চলতি মৌসুমে রেকর্ড সংখ্যক নেপালি নারী পৃথিবীর সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ এভারেস্ট জয় করার পরিকল্পনা করছেন। পুরুষ পর্বতারোহীর তুলনায় তিনগুণ বেশি নারী এভারেস্ট জয়ের আশা করছেন।
১৯ এপ্রিল, বৃহস্পতিবার নেপালের কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে সংবাদ মাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে এই কথা। নেপালের দিক থেকে হিমালয়ের সর্বোচ্চ এই শৃঙ্গ জয় করার আশা করছেন ১৫ নেপালি নারী। অন্যদিকে এই মৌসুমে এভারেস্ট জয়ের পরিকল্পনা করছেন নেপালের মাত্র ৫ পুরুষ।
ইতোপূর্বে ২০০৮ সালে ১০ জন নেপালি নারী এভারেস্ট জয়ের পরিকল্পনা করেন এবং তারা সবাই এ কাজে সফল হন। সবচেয়ে বেশি বার এভারেস্টজয়ী নারীও নেপালের নাগরিক, তিনি হলেন লাকপা শেরপা। আটবার এভারেস্ট জয় করেছেন তিনি।
১৯৭৫ সালে জাপানের জুনকো তাবেই প্রথম নারী হিসেবে এভারেস্ট জয় করেন। সে সময় থেকে শুরু করে ২০১৬ সাল পর্যন্ত ৩২৩ জন নারী সফলভাবে এভারেস্ট জয় করে ফেরেন, নেপালের ডিপার্টমেন্ট অব ট্যুরিজমের বরাত দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে বিবিসি। তবে শুধু নেপালের দিক থেকে এভারেস্টে ওঠা পর্বতারোহীদের রেকর্ড রাখে তারা। অন্যদিকে দি হিমালয়ান ডাটাবেজ সংস্থাটি এভারেস্টে ওঠার সকল ব্যক্তিরই রেকর্ড রাখে। তাদের হিসেব অনুযায়ী, ১৯৯৮ সাল থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত ৯১৮ জন নারী এভারেস্ট জয়ের চেষ্টা করেছেন এবং তাদের মাঝে সফল হয়েছেন ৪৯৪ জন।
সময়ের সঙ্গে বেড়ে চলেছে এভারেস্ট জয়ের চেষ্টায় পর্বতারোহীর সংখ্যা। এই বছরের পর্বতারোহণের মৌসুম সবে শুরু হয়েছে, তা শেষ হবে মে মাসে। এ সময়ের মাঝে হিমালয়ের বেস ক্যাম্পে আসবেন ৩৫০ জনের মতো পর্বতারোহী, জানিয়েছে দেশটির পর্যটন কর্তৃপক্ষ।
এ বছর এভারেস্ট আরোহণের প্রস্তুতি নেওয়া নেপালি নারীরা সারা পৃথিবীতে দুটি তথ্য প্রকাশ করতে চান। আর তা হলো, এভারেস্ট আরোহণের মাধ্যমে তারা নেপাল থেকে নারী পাচারের প্রতিবাদ জানাতে চান এবং পৃথিবীকে জানাতে চান যে বৌদ্ধ ধর্মের প্রচারক বুদ্ধের জন্ম হয়েছিল নেপালে। এভারেস্ট বেস ক্যাম্প থেকে বিবিসিকে এই কথা জানিয়েছেন পর্বতারোহী শর্মিলা লামা।
২০১৫ সালে নেপালে ভয়াবহ এক ভূমিকম্পের পর ওই এলাকা থেকে নারী পাচারের সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে বেড়ে গেছে বলে জানিয়েছে বিবিসি। এ ব্যাপারে মানুষের মাঝে সচেতনতা বাড়াতে চান পর্বতারোহীরা।
বুদ্ধের জন্মস্থানে যে নেপাল, এ তথ্য নিয়ে সচেতনতা বাড়ানোর ব্যাপারে শর্মিলা লামা বলেন, ‘অনেকেই দাবি করে বুদ্ধ ভারতে জন্মেছিলেন। আমরা পৃথিবীকে জানাতে চাই যে তিনি আসলে নেপালে জন্ম নিয়েছিলেন’।
ট্রেকিং গাইড শর্মিলা লামার পাশাপাশি এ বছর এভারেস্ট জয়ের চেষ্টায় আরও আছেন আলোকচিত্রশিল্পী পূর্ণিমা শ্রেষ্ঠা এবং পাঁচ নারী সাংবাদিক।