মহামতি গৌতম বুদ্ধের স্মৃতিবিজড়িত মাঘী পূর্ণিমা উপলক্ষে বৌদ্ধ বিহারগুলো পূণ্যার্থীদের পদভারে মুখরিত। বুধবার (৩১ জানুয়ারি) নগরীসহ চট্টগ্রামের বিভিন্ন বৌদ্ধ বিহারে দিনব্যাপী নানান কর্মসূচির মধ্য দিয়ে পালিত হয়েছে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের তাৎপর্যপূর্ণ এ দিনটি।
দিনব্যাপী কর্মসূচির মধ্যে ছিল-বুদ্ধ ও সীবলী পূজা, অষ্টপরিস্কারসহ সংঘদান, পঞ্চশীল ও অষ্টশীল গ্রহণ, প্রদীপ পূজা এবং ধর্মীয় আলোচনা সভা।
শীল গ্রহণ ও মোমবাতি প্রজ্জালনের মাধ্যমে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী পূর্ণার্থীরা সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত প্রার্থনা করেন।
নগরীর নন্দনকাননের চট্টগ্রাম বৌদ্ধ বিহারের অধ্যক্ষ জ্ঞানশ্রী মহাস্থবির, দেবপাহাড় পূর্ণাচার আন্তর্জাতিক বৌদ্ধ বিহারের অধ্যক্ষ অনাথপিতা সত্যপ্রিয় মহাস্থবির, কাতালগঞ্জ নবপণ্ডিত বিহারের অধ্যক্ষ অধ্যাপক উপানন্দ মহাথের, চান্দগাঁও সার্বজনীন শাক্যমুনি বৌদ্ধ বিহারের অধ্যক্ষ এস লোকজিৎ থের, ইপিজেড সার্বজনীন বৌদ্ধ বিহারের অধ্যক্ষ অধ্যাপক জ্ঞানরত্ন মহাথের, পাথরঘাটা জেতবন শান্তিকুঞ্জ বৌদ্ধ বিহারের অধ্যক্ষ শিক্ষক বোধিমিত্র থের, হাটহাজারীর জোবরা সুগত বিহারের অধ্যক্ষ শীলরক্ষিত মহাস্থবির,
পটিয়া কেন্দ্রীয় বৌদ্ধ বিহারের অধ্যক্ষ ড. সংঘপ্রিয় মহাস্থবির, বাঁশখালীর জলদী ধর্মরত্ন বিহারের অধ্যক্ষ ধর্মপাল মহাস্থবির, শীলকূপ জ্ঞানোদয় বিহারের অধ্যক্ষ শিক্ষক রাহুলপ্রিয় মহাস্থবির, শীলকূপ চৈত্য বিহারের অধ্যক্ষ কর্মবীর দেবমিত্র মহাস্থবির, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশ্বশান্তি প্যাগোডার উপ-বিহারাধ্যক্ষ ধর্মবোধি ভিক্ষুর পরিচালনায় ও দেশের সকল বিহারে মাঘী পূর্ণিমা উপলক্ষে দিনব্যাপী ধর্মীয় কার্যাদি সম্পন্ন হয়েছে।এছাড়া রামু কেন্দ্রীয় সীমা বিহারে শুভ মাঘী পূর্ণিমা উপলক্ষে অন্নদান অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
মাঘী পূর্ণিমা তিথি বৌদ্ধদের একটি পবিত্র দিন। গৌতম বুদ্ধের মহাপরিনির্বাণ দিন ঘোষণার স্মৃতিবিজড়িত এ মাঘী পূর্ণিমায় বুদ্ধের আয়ুসংস্কার তিথিও পালন করা হয়।
খ্রিষ্টপূর্ব আড়াই হাজার বছর পূর্বে বৈশালীর চাপালচৈত্যে মল্লদের শালবনে তথাগত শিষ্য পরিবেষ্টিত অবস্থায় গৌতম বুদ্ধ ঘোষণা করেছিলেন, তিনি আগামী পূর্ণিমা অর্থাৎ মাঘী পূর্ণিমা তিথি থেকে বৈশাখী পূর্ণিমা তিথিতে মহাপরিনির্বাণ লাভ করবেন। স্মরণীয় এ দিনে বুদ্ধ ভিক্ষুসংঘের উদ্দেশে বলেছিলেন, ‘ভিক্ষুরা অপ্রমত্ত, স্মৃতিমান, শীলবান সুসমাহিত স্থির চিত্তে সর্বদা এক উদ্দিষ্ট লক্ষে চালিত হবে। আমার দ্বারা প্রকাশিত, সুব্যাখ্যাত, প্রত্যক্ষ, ফলপ্রদ ও ফলদানে কালাকাল মানে না এমন ধর্ম বিনয় যে অপ্রমত্ত হয়ে বিহরণ করবে, সেই সংসার চক্র অতিক্রম করে বিমুক্তি আস্বাদন করবে।’