গুহায় আটকেপড়া কিশোরদের জীবিত খুঁজে পাওয়া যাবে বলে ভবিষ্যদ্বাণী করা বৌদ্ধভিক্ষু ফ্রা খুবা বুনচামকে সম্মান জানানোর ঘোষণা দিয়েছেন থাইল্যান্ডের রাজা মহা ভাজিরালংকর্নই। ফ্রা খুবা বুনচাম ওই গুহার বাইরে ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান পালন করতেন। গত শনিবার থাই রাজা ওই বৌদ্ধ ধর্মগুরুকে দেখতে যান। ওই সময় তাকে সম্মান জানানোর প্রস্তাব দেন বলে জানিয়েছে থাই সংবাদমাধ্যম।
উদ্ধারকারীরা আটকে পড়া কিশোরদের খুঁজে পাওয়ার আগেই তাদের অবস্থান সম্পর্কে ঠিকঠাক ভবিষ্যদ্ববাণী করেন ওই ধর্মগুরু। তিনি জানান, ওই কিশোর আর তাদের কোচকে দুই দিনের মধ্যে জীবিত খুঁজে পাওয়া যাবে। ওই সময়ে তিনি সংবাদমাধ্যমকে বলেছিলেন, ‘তারা এখনও সেখানেই আছে, আগামী দু-একদিনের মধ্যেই তাদের খুঁজে পাওয়া যাবে।’ পরে গত ২ জুলাই দুজন ব্রিটিশ ডুবুরি গুহার বেশ কয়েক কিলোমিটার ভেতরে গিয়ে আটকেপড়া কিশোর ফুটবলার ও তাদের কোচকে জীবিত শনাক্ত করতে সক্ষম হন। এরপরই থাইল্যান্ডের মানুষের কাছে ব্যাপক পরিচিত হয়ে ওঠেন ওই বৌদ্ধ ধর্মগুরু।
শনিবার তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গিয়ে রাজা ভাজিরালংকর্নই ওই ধর্মগুরুকে রাজকীয় গাউন উপহার দেওয়ার ঘোষণা দেন। এই গাউন থাইল্যান্ডের বৌদ্ধ সংস্কৃতির অংশ।
২৩ জুন কিশোররা নিখোঁজ হলে থাম লুয়াং গুহা এলাকা তিনবার পরিদর্শন করেন ধর্মগুরু ফ্রা খুবা বুনচাম। প্রতিবারই তিনি সেখানে ধর্মীয় আচার আর প্রার্থনা করেন। দ্বিতীয়বার পরিদর্শন শেষে ওই এলাকায় কয়েকদিন ধরে চলা বৃষ্টিপাত বন্ধ হয়ে যায় আর নিখোঁজ শিশুদের খুঁজে পাওয়া যায়। অনেকেই বিশ্বাস করে থাকেন, বৃষ্টি বন্ধে ভূমিকা রয়েছে এই বৌদ্ধ ধর্মগুরুর। তবে গতকাল মঙ্গলবার নিখোঁজ শিশুদের উদ্ধার অভিযান চলার সময়েও প্রবল বৃষ্টিপাত হয়েছে সেখানে।
ধর্মগুরু ফ্রা খুবা বুনচাম আজীবন নিরামিষভোজী। থাইল্যান্ড, ভুটান আর চীনের শান প্রদেশের বিভিন্ন গুহায় ধ্যানমগ্ন থেকে বেশিরভাগ সময় কাটিয়েছেন তিনি। চীনের শান প্রদেশে জন্ম নেওয়া এই ধর্মগুরু মাত্র ১৬ বছর বয়সে বিভিন্ন বিষয়ে ভবিষ্যদ্ববাণী করা শুরু করেন।
থাইল্যান্ড ছাড়াও এই ধর্মগুরুর মিয়ানমার ও লাওসে প্রচুর ভক্ত রয়েছে। ফল আর বিস্কুট খেয়ে জীবনধারণ করে থাকেন তিনি। সবসময় হাঁটেন খালি পায়ে। মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর বিভিন্ন শীর্ষ কর্মকর্তা ও রাষ্ট্রীয় উপদেষ্টা অং সান সু চিও তার অনুসারী।
রবিবার (৮ জুলাই) থাইল্যান্ড সরকার তাদের উদ্ধারে দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞদের নিয়ে স্মরণকালের সবচেয়ে বড় অভিযান শুরু করে। ওই দিন চারজনকে এবং সোমবার আরও চারজনকে উদ্ধার করা হয়েছে। মঙ্গলবার স্থানীয় সময় ১০টা ৮ মিনিটে অবশিষ্ট ৫ জনকে উদ্ধারের জন্য ১৯ জন ডুবুরি গুহায় প্রবেশ করেছেন। ধারণা করা হচ্ছে সন্ধ্যার মধ্যেই সবাইকে বের করে নিয়ে আসা সম্ভব হবে।