ছবি (ফাইল)
এই বছর বৌদ্ধদের প্রতিনিধিত্বশীল সংগঠন গুলো ফানুস উত্তোলন থেকে বিরত থাকার ঘোষনা দিয়েছেন। এটা নিয়ে অনেক আলোচনা-সমালোচনাও হয়েছে। কিন্তু বিষয়টাকে এভাবে দেখা হলে বোধহয় ভাল হত- ফানুস উত্তোলন ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে পালিত হয়। কিন্তু কালে এটা উৎসবে পরিণত হয়েছে। এসেছে সার্বজনীনতা। উৎসব মানেই তো আনন্দ। আমাদের পাশেই এতগুলো নিপীড়িত মানুষ (রোহিঙ্গা) মানবেতর জীবন যাপন করছেন। মিয়ানমারের রোহিঙ্গা নিপীড়নের ঘটনায় এদেশের মুসলমানদের মত বৌদ্ধরাও ব্যতিত। ঢাকঢোল পিটিয়ে এই আনন্দ উদযাপন করতে অন্যান্য প্রতিবেশীদের মত নিজেদেরও তো খারাপ লাগবে। তাই এবারে আড়ম্বরতা তথা উৎসবটা বাদ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু বিহার ভিত্তিক ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান তো ঠিকই হবে।
এত কিছুর পর শতাব্দী প্রাচীন বাংলাদেশ বৌদ্ধ সমিতি পরিচালিত বিহারের সামনে দারুন উতসাহে ফানুস উড়িয়েছে। অথচ ফানুস উত্তোলন না করার ঘোষনাকে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় সাধুবাদ জানিয়েছে সেখানে দেশের প্রতিনিধিত্ব সংগঠন হিসেবে থেকে শতাব্দী প্রাচীন বাংলাদেশ বৌদ্ধ সমিতি পরিচালিত বিহারের সামনে থেকে এটা আশা করা যায়না বলে অভিজ্ঞ মহল মনে করে।
এ প্রসংগে বাংলাদেশ বৌদ্ধ সমিতির চেয়ারম্যান অজিত রঞ্জন বড়ুয়া সংবাদ মাধ্যম কে জানান, আষাঢ়ী থেকে আশ্বিনী পূর্ণিমা পর্যন্ত বৌদ্ধ ভিক্ষুরা বর্ষাবাস পালন করেন। মাসে চারদিন আমরা উপসথ গ্রহণ করি। অষ্টশীল, পঞ্চশীল গ্রহণ করি। প্রবারণা পূর্ণিমা মানে হলো বর্ষাবাস সম্পন্ন। কাল থেকে পর্যায়ক্রমে প্রতিটি বৌদ্ধমন্দিরে, যেখানে ভিক্ষুরা বর্ষাবাসে অংশ নিয়েছেন সেখানে অনুষ্ঠিত হবে পবিত্র কঠিন চীবর দান উৎসব।
এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, এবার আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি ফানুস না উড়িয়ে সেই টাকা রোহিঙ্গাদের ত্রাণ হিসেবে দিয়ে দেব। তাই অন্যান্য বছরের মতো বর্ণাঢ্য আয়োজনে ফানুস উড়ানো হচ্ছে না।“ফানুস না উড়ানোর ঘোষণা দেওয়া হলেও তরুণরা কেউ কেউ সেটা মানতে চায়নি। কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটতে পারে এমন আশঙ্কায় আমরাও না উড়াতে বলেছিলাম। তবে কেউ কেউ উড়িয়েছে।”
এ প্রসঙ্গে নন্দনকানন বৌদ্ধ মন্দিরের সামনে প্রবারণা উদযাপন পরিষদের সদস্য ডা. দীপক কান্তি বড়ুয়া বলেন, চট্টগ্রামের অনেক রাজনৈতিক নেতা ফানুস উড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন। তাদের আহ্বানে সাড়া দিয়ে আমরা ফানুস উড়িয়েছি।
বাংলাদেশ বৌদ্ধ সমিতি যুব সাধারণ সম্পাদক এ প্রতিবেদকে জানান, বৌদ্ধ সমিতি কোন ফানুুস উড়াাইনি। কেউ যদি রাস্তায় উড়াই সে দায়ভার আমাদের নয়। আমরা কি ওদের সাথে মারপিট করব নাকি?