বিবর্তন ডেস্ক: পৃথিবীর প্রথম সুগন্ধি এসেছে ব্যাবিলিয়নদের হাত ধরে। খ্রিস্টপূর্ব ১২০০ বছর আগে ব্যাবিলিয়নের নারী রসায়নবিদ তাপ্পুতি সুগন্ধি তৈরিতে সফলতা অর্জন করেন। ভারতীয় সভ্যতায় বৈদিক আয়ুর্বেদিক শাস্ত্রেও সুগন্ধি তৈরির উল্লেখ রয়েছে। বাষ্পীভূতকরণের মাধ্যমে সুগন্ধি শিল্পে বিপ্লব ঘটেছে।
ফুল, লতা, গুল্ম থেকে সংগ্রহ করা নির্যাসকে কাজে লাগিয়ে তৈরি করা হয় সুগন্ধি। তবে এভাবে প্রকৃতি থেকে আহরিত সুগন্ধিগুলোর মধ্যে সবচেয়ে মূল্যবাণ হচ্ছে আগর তেল। এই সুগন্ধির বিশেষ বৈশিষ্ট হলো এটি একটি অ্যালকোহলমুক্ত সুগন্ধি। ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান ও সামাজিক-সাংস্কৃতিক আয়োজনে এ সুগন্ধির আকাশ ছোঁয়া চাহিদা বিশ্বজুড়ে। আগর তেল কিংবা আগর আতর সবই সুগন্ধি হিসাবে ব্যবহূত হয়।
নানাবিধ ওষুধ, পারফিউম, পারফিউম জাতীয় দ্রব্যাদি-সাবান, শ্যাম্পু এসব প্রস্তুতে আগর তেল ব্যবহার করা হয়। সাধারণত বাড়িতে, বিভিন্ন ধর্মীয় ও সামাজিক অনুষ্ঠানে সুগন্ধি ছড়ানোর জন্য আগর-আতর ব্যবহার করা হয়। আগর আতরের পাশাপাশি আগর কাঠের গুঁড়া বা পাউডার ধূপের মতো প্রজ্জ্বলনের মাধ্যমে সুগন্ধি হিসেবে ব্যবহার করা হয়। জাতি বর্ণ নির্বিশেষে হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান এবং মুসলিম ধর্মালম্বী সবাই আগর আতর ও আগর কাঠের গুঁড়া ব্যবহার করে। এই কারণে আগর আতর এখন তরল সোনা হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে।
আগর গাছ রোপণের ৪ বছর পর পুরো গাছে পেরেক ঢুকিয়ে আরো ৩ বছর রেখে দেওয়া হয়। এরপর গাছ কেটে ছোট ছোট টুকরো করে কিছুদিন পানিতে ভিজিয়ে রাখা হয়। সবশেষে বিশেষভাবে নির্মিত চুল্লিতে তাপ দিয়ে সিদ্ধ করতে হয়। সিদ্ধ করা আগর থেকে বিশেষ পদ্ধতিতে মূল্যবান আতর তৈরি করা হয়।
মূল্যবান আগরের ব্যবসা করে দক্ষিণ এশিয়ার অনেকেই নিজের ভাগ্য বদল করেছেন। এদের একজন হংকংয়ের ইউয়েন ওয়াহ (৮৪)। গত সাত দশক ধরে তিনি এই ব্যবসার সাথে যুক্ত রয়েছে। তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের নাম উইঙ লি। হংকংয়ের অদূরে ইয়াউ মে তাউয়েতে এই ব্যবসার গোড়াপত্তন ঘটিয়েছিলেন তিনি। এখন বেইজিং, সাংহাই, হারবিনসহ বড় বড় শহরে রয়েছে উইঙ লির শোরুম। আগর সুগন্ধি সম্পর্কে ইউয়েন ওয়াহ বলেন, মাত্র ১৩ বছর বয়স থেকেই এই ব্যবসার সাথে যুক্ত হয়েছি। এক সময় এই আগর চিকিত্সার কাজে ব্যবহূত হতো। কিন্তু চড়া মূল্যের কারণে এখন সেই জায়গা দখল করেছে আগর সুগন্ধি শিল্প।বিবিসি।
শেয়ার করুন