হিংসা বিদ্বেষ ভুলে ধর্মের অনুশাসনে থেকে সকল মানুষের শান্তি কামনায় পঞ্চশীল ভাবনা থাকতে সকলের প্রতি অন জানিয়েছেন পরিনির্বাণ প্রাপ্ত পরম পূজ্য বনভন্তের শীর্ষ রাঙামাটি রাজবন বিহারে আবাসিক প্রধান প্রজ্ঞালংকার মহাথের। তিনি বলেন, যারা প্রতিনিয়ত পঞ্চশীল গ্রহণ করে তারা কখনোই অন্যায় কাজ করতে পারে না। তাদের মনে সব সময় শান্তি বিরাজমান। তিনি বনভন্তের বাণীগুলো শ্রবণ করে দিনের প্রতিটি কাজ করার আহবান জানান। শুক্রবার রাঙামাটির লংগদু উপজেলা তিনটিলা বন বিহারে ১৯তম দানোত্তম কঠিন চীবর দানানুষ্ঠানে ধর্মীয় দেশনায় তিনি একথা বলেন।
অনুষ্ঠানে কঠিন চীবর উৎসর্গ শেষে ধর্মীয় আলোচনা সভায় রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বৃষ কেতু চাকমা বলেন, সংঘাত, হানাহানি বন্ধ করে পঞ্চশীল ভাবনার মাধ্যমে সকলকে দেশের উন্নয়নে কাজ করার আহবান জানান। তিনি বলেন, সংঘাত আমাদের কারো মঙ্গল করে না। সংঘাত মানুষে মানুষে বিভেদ সৃষ্টি করে। তিনি বলেন, বর্তমান সরকার পার্বত্য অঞ্চলের সকল মানুষের ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে কাজ করে যাচ্ছে। পার্বত্য অঞ্চলের আনাচে কানাচে বৌদ্ধ ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন ধর্মের ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর উন্নয়ন করছে। যাতে করে স্ব স্ব ধর্ম তারা নিজ নিজ ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে পালন করতে পারে।
এর আগে ২৪ ঘন্টায় চরকা থেকে সুতা কেটে, রং করে প্রায় শতাধিক নারী এই চীবর তৈরি করেন। ২৪ ঘন্টায় তৈরিকৃত এই চীবর ভান্তেদের উদ্দেশ্যে দান করেন চট্টগ্রাম কাস্টম সুপারিন্টেন্ড কল্যাণ মিত্র চাকমা। এ সময় রাঙামাটি জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান চীবর দান করেন। ধর্মীয় অনুষ্ঠানে পঞ্চশীল প্রার্থনা, বুদ্ধমুর্তি দান, অষ্ট পরিষ্কার দান, সংঘদান, ৮৪ হাজার প্রদীপ দানসহ নানাবিধ দান ও উৎসর্গ করা হয়।
পরে দায়ক দায়িকাদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য দেন রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের সদস্য মোঃ জানে আলম, চট্টগ্রাম কাস্টম সুপারিন্টেন্ড কল্যাণ মিত্র চাকমা। স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিহার পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক চন্দ্র সুরত চাকমা। এ সময় রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের সদস্য সবির কুমার চাকমা, আওয়ামীলীগ নেতা বাবু দাশসহ লংগদু উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদে চেয়ারম্যান ও দায়ক দায়িকারা উপস্থিত ছিলেন।
পরে ধর্মীয় দেশনা দেন রাঙামাটি রাজ বন বিহার আবাসিক প্রধান ও শীর্ষ সংঘের প্রধান প্রজ্ঞালংকার মহাথেরো. ফুরোমন আন্তর্জাতিক ভাবনা কেন্দ্রের অধ্যক্ষ শ্রদ্ধেয় ভিগু ভান্তে, তিনটিলা বন বিহারে অধ্যক্ষ প্রজ্ঞালংকার ভান্তে, শ্রদ্ধেয় সত্য প্রেম ভান্তে।
এর আগে সকালে তিনটিলা বৌদ্ধ বিহারে বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। এসময় বৌদ্ধ ভিক্ষুরা ধর্ম দেশনা দেন।