1. pragrasree.sraman@gmail.com : ভিকখু প্রজ্ঞাশ্রী : ভিকখু প্রজ্ঞাশ্রী
  2. avijitcse12@gmail.com : নিজস্ব প্রতিবেদক :
  3. wp-configuser@config.com : James Rollner : James Rollner
শনিবার, ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৮:০৪ অপরাহ্ন

পঞ্চ পল্লব পরিত্রাণের অপরিহার্য অংশ

প্রতিবেদক
  • সময় বুধবার, ১৪ মার্চ, ২০১৮
  • ৫৪৪৭ পঠিত

এস প্রিয়রত্ন ভিক্ষু:

পঞ্চপল্লব কি..? পঞ্চপল্লব হচ্ছে পরিত্রাণ এর অপরিহার্য একটি অংশ। সেটা হয়ত আমরা অনেকে বুঝি, আবার অনেকে বুঝি না, সাধারনত জৈনক ব্যক্তি অথবা দায়ক-দায়িকাদের বাসায় যখন সুত্রপাট এর ব্যবস্থা করা হয়, তখন দেখা যায় ভান্তেদের সামনে বিভিন্ন পাতা দিয়ে এবং একটি কলসি-জগ-পাত্রের মধ্যে পানি দিয়ে ঘট তৈরি করে দেওয়া হয়। এর মধ্যে দেখা যায় একটা ধর্ম পুজাও আবার( অনেকে পুরুইত ও বলে) দেওয়া হয়। সেখানে থাকে কলা, নারিকেল, পান, সুপাড়ি, মোমবার্তি, ধুপ বার্তি, সুতা আরো বিভিন্ন কিছু দিয়ে সাজানো হয়, আমি জৈনক এক ব্যক্তির বাসায় পরিত্রাণ পাঠ করার সময় তাদের জিগাসা করি এগুলো কেন দেন…? তারা বলল ভান্তে সেটা তো জানি না…কেন দি… কি কারনে দি… সবাই তো দেয় তাই আমিও দিলাম। কিন্তু এর কারন সম্পর্কে অবগত নই, তখন তাদের সঠিক বিষয় সম্পর্কে উপস্থাপন করি। কোন ব্যক্তি পরিত্রাণ এর আয়োজন করে পুজনীয় ভিক্ষু সংঘদের ফাং এবং আত্বীয় স্বজন, পাড়া- প্রতিবেশিদের আমন্ত্রন করা হয় আমন্ত্রিত ব্যক্তিদের বসানোর আসন যেমন ব্যবস্থা করা হয় তেমনই দেবতাদের ও আসন বা মঙ্গল ঘট দিতে হয়। এই মঙ্গল ঘটে দেবগনের প্রিয় পঞ্চপল্লব বৃক্ষের পাতা দিয়ে সু- সর্জিত করা হয়। যেগুলো গ্রাম অঞ্চলেই বেশি পাওয়া যায়, হয়ত সবাই চিনবেন সেগুলো হল –

যথাক্রমে:-

১. অশ্বৎ বৃক্ষের ডগা বা বোধি পাতা।

২. আম গাছের ডগা বা আম পাতা।

৩. মুরালি পাতা বা ঘট পাতা।

৪. কলা গাছের ডিগ বা মধ্যে খানের পাতা।

৫. বেনুর ডগা বা বাঁশ পাতা ।

এই পাঁচ প্রকারের বৃক্ষের পাতা দিয়ে তৈরি করা হয় পঞ্চপল্লব এগুলো দেওয়ার মুল কারণ হল সু-দেবগনের অবস্থানের আসন বা বসার স্থান হয়ত অনেকের মনে প্রশ্ন জাগতে পারে ভান্তে এই পাতা গুলোই কেন দেওয়া হয়….? কারন এই পাতা গুলো দেওয়ার এই কারনেই ভান্তেদের সুত্র পাঠের জন্য যখন ফাং করা হয়, সেটা বিহারে হোক, বাসায় হোক, কিংবা বাড়িতে হোক যেখানেই হোক না কেন সেখানে ভান্তেদের জন্য (ধর্ম আসন) বা সুন্দর বিছানা দেওয়া হয়, উপাসক উপাসিকারা ও পাটি, মাদুরা বিভিন্ন কিছু বিছানা করে সুন্দর করে বসে স্থান গ্রহন করেন, কিন্ত যখন ভান্তেরা শীল প্রদান করে, এর পর পরেই দায়কেরা পরিত্রাণ প্রার্থনা করে।

পরিত্রাণ প্রার্থনা (পালি-বাংলা)

পালি:-

ভন্তে (সঙ্ঘো), বিপত্তি পটিবাহায সব্বসম্পত্তি সিদ্ধিযা, সব্বদুক্খা বিনাসায, সব্বভয বিনাসায, সব্বরোগ বিনাসায, সব্ব অন্তরায বিনাসায, সব্বউপদ্দব বিনাসায, সব্বঅমঙ্গলং বিনাসায, সব্বপাপমার বিনাসায, ভবে দীঘাযু দাযকং চিত্তং উজুং করিত্বান পরিত্তং ব্রূথ মঙ্গলং। (তিন বার)

বাংলা অনুবাদ :-

ভন্তে (প্রভূ), সর্ববিধ বিঘ্ন-বিপত্তি দূরীভূত হয়ে সকল প্রকার সম্পত্তি লাভের জন্য, সকল দুঃখ, সকল ভয়, সকল রোগ, সকল অন্তরায়, সকল উপদ্রব, সকল গ্রহদোষ, সকল প্রকার অমঙ্গল বিনাশ হবার জন্য সরল ও একাগ্র চিত্তে দীর্ঘায়ুদায়ক মঙ্গলময় পুরত্রাণ পাঠ করুন। (তিন বার)

দায়কদের এই প্রার্থনার অনুকূলে ভান্তেরা দেবতা আমন্ত্রন করেন, যাতে স-দেবগন উপস্থিত হয়।

দেবতা আমন্ত্রন (পালি বাংলা)

পালি:-

সমন্ত চক্কবালেসু অত্রাগচ্ছন্তু দেবতা
সদ্ধম্মং মুনিরাজস্ স সুনন্তু সগ্গমোক্ খদং।
ধম্ম- সবণ -কালো অযং ভদ্দন্ত’তি (তিনবার)

বাংলা অনুবাদ:-

সমস্ত চক্রবালবাসী দেবগন এখানে আগমন করুন,মনিরাজ বুদ্ধের স্বর্গ-মোক্ষপদ সদ্ধর্ম শ্রবণ করুন। মাননীয় দেবগন, সদ্ধর্ম শুনিবার উপযুক্ত সময়। ( তিনবার)

ভান্তেরা বা শ্রামনেরা দেবতা আমন্ত্রনের পর তখন দেব গন উপস্থিত হয়। উপস্থিত হয়ে তৈরি কৃত পঞ্চপল্লব বা পাঁচ প্রকারের পাতার উপর অবস্থান করেন, এই পাতা গুলো দেব গনের অতিব পছন্দ নিয়, এই পাতাগুলো দেখলে দেবতারা সন্তুস্ট হন,কারন অশ্বৎ বৃক্ষ, কলার বৃক্ষ, বেনু বৃক্ষ, আম বৃক্ষ, মুরালী বৃক্ষ সু-দেবতা অাবস্থান করে বলেই দেওয়া হয়। এবং যতক্ষন ভান্তেরা বুদ্ধের অমৃত ময় সুত্র বানী পরিবেশন করেন ততক্ষন পর্যন্ত উপাসক-উপাসিকাদের পাশা পাশি শ্রদ্ধা ভরে সু-দেবগনও সুত্র পাঠ শ্রবন করেন।

উপস্থিত গৃহ-রক্ষাকারি দেবগন তথা চারি লোকপাল দেবগন- শত সহস্র কোটি দেবগন সুত্রপাট শ্রবণ জনিত পূন্য অর্জন করেন এবং দায়দের মঙ্গল সাধন তথা বুদ্ধ সাসনের উন্নতি সাধন করেন। সুত্র পাঠ হল মানব জীবনের রক্ষা কবচ,যা মানুষকে রক্ষা করে সমস্ত বিপদ থেকে।

হয়ত নিজ ভাষায় এবং আমার ক্ষুদ্র জ্ঞানে সকলের অবগতির জন্য উপাস্থাপনের চেস্টা করেছি, ভুল হয়ত মানুষেরই হয়, যদি কোন কারনে কথার মধ্যে কিংবা উপাস্থাপনের মধ্যে যদি ভুল ভ্রান্তি হয় তাহলে নিজ জ্ঞানে আপনারা সংশোধন করে নিয়ে আমায় কৃতার্থ করবেন। আমার লেখার সার্থকতা হবে তখনি আপনারা যদি পড়েন এবং তা যদি ভালো লাগে, যদি কোন কাজে আসে আমার এই লেখনীয় তখনই প্রান পাবে।

জগতের সকল প্রানী সুখী হোক —
দুঃখ থেকে মুক্তি লাভ করুক

-লেখক ভদন্ত এস প্রিয়রত্ন ভিক্ষু
উপাধ্যক্ষ ইপিজেড সার্বজনীন বৌদ্ধ বিহার
ইপিজেড,চট্রগ্রাম

Facebook Comments Box

শেয়ার দিন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো
© All rights reserved © 2019 bibartanonline.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com
themesbazarbibart251
error: Content is protected !!