শীত মৌসুমে বদলগাছীর ঐতিহাসিক পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহারে দর্শনার্থীর ঢল নেমেছে। প্রতিদিন বিভিন্ন স্কুল কলেজের ছাত্র-ছাত্রী, পিকনিক পার্টিসহ ভ্রমণপিপাসু দেশি-বিদেশি মানুষের আগমনে মুখরিত হয়ে উঠেছে পুরো বিহার।
এ বিহারের সহকারী পরিচালক ছাদেকুজ্জামান বলেন, সাউথ এশিয়া টুরিজম ইনফাস্টট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্টের মাধ্যমে সৌন্দর্য বৃদ্ধি ও এ বিহারকে আরো আকর্ষণীয় করে তোলা হয়েছে। এতে আগের তুলনায় দর্শনার্থীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। শীত মৌসুমে প্রতিদিন দুই থেকে তিন হাজার দর্শনার্থী আসছে বলেও তিনি জানান। নওগাঁর বদলগাছী উপজেলা সদর থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার উত্তরে ঐতিহাসিক বৌদ্ধ বিহার অবস্থিত। এর আদিনাম সোমপুর বিহার। ইতিহাসবিদদের মতে পাল বংশের দ্বিতীয় রাজা ধর্মপাল অষ্টম শতকের শেষের দিকে এ বিহার নির্মাণ করেন। বিহারের আয়তন উত্তর দক্ষিণে ৯২২ ফুট পূর্ব পশ্চিমে ৯১৯ ফুট। পৃথিবীতে এ পর্যন্ত জ্যামিতিক নকশার পুরাকীর্তির যে সন্ধান পাওয়া গেছে পাহাড়পুর তার মধ্যে সেরা। কারো কারো মতে, এখানে একটি জৈন মন্দির ছিল। আর সেই মন্দিরের উপরেই গড়ে তোলা হয়েছে বিহার। এ বিহারে মোট ১৭৭টি ঘর রয়েছে। ঘরগুলোতে বৌদ্ধভিক্ষুরা বাস করতেন। নরওয়ে সরকারের আর্থিক সহায়তায় বাংলাদেশ সরকারের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের তত্ত্বাবধানে ১৯৯৩ সালে এখানে একটি জাদুঘর গড়ে তোলা হয়। এ জাদুঘরে খলিফা হারুনূর রশিদের শাসনামলের রূপার মুদ্রাসহ বিভিন্ন সময়ের প্রাচীন মুদ্রা, কয়েক হাজার পোড়ামাটি ফলকচিত্র, পাথরের মূর্তি, তাম্রলিপি, শিলালিপি ইত্যাদি স্থান পেয়েছে। এছাড়াও বিহারের চারপাশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যও দর্শনার্থীদের সহজেই মুগ্ধ করে।
ছাদেকুজ্জামান আরো বলেন, বিহারটিকে দর্শনার্থীদের কাছে আরো আকর্ষণীয় করার জন্য সাউথ এশিয়া টুরিজম ইনফাস্টট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্টের অধীনে ইতোমধ্যেই একটি কমপ্লেক্স ফুড ক্যান্টিন, টয়লেট কমপ্লেক্স, মসজিদ, বেস্টনি প্রাচীর, অভ্যন্তরীণ রাস্তা, ডরমেটরি নির্মাণসহ অনেক প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। এসব প্রকল্পের সব কাজ শেষ হলে দর্শনার্থীরা এখানে আধুনিক পর্যটন কেন্দ্রের সব সুবিধাই পাবেন।