কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার রানি ময়নামতি প্রাসাদ খননে বিশেষ পথের সন্ধান মিলেছে। এ খননে আবিষ্কৃত হয়েছে প্রাগৈতিহাসিক যুগের হাতিয়ার, জীবাশ্ম কাঠ, কালির দোয়াতসহ বিভিন্ন মূল্যবান প্রত্নসম্পদ।
গত দুই মাসব্যাপী এ খনন কাজ করা হয়। সোমবার রানি ময়নামতি প্রাসাদ এলাকায় প্রত্নতাত্ত্বিক খননে উন্মোচিত স্থাপনা ও আবিষ্কৃত প্রত্নবস্তুর অনসাইট প্রদর্শনীর আয়োজন করে প্রত্নতত্ত্ব অধিদফতর। এতে স্থানীয় এলাকার ৫টি স্কুল ও কলেজের দুই সহস্রাধিক শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, জেলার বুড়িচং উপজেলার ময়নামতি এলাকায় লালমাই ময়নামতি পাহাড় শ্রেণির সর্ব উত্তরের বিচ্ছিন্ন পাহাড়ে কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কের পাশে রানি ময়নামতির প্রাসাদটি অবস্থিত।
১০ একর আয়তনের এ প্রত্নস্থলটি লালমাই-ময়নামতি এলাকার অন্যান্য পুরাকীর্তির সঙ্গে বৈসাদৃশ্যপূর্ণ। বিভিন্ন সময়ে খননে এখানে ৫১০ ফুট দৈর্ঘ্য ও ৫০০ ফুট আয়তনের বেষ্টনী প্রাচীর এবং বৌদ্ধ ধর্মীয় ক্রুশকার মন্দিরসহ ৪টি নির্মাণ যুগের স্থাপত্য নিদর্শন উন্মোচিত হয়।
এছাড়া ৪টি বসতি স্তরে পোড়ামাটির ফলক, মূল্যবান প্রত্নবস্তু ও মাটিরপাত্র ইত্যাদি আবিষ্কৃত হয়। প্রত্নস্থলের উত্তর-পশ্চিম অংশে সীমিত আকারে খনন করা হয়।
ফলে এ স্থান সম্পর্কে প্রত্ন-অনুসন্ধিৎসুকদের মধ্যে একটি কৌতুহল থাকায় এ পুরাকীর্তির উত্তর-পশ্চিমে উঁচুতে কোনো স্থাপনা আছে কিনা তা পর্যবেক্ষণের জন্য ২০১৬-২০১৭ অর্থ বছর থেকে পুনরায় খনন শুরু হয়ে ২০১৭-২০১৮ অর্থ বছরেও সেই প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখা হয়।
গত বছরের ১২ নভেম্বর হতে মাঠ পর্যায়ে খনন কাজ শুরু করা হয় এবং চলতি বছরের গত ১২ জানুয়ারি পর্যন্ত তা অব্যাহত থাকে। রানি ময়নামতি প্রাসাদ এলাকায় সোমবার আনুষ্ঠানিকভাবে প্রত্নতাত্ত্বিক খননে উন্মোচিত স্থাপনা ও আবিষ্কৃত প্রত্নবস্তুর অনসাইট প্রদর্শনীর আয়োজন করে প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ। এতে ওই এলাকার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দুই সহস্রাধিক শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে।
প্রত্নতত্ত্ব অধিদফতরের চট্টগ্রাম বিভাগীয় আঞ্চলিক পরিচালক লাভলী ইয়াসমিন বলেন, এ বছর রানি ময়নামতি প্রাসাদ খননে পশ্চিম দিকে প্রায় ২ মিটার চওড়া সীমানাপ্রাচীর, বিশেষ পথ এবং মূল্যবান প্রত্নবস্তু উন্মোচিত হয়েছে। আশপাশের এলাকার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের প্রত্নতত্ত্বে প্রতি আগ্রহ সৃষ্টি করে তাদের প্রত্ন-মনস্ক হিসেবে গড়ে তোলার জন্য এ প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে।