বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের ঐতিহ্যবাহী মহা পিণ্ডদান উৎসব বান্দরবানে বর্ণাঢ্য আয়োজনে উৎসবমুখর পরিবেশে পালিত হয়েছে।এতে অংশ নেয় বান্দরবানের বিভিন্ন বৌদ্ধ বিহারের শতাধিক বৌদ্ধ ভিক্ষু। এই উৎসবে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা পুণ্য লাভের আশায় বৌদ্ধ ভিক্ষুদের মাঝে ভাতের পিণ্ডসহ নানা সামগ্রী উৎসর্গ করে থাকেন। গতকাল শনিবার বান্দরবানের বিভিন্ন বৌদ্ধ মন্দিরের শতাধিক বৌদ্ধ ভিক্ষু এই পিণ্ডদান উৎসবে অংশ নেন। তিন মাস বর্ষাবাস শেষে বৌদ্ধ মন্দিরগুলোতে কঠিন চীবর দান উৎসবের পর বৌদ্ধ ভিক্ষুদের সম্মানে দায়ক-দায়িকারা এই মহা পিণ্ডদান উৎসবের আয়োজন করেন। আগে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এই উৎসবের আয়োজন হয়ে থাকলেও এখন বাংলাদেশসহ মিয়ানমার ও থাইল্যান্ডে এই উৎসবের প্রচলন রয়েছে। সকালে বান্দরবান শহরের জাদী পাড়া, উজানী পাড়া, মধ্যম পাড়া, রাজবাড়ি এলাকায় বৌদ্ধ ভিক্ষুরা দায়ক-দায়িকাদের কাছ থেকে পিণ্ড গ্রহণ করেন। পুণ্য লাভের আশায় ধর্মাবলম্বীরা ভিক্ষুদের পিণ্ড দানের পাশাপাশি নানা প্রকার মিষ্টান্নও দান করেন। এ ছাড়া বৌদ্ধ ভিক্ষুদের সামনে থাকা বৌদ্ধ মূর্তিকে পূজাও দেয়া হয়। মহা পিণ্ডদানকে ঘিরে বান্দরবান শহরের উজানী পাড়া ও মধ্যম পাড়া এলাকায় উৎসবের আমেজ ছিল। নানা রঙ্গে সাজানো হয় বৌদ্ধ মন্দিরগুলো। এ ছাড়া রাস্তার দুই ধারে নানা রঙের প্যান্ডেল টানানো হয়। পার্বত্য মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর এমপি অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে ভিক্ষুদের দান উৎসর্গ করেন। আষাঢ়ী পূর্ণিমা থেকে আশ্বিনী পূর্ণিমা পর্যন্ত বৌদ্ধ মন্দিরগুলোতে বর্ষাবাস পালন করা হয়। এরপর কঠিন চীবর দান উৎসব এবং সর্বশেষে মহা পিণ্ডদান উৎসবের আয়োজন করা হয়। পিণ্ডদান উৎসব দেখতে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের পাশাপাশি পর্যটক ও দর্শনার্থীরা ভিড় জমান বান্দরবান শহরে। যুগ যুগ ধরে বান্দরবানে এই উৎসব চলে আসছে।