যে কোনও ধর্মস্থানের মতো এই বৌদ্ধ মন্দির নিয়েও রয়েছে বেশ কিছু গল্পগাছা। কথিত, একবার খরার কবল থেকে বাঁচার জন্য এই মন্দিরের সামনে পূজার্চনা করেন গ্রামবাসীরা।
চিনের সেচুয়ান প্রদেশের দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলের একটি শহর চেংদু। সম্প্রতি সেখানেই মাটি খুঁড়ে হদিশ পাওয়া গিয়েছে ১০০০ বছর আগের এক বৌদ্ধ মন্দিরের।
ইতিহাসের পাতা ওলটালে দেখা যায় যে, চিনে বৌদ্ধ ধর্মের প্রবর্তন ঘটে প্রথম শতাব্দীতেই, যখন সেখানে রাজত্ব করছে হান রাজবংশ। বৌদ্ধ ভিক্ষুরা চিন পৌঁছন তৎকালীন রেশম পথ ধরেই।
চেংদুর সদ্য আবিষ্কৃত বৌদ্ধ মন্দিরটির নাম ‘ফুগান’, যার অর্থ ‘আশীর্বাদকে অনুভব করা’। যে কোনও ধর্মস্থানের মতো এই বৌদ্ধ মন্দির নিয়েও রয়েছে বেশ কিছু গল্পগাছা। কথিত, একবার খরার কবল থেকে বাঁচার জন্য এই মন্দিরের সামনে পূজার্চনা করেন গ্রামবাসীরা। প্রাকৃতিক কারণেই হোক বা দেবতার আশীর্বাদ, সেদিন বর্ষার জলে স্নাত হয় প্রকৃতি। এর পরেই মন্দিরের নামকরণ করা হয়।
• রূপোর পাতে মোড়া দ্রাসের ধর্মস্থানটি
• হাজার বছরের পুরনো শহর মাটির নীচে, সাক্ষী এক প্রাচীন মন্দির
এই গল্প লিখেছিলেন চিনের তাং সাম্রাজ্যের এক সাধক, নাম ডাওজুয়ান। ওই সাম্রাজ্যের এক কবির লেখায় জানা গিয়েছে মন্দিরের অসাধারণ সৌন্দর্য সম্পর্কে।
খননকার্যে প্রত্নতত্ত্ববিদরা উদ্ধার করেছেন এক হাজারেরও বেশি ‘ট্যাবলেট’, যাতে বৌদ্ধশাস্ত্র খোদাই করা। পাওয়া গিয়েছে ৫০০রও বেশি পাথর ও গ্লেজড টাইলের মূর্তি। মন্দির চত্বরের আশেপাশে প্রায় ৮০টি সমাধিও পাওয়া যায়।
ফুগান মন্দিরের আশেপাশে যে জনবসতি ছিল, তার প্রমাণস্বরূপ পাওয়া গিয়েছে বাড়ি-ঘর, কুয়ো, রাস্তার ভগ্নাংশ। নিত্যদিনের কাজে ব্যবহার করার নানা সামগ্রী এবং বাসনপত্রও উদ্ধার হয়েছে খননকার্য থেকে।
কিন্তু, এত কিছু পাওয়ার পরেও, প্রত্নতত্ত্ব দলের প্রধান ওয়াই লি জানিয়েছেন যে, এখনও বেশিরভাগ অঞ্চলের খননই বাকি রয়েছে। কাজ সম্পূর্ণ হলে, সে দেশে বৌদ্ধ ধর্মের প্রচার সম্পর্কে আরও অনেক নতুন তথ্য জানা যাবে বলে আশা করছেন সকলে।