প্রেস বিজ্ঞপ্তি: সকল প্রাণীর মঙ্গলকামনায় নগরের বন্দর এলাকার সিম্যান্স হোস্টেল ন্যাশনাল মেরিনটাইম ইনস্টিটিউট প্যারেড গ্রাউন্ডে ১০ম বারের মত দানোত্তম শুভ কঠিন চীবর দানানুষ্ঠান আয়োজন করা হয় । শত শত মানুষের উপস্থিতিতে কঠিন চীবর দানানুষ্ঠান পরিনত হয় সাম্প্রদায়িক সম্প্রিতির মিলন মেলা। দিন ব্যাপি এ আয়োজন করে হিলচাদিগাং বৌদ্ধ বিহার পরিচালনা কমিটি হিলচাদিগাং বুড্ডিস্ট ওয়েলফেয়ার সোসাইটি। চট্টগ্রামের ইপিজেডসহ বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে রয়েছে হাজার হাজার পাহাড়ি বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী। তারা সিম্যান্স হোস্টেল, নিউমুড়িং, ব্যারিষ্ঠার কলেজ রোড়, মাইলের মাথা,পাহাড়তলী, হাসপাতাল গেইট, পাহাড়তলী সাগরিকা, বন্দরটিলা, দক্ষিন মধ্যম হালিশহর, বন্দর আবাসিক কলোনিসহ আশপাশের এলাকায় অবস্থান করেন। এসব বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের ধর্মীয় কর্মকান্ড পরিচালিত হয় হিল চাদিগাং বৌদ্ধ বিহারকে ঘিরে। গত দশ বছর ধরে জম কালো আয়োজনে এখানে অনুষ্ঠিত হচ্ছে কঠিন চীবর দানানুষ্ঠান।
গত ২৭ অক্টোবর অনুষ্ঠানের শুরুতে এলাকার ও আশে পাশের বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা জড়ো হয় সিম্যান্স হোস্টেল ন্যাশনাল মেরিনটাইম ইনস্টিটিউট প্যারেড গ্রাউন্ড মাঠে। এ সময় অনেকে দল বেধে বাদ্য বাজনাসহ অনুষ্ঠান মঞ্চে চলে আছেন। কঠিন চীবর দান করে বিপুল পুন্যরাশি সঞ্চয়ের আশায় সমবেত হন পাহাড়ি বৌদ্ধরা। বিশেষ ভাবে তৈরি টাকার গাছ অনেকের সঙ্গে ছিল বিভিন্ন সাইজের বুদ্ধ মূর্তি।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ভদন্ত বিজয়ানন্দ মহাথের, অধ্যক্ষ বিশ্বমৈত্রী বৌদ্ধ বিহার। প্রধান অতিথি ছিলেন ক্যাপ্টেন, জনাব আতাউর রহমান, উপাধ্যক্ষ, ন্যাশনাল মেরীটাইম ইন্সষ্টিটিউট, চট্টগ্রাম। প্রধান ধর্মদেশক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শ্রীমৎ ড. জিনবোধি মহাথের, অধ্যাপক, পালি বিভাগ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জনাব সৈয়দ মোঃ আহসানুল ইসলাম, অফিসার ইনর্চাজ, সিইপিজেড থানা, চট্টগ্রাম। সম্মাণিত উদ্বোধক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জনাব হাজী ইকবাল বলেন বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। বিশেষ করে চট্টগ্রামের যে ধর্মীয় সম্প্রীতি রয়েছে তা এক কথায় অসাধারন। বিশেষ অতিথি বিজিয়ন চেয়ারর্পাসন, লায়ন ক্লাব ইনটারন্যাশনাল, লায়ন, এম সরওয়ার খসরু পুলিশ প্রশাসনের দৃষ্টি আর্কষন করে বলেন পাহাড়ি বৌদ্ধরা রাস্তাঘাটে ছিনতাই স্বীকার হচ্ছে, তাই যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহন করেন। অধ্যাপক ড. জিনবোধি মহাথের বলেন, বৌদ্ধ ধর্ম শান্তির ধর্ম। বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য মহামানব বুদ্ধের অহিংসা নীতির কোন বিকল্প নেই। মহামানব গৌতম বুদ্ধ বিশ্বের মানব জাতির তথা প্রাণী জগতে দুঃখ মুক্তির জন্য পৃথিবীতে আর্বিভূত হয়ে নিজে কঠোর তপস্যা ও সাধনা করে দুঃখ থেকে মুক্ত হয়েছেন তেমনি অন্যদেরও মুক্তির পথ দেখিয়েছেন। কাজেই সেই পথে অগ্রসর হয়ে দুঃখমুক্তি সাধন করা উচিত। লায়ন সরওয়র খসরু বলেন, বৌদ্ধ বিহারের অধ্যক্ষ সাধনাজ্যোতি মহাস্থবির। তিনি বলেন ২০০৮ সালে প্রতিষ্ঠিত হিলচাদিগাং বৌদ্ধ বিহার এখনও অস্থায়ীভাবে ভাড়া বাসায় পরিচালিত হচ্ছে। তাই অতিথি মহোদয়ের নিকট বিহারটি একটি জায়গা ব্যবস্থা করে দিয়ে স্থায়ীভাবে প্রতিষ্ঠার ও বিশেষ কয়েকটি জায়গায় মেয়েরা ইপটেজিং, ছিনতাই স্বীকার হন তাই আইন শৃঙ্খলা উন্নতির জন্য দৃষ্টি আর্কষন করেন। ধর্মদেশনা প্রদান করেন জ্ঞান রক্ষিত স্থবির, সুগতলংকার স্থবির, করুণাদ্বীপ ভিক্ষু, প্রজ্ঞা বোধি ভিক্ষু, আনন্দ বোধি ভিক্ষু। স্বাগত বক্তব্য রাখেন উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক সুজন চাকমা। পঞ্চশীল প্রার্থনা করেন অমিষ কান্তি দেওয়ান। দিন ব্যাপী আয়োজনের অন্যান্য কর্মসূচির মধ্যে ছিল কঠিন চীবর দান, অষ্টপরিষ্কার দান, বুদ্ধমূর্তি দান বিশ্ব শান্তি কামনায় ত্রিপিটক পাঠ পঞ্চশীল গ্রহন সংঘদান গণভোজন ও ভিক্ষু সংঘের ধর্মদেশনা।