খাগড়াছড়ির মানিকছড়িতে বিশ্বশান্তি স্মৃতিধাম আর্ন্তজাতিক ভাবনা কেন্দ্রে উৎসবমুখর পরিবেশে সহস্রাধিক প্রব্রজ্যা গ্রহণ করেছে। গত শনিবার ধর্মীয় ভাবগম্ভির পরিবেশ ও আনন্দ উদ্দীপনায় বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের এ প্রব্বজ্যা গ্রহণ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে বিপুল সংখ্যক দায়ক-দায়িকা, উপাসক অনুষ্ঠানে যোগ দেন। দীর্ঘ পাঁচবছর পর এ ভাবনা কেন্দ্রে দ্বিতীয়বারের মত এ বৃহৎ ধর্মীয় অনুষ্ঠানটি হচ্ছে। গত শুক্রবার সকাল ৬টায় ধর্মীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে তিন দিনব্যাপী অনুষ্ঠানের সূচনা হয়।
তিন পার্বত্য জেলাসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রব্বজ্যা গ্রহণের জন্য আগত বিভিন্ন বয়সী ভক্তরা শনিবার সকালে ভাবনা কেন্দ্রে সমবেত হয়। মাথা মুড়িয়ে পবিত্র করা হয় এদের। পরিধানের গেরুয়া রঙের চীবর (কাপড়) সহ অষ্ট পরিষ্কারের সামগ্রীর পাত্র মাথায় নিয়ে দীর্ঘ পথ পরিভ্রমণের পর অনুষ্ঠানস্থলে সমবেত হন তারা। পরে পঞ্চশীল ও দশশীল পাঠ ও শ্রবন করানোর পর গেরুয়া রঙের চীবর পরিধান করানো হয় সবাইকে। রাঙ্গামাটির রাজস্থলী বৌদ্ধ বিহারের অধ্যক্ষ ক্ষ্যামাছাড়া মহাস্থবির পঞ্চশীল ও দশশীল পাঠ ও শ্রবণ করান।
এ সময় স্মৃতিধাম আন্তর্জাতিক ভাবনা কেন্দ্রের পরিচালক স্মৃতিমিত্র মহাস্থবিরসহ বিভিন্ন স্থান থেকে আগত প্রায় ৫০ জন বৌদ্ধভিক্ষু উপস্থিত ছিলেন। প্রব্বজ্যা গ্রহণ অনুষ্ঠানের শুরুতে খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও অনুষ্ঠান আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক কংজরী চৌধুরী শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন। উপস্থিত ছিলেন মানিকছড়ি উপজেলা চোরম্যান ¤্রাগ্য মারমা, খাগড়াছড়ি জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য ও আয়োজক কমিটির সদস্য সচিব মংপ্রু চৌধুরী, জেলা পরিষদের সদস্য রে¤্রাচাই চৌধুরী, গুইমারার হাফছড়ির ইউপি চেয়ারম্যান চাইথোয়াই চৌধুরী, সিন্ধুকছড়ির ইউপি চেয়ারম্যান রেদা মারমা, খাগড়াছড়ির কমলছড়ির ইউপি চেয়ারম্যান সাউপ্রু মারমা, খাগড়াছড়ি সদর ইউপি চেয়ারম্যান আমেয় মারমা প্রমূখ।
সংশ্লিষ্টরা জানান, প্রব্রজ্যা গ্রহণকারীরা ৭দিন এ ভাবনা কেন্দ্রে অবস্থান করবেন। এ সময় তাদের ধ্যান চর্চা, পঞ্চশীল, দশশীল চর্চার নির্দেশনা ও পরিপালনের পুর্ণ প্রশিক্ষণ দেয়া হবে। আগামী ৩ ফেব্রুয়ারি সমাপনী দিনে আনুষ্ঠানিকভাবে তারা ভাবনা কেন্দ্র থেকে স্ব স্ব গৃহে ফিরে যাবেন।
গত শনিবার সকালে প্রব্বজ্যা গ্রহণ অনুষ্ঠান শুরুর আগে স্মৃতিধাম আন্তর্জাতিক ভবনা কেন্দ্র হতে আনন্দ শোভাযাত্রা বের করা হয়।
এছাড়াও ভাবনা কেন্দ্রে নবনির্মিত তীর্থক্ষেত্রে স্থাপিত প্রায় একশ’ ফুট উচ্চতার বুদ্ধমূর্তিসহ মোট ১০৮টি বুদ্ধমূর্তির জীবন্যাস এবং সীমা প্রতিষ্ঠা অনুষ্ঠানও হয়।