ধর্মীয় সম্প্রীতির অনন্য দৃষ্টান্ত
নীতিশ বড়ুয়া:
বৌদ্ধদের অন্যতম ধর্মীয় গুরু, বাংলাদেশ সংঘরাজ ভিক্ষু মহাসভার উপ-সংঘরাজ, একুশে পদকে ভুষিত পন্ডিত সত্যপ্রিয় মহাথের বলেছেন, ভগবান তথাগত সম্যক সম্বুদ্ধ কোন ব্যক্তি বা সম্প্রদায়কে দুঃখ থেকে মুক্তি বা উদ্ধারের কথা বলেননি। তিনি বিশ্বের সকল প্রাণীর মুক্তির কথা বলেছেন। বুদ্ধ বলেছেন এসো, দেখ, জান, উপলব্দী করো, ভাল মনে হলে প্রতিপালন করো। শুধু বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা বুদ্ধের ধর্ম পালন করতে পারবে তা নয়। এ ধর্ম সর্ব জীবের হিতের জন্য, দুঃখ মুক্তির জন্য। যে কেউ বুদ্ধ ধর্ম পালন করতে পারে, তাতে তার নিজের ধর্মেরও কোন প্রকার ক্ষতি সাধিত হয় না।
গতকাল সোমবার (১৫ জানুয়ারি) সকালে রামুর অতি সুপরিচিত বৌদ্ধ মন্দির সাধনাধ্বজ্বা মহাজ্যোতি (সাদাচিং) বিহারে অষ্টপরিষ্কারসহ মহাসংঘদান অনুষ্ঠানে সভাপতির ধর্মদেশনায় তিনি এ কথা বলেন। রামু উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগ সাধারণ সম্পাদক, বিশিষ্ট রাজনীতিক তপন মল্লিক তাঁর স্ত্রী কন্ঠশিল্পী মিনা মল্লিক এ পুণ্যানুষ্ঠানের আয়োজন করেন।
এতে প্রধান ধর্মদেশকের দেশনায় রামু উত্তর মিঠাছড়ি বিমুক্তি বিদর্শন ভাবনা কেন্দ্র ও ভূবন শান্তি একশ ফুট সিংহ শয্যা গৌতম বুদ্ধমুর্তি’র প্রতিষ্ঠাতা ভদন্ত করুনাশ্রী থের বলেছেন, চিকিৎসার ক্ষেত্রে আমরা যেমন ডাক্তার কোন্ ধর্মের লোক চিন্তা না করে ডাক্তারের পরামর্শ বা চিকিৎসা সেবা গ্রহন করি। তেমননি ডাক্তারও রোগী কোন্ সম্প্রদায়ের রোগী বিবেচনা না করে তাকে চিকিৎসা সেবা প্রদান করে সুস্থ করে তোলে। ঠিক অনুরূপ গৌতম বুদ্ধের প্রবর্তিত বুদ্ধ ধর্ম কোন বিশেষ জাত, কুল বা সম্প্রদায়ের জন্য নয়। বুদ্ধ ধর্ম জগতের সকলের মঙ্গলের কথা বলা হয়েছে। রাজনীতিক তপন মল্লিক ও তাঁর স্ত্রী কন্ঠশিল্পী মিনা মল্লিক অষ্টপরিষ্কারসহ মহাসংঘদানের আয়োজন করে যে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন তাতে আবারো প্রমানিত হলো রামুর হাজার বছরের ধর্মীয় সম্প্রীতি একটুও ক্ষুন্ন হয়নি। বিভিন্ন ধর্ম-সম্প্রদায়ের লোকের অংশ গ্রহনে অনুষ্ঠানটিও হয়ে উঠেছে সম্প্রীতির মেলবন্ধন।
মহতি পুণ্যানুষ্ঠানে রামু শ্রীকুল পুরাতন বৌদ্ধ বিহারের অধ্যক্ষ চেকাচারা মহাথের, বড়ক্যাং বৌদ্ধ বিহারের অধ্যক্ষ পাঞাদ্বীপা মহাথের, রামু কেন্দ্রীয় সীমা বিহারের উপাধ্যক্ষ শীলপ্রিয় থের, মৈত্রী বিহারের অধ্যক্ষ প্রজ্ঞাতিলক থের প্রমুখ ভিক্ষুসংঘ ধর্মদেশনা করেন।