিহ্য হল এই প্যাগোডাগুলো। এটি পর্যটনের অন্যতম স্পটও। কিন্তু রক্ষণাবেক্ষণ না করার কারণে বৌদ্ধদের এই ঐতিহ্য বিলীনের পথে। টানা বৃষ্টিতে গত তিন আগে পাঁচটি প্যাগোডার মধ্যে একটি সর্ম্পূণ ধসে নিচে পড়ে যায়। প্যাগোডাটি ধসে পড়েছে বেশ কয়েকটি বাড়ির উপরে। আরও একটি প্যাগোডার চারপাশে ফাটল দেখা দিয়েছে। এছাড়া অপর একটি প্যাগোডার উত্তর পাশে পাহাড় কাটার কারণে ঝুঁকিতে রয়েছে। যেকোনো সময় আরও দু’টি প্যাগোডা ধসে পড়ে প্রাণহানির ঘটনা ঘটতে পারে। এসব প্যাগোডা রক্ষায় উদ্যোগ নেয়ার জোর দাবি জানান তিনি।
স্থানীয় বাসিন্দা করবী বড়ুয়া জানান, যে প্যাগোডাটি তিন দিন আগে ধসে পড়েছে; ওই প্যাগোডার একপাশ থেকে গত বছর মাটি ধসে পড়ে। আস্তে আস্তে প্যাগোডার নিচ থেকে মাটি ধসের ঘটনা ঘটে। তা রক্ষার উদ্যোগ না থাকায় সর্বশেষ পুরো প্যাগোডা নিচে ধসে পড়ে। বর্তমানে প্যাগোডার নিচে বসবাসকারী প্রায় সাতটি পরিবার অন্যত্র চলে গেছে। তারমধ্যে ভুলু বড়ুয়া, খোকন বড়ুয়া, ডালিম বড়ুয়া ও করবী বড়ুয়াও বাড়ি ছেড়ে চলে যান। এছাড়া ঝুঁকিতে রয়েছে আরো অনেক পরিবার।
বৌদ্ধ মন্দির এলাকার কিন মু বলেন, সিঁড়ি দিয়ে প্যাগোডায় উঠার সময় দু’ পাশে অনেক ঝুঁকিপূর্ণ বাড়ি রয়েছে। বৃষ্টিতে পাহাড়ি ঢল ও মাটি কাটার কারণেই বাড়িগুলো ঝুঁকিতে পরিণত হয়েছে। প্রায় সব প্যাগোডার চারপাশে পাহাড় কাটা হয়েছে অনেক আগে। যার কারণে বৃষ্টির পানিতে আস্তে আস্তে প্যাগোডার নিচ থেকে মাটি গুলো সরে যায়। এরপর ফাটল ধরে চারপাশে। একসময় ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে ধসে পড়ে। দ্রুত সময়ে বাকি প্যাগোডাগুলো রক্ষা করা না হলে আগামী বর্ষায় নিশ্চিত ধসে পড়বে।
এদিকে গত রোববার ধসে পড়া প্যাগোডা পরিদর্শন করেন পরিবেশ অধিদপ্তর কক্সবাজার কার্যালয়ের পরিদর্শক জাহানারা ইয়াছমিন। তিনি সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, ‘প্রায় ৬০ ফুট পাহাড়ের উপরে পাঁচটি প্যাগোডা রয়েছে। এরমধ্যে একটি সম্পূর্ণ ধসে ৬০ ফুট নিচে কয়েকটি বসতবাড়ির উপরে পড়ে। জাদি পাহাড়ের সাথে দুই ফুট দূরত্বে রয়েছে বেশ কয়েকটি বসতবাড়িও। এসব বাড়িও ঝুঁকিতে রয়েছে। অনেক বছর আগ থেকে পাহাড় কেটে আশপাশে বসতবাড়ি তৈরি করার কারণে প্যাগোডাগুলো ধসে পড়ার ঝুঁকিতে পড়েছে। আবার টানা বৃষ্টিপাত হলে ফাটল ধরা আরো একটি প্যাগোডা ধসে পড়ার শংকা রয়েছে। প্যাগোডার চারপাশে প্রায় অর্ধশতাধিক বসত বাড়ি রয়েছে। তারাও ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাস করছে’।
জানতে চাইলে পরিবেশ অধিদপ্তর কক্সবাজার কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক সাইফুল আশ্রাব পূর্বকোণকে বলেন, এতোমধ্যে বৈইল্যাপাড়ার বৌদ্ধ প্যাগোডাগুলো রক্ষা করার বিষয়ে জেলা প্রশাসনের সাথে বৈঠক হয়েছে। বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে প্যাগোডাসহ আশপাশের পুরো এলাকা ‘পর্যটন এলাকা’ হিসেবে নির্ধারণ করা হবে। পৌরসভার পক্ষ থেকে প্যাগোডাগুলো রক্ষাণাবেক্ষণ করার উদ্যোগ নেয়া হবে। প্যাগোডার আশপাশে যেসব ঝুঁকিপূর্ণ বসতবাড়ি রয়েছে এসব উচ্ছেদ করা হবে। ফিরে আনা হবে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের ঐতিহ্যবাহী প্যাগোডা গুলো।
কক্সবাজার পৌরসভার নর্বনিবাচিত মেয়র মুজিবুর রহমান বলেন, আমি অবগত প্যাগোডার বিষয়ে। একটি ধসে পড়ার পাশাপাশি অপর আরেকটিতে ফাটল দেখা দিয়েছে। দ্রুত সময়ে পৌরসভার পক্ষ থেকে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের এসব প্যাগোডা রক্ষা করার জন্য উদ্যোগ নেয়া হবে।

Facebook Comments Box

শেয়ার দিন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো
© All rights reserved © 2019 bibartanonline.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com
themesbazarbibart251
error: Content is protected !!