ভৌগোলিক অবস্থানগত দিক বিবেচনায় দেশে দেশে শুরু হয়ে গেছে খ্রিষ্টীয় নববর্ষ বরণ উৎসব। নতুন বছর মানেই নতুন আনন্দ আর নতুন পরিকল্পনা। দিনপঞ্জির পাতা অনুযায়ী, আমাদের জীবন থেকে বিদায় নিয়ে গেল ২০১৭ সাল। শুভ আগমন ২০১৮।
ইংরেজী নববর্ষ দিন উপলক্ষে মিয়ানমারে এবার ধর্মীয় অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে নতুন বছরকে বরণ করে নিয়েছে ইয়াংগুনের অধিবাসীরা। স্থানীয় ও বিদেশী ভিক্ষু মিলে বিভিন্ন মন্দির থেকে প্রায় ১৮০০০ বৌদ্ধ সন্ন্যাসী বা ভিক্ষু ও জনগণ একসাথে শ্বেদাগন প্যাগোডাতে সমবেত হয়ে দানীয় অনুষ্ঠান সোমবার ১ জানুয়ারি ২০১৮ ইয়াংগুনে পালন করা হয়েছে। খবর- মিজিমা নিউজ , ইরাবতি ও মিয়ানমার টাইমস।
যা এই অনুষ্ঠানটি মিয়ানমারে ইতিহাসের সবচেয়ে বড় হতে পারে বলে কয়েকজন অফিশিয়াল কর্মকর্তা জানান।
এর আগে ২০০০ সালের ২৯ এপ্রিল অনুরূপ এই রকম একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয় যেখানে ১৮ হাজার সন্ন্যাসী অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন। এরপর ২০১২ সালে ৭ মার্চ রাষ্ট্রপতি ইউ টেন সেইন ক্ষমতা থাকাকালীন সময়ে ২৬০০ সন্ন্যাসী নিয়ে এই রকম অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছিল।
ধর্মীয় বিষয়ক ও সংস্কৃতি মন্ত্রী ‘তুরা ইউ আং কো’বলেন, ধর্মীয় অনুষ্ঠানে সরকার , জনগণ এবং সন্ন্যাসী মিলে একত্রে পালন করায় ঐতিহাসিকভাবে সাফল্য হয়েছে।
মিয়ানমারের রাষ্ট্রপতি হটিন কিয়াও নববর্ষের অনুষ্ঠানে যোগ দেন। তিনি বলেন, সরকার অভ্যন্তরীণ শান্তি, জাতীয় পুনর্গঠন, গণতান্ত্রিক মৈত্র প্রজাতন্ত্র গড়ে তোলার এবং জনগণের সামাজিক ও অর্থনৈতিক জীবনযাত্রার উন্নতির লক্ষ্যে কঠোর পরিশ্রম করে যাচ্ছেন।
শান্তিপূর্ণ, সমৃদ্ধ ও উন্নত দেশ গঠনের লক্ষ্যে মিয়ানমারের জনগণ পূর্ণ শক্তি ও উৎসাহ দিয়ে সরকারের সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
অনুষ্ঠানে সব ধর্মের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির জন্য বিশেষ প্রার্থনা করা হয়।
এদিকে, থাইল্যান্ড এবং মিয়ানমারে দুই দেশের সম্পর্ক আরো মজবুত করতে মিয়ানমার মান্দালয় বিভাগীয় সরকার একটি গণ দান অনুষ্ঠান আয়োজন করেছে।
আগামী ২১ শে জানুয়ারী মান্দলয়ের চ্যানমিথারজি বিমানবন্দরের নিকটে অনুষ্ঠানটি উদযাপন করা হবে। উক্ত অনুষ্ঠানে প্রায় মান্দালয় থেকে ২০,০০০ ভিক্ষু অংশগ্রহণ করার আশা করা যাচ্ছে। এছাড়া ও থাইল্যান্ড থেকে ৬০ জন ভিক্ষুকে নিমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ধর্ম এবং সংস্কৃতির কেন্দ্রীয় মন্ত্রী, মান্দালয়ের মুখ্যমন্ত্রী এবং অন্যান্য আঞ্চলিক সরকারি কর্মকর্তা সহ সাংগঠনিক কমিটির সদস্যরা এই পুন্যনুষ্ঠান আয়োজন করেছে।
কমিটির মতে, থাইল্যান্ডের ভিক্ষুরা দ্বিতীয় বারের মত এবং মান্দালয় বিভাগের বিভিন্ন স্থান থেকে স্থানীয় সন্যাসীরা প্রথম বারের মত এই অনুষ্ঠানে যোগদান করবে।
কমিটির সভাপতি ইউ সু লিন বলেন , এই অনুষ্ঠানটি অনন্য ভূমিকায় পালন করা হবে যা আগে এই রকম অনুষ্ঠান মান্দালয়ে হয়নি।
তিনি আরো বলেন, এই মহতী অনুষ্ঠানটি শুধুমাত্র মায়ানমার ও থাইল্যান্ডের মধ্যে সম্পর্ককে শক্তিশালী করবে না, বরং দেশের বৌদ্ধ সংস্কৃতির সংরক্ষণও করবে। যা মান্দালয়ে ঐতিহাসিকভাবে পালন করা হবে।
কমিটির মতে, থাইল্যান্ডের ধাম্মাকায়া ফাউন্ডেশন এই অনুষ্ঠানটি করতে ২ লাখ ৯৩ হাজার ডলার দান করেছে।
এখন আমরা চ্যানমিথর্জি বিমানবন্দর পরিষ্কার করছি ,কারণ এয়ারপোর্টটি তাদুদে ছড়িয়ে নেওয়ার আগ পর্যন্ত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে পরিত্যক্ত অবস্থায় রয়েছে জায়গাটি।
অনুষ্ঠানটি সফলভাবে পালন করতে এবং যানজট নিরসনের জন্য আমাদের প্রধান মন্ত্রী এই স্থানটি বেছে নিয়েছেন বলে ইউ সু লিন জানান।
এর আগে ২০১৫ সালে সেপ্টেম্বর মাসে ১০ হাজার ভিক্ষু দিয়ে থাইল্যান্ড এবং মিয়ানমার মান্দালয়ে এই রকম অনুষ্ঠান করেছিল।
এছাড়াও সংগঠন কমিটি বলেছে যে – এই অনুষ্ঠানটি আমন্ত্রিত সন্ন্যাসীদের থেকে যারা অনুষ্ঠানে যোগ দেবে তাদের প্রত্যেকের জন্য (মিয়ানমারের স্থানীয় মুদ্রা) অন্তত ৩০ হাজার কিয়াত দান দেওয়া হবে।সুত্র: dailycht