1. pragrasree.sraman@gmail.com : ভিকখু প্রজ্ঞাশ্রী : ভিকখু প্রজ্ঞাশ্রী
  2. avijitcse12@gmail.com : নিজস্ব প্রতিবেদক :
বৃহস্পতিবার, ৩০ নভেম্বর ২০২৩, ১০:৩৪ অপরাহ্ন

ভয়াবহ হামলার ক্ষত আজও বয়ে বেড়াচ্ছেন বৌদ্ধরা

প্রতিবেদক
  • সময় বৃহস্পতিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৭
  • ৯৩৩ পঠিত

রামু (কক্সবাজার): শুক্রবার কক্সবাজারের রামুর বৌদ্ধপল্লীতে ভয়াবহ হামলার ঘটনার পাঁচ বছর পূর্তি হচ্ছে। ২০১২ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর রাতে র্দুবৃত্তরা একসঙ্গে হামলা চালায় রামুর ঐতিহ্যবাহী ১২টি বৌদ্ধ বিহার ও বৌদ্ধপল্লীতে। হামলার পর থেকে বুকে ক্ষত এখনো বয়ে বেড়াচ্ছেন  বৌদ্ধরা। ওই ঘটনায় দায়ের করা ১৯টি মামলার কেবল একটি আপসসূত্রে বিচার কাজ শেষ হয়েছে। মামলাটির চার্জশিটভুক্ত ৩৮ জন আসামির সবাই খালাস পেয়েছেন। বাকি ১৮টি মামলার বিচার কাজ অব্যাহত রয়েছে। বিচারাধীন এসব মামলায় ৯১০ আসামির মধ্যে অর্ধশতাধিক আসামি পলাতক রয়েছেন। বাকিরা জামিনে রয়েছেন বলে জানা যায়।

২০১২ সালের ২৯ ও ৩০ সেপ্টেম্বর বৌদ্ধপল্লীতে হামলার ঘটনায় কক্সবাজারের রামু, উখিয়া, টেকনাফ এবং কক্সবাজার সদর থানায় ১৯টি মামলা দায়ের করা হয়। এসব মামলায় ৩৭৭ জনের নামসহ অজ্ঞাতনামা ১৫ হাজার জনকে আসামি করা হয়। পরে তদন্ত সাপেক্ষে সবগুলো মামলার অভিযোগপত্র দেওয়া হয়।

এসব মামলাগুলো যথাক্রমে রামু থানার ৮টি, উখিয়া থানার ৭টি, টেকনাফ থানার ২টি এবং কক্সবাজার সদর থানার ২টি মামলা। অভিযোগপত্রে আসামির সংখ্যা হচ্ছে ৯৪৮ জন।

আদালত সুত্রে জানা গেছে, রামু থানার ৭টি মামলার মধ্যে সাতটিই বিচারের জন্য প্রস্তুত করে বিচার আদালতে পাঠানো হয়েছে। এর মধ্যে একটি মামলার বিচার কাজ শেষ হয়েছে তাও আপস-মীমাংসার মাধ্যমে। মামলার (জিআর-৩১৩/১২) বাদী রামুর রামকোর্ট বৌদ্ধপল্লীর সুধাংশু বড়ুয়া জানান, আমার ঘরবাড়ি লুটপাট এবং ব্যাপক ভাঙচুর করে প্রায় পাঁচ লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি করা হয়। আমি এ ঘটনার ব্যাপারে রামু থানায় মামলা ২৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করি। পুলিশ পরে আমাকে না জানিয়ে আরো ১০ জন আসামি বাড়িয়ে ৩৮ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র প্রদান করে। পরে আসামিদের চাপের মুখে আমি তাদের সঙ্গে আপস-মীমাংসা করতে বাধ্য হই। তারা সবাই খালাস পেয়েছেন।

তিনি বলেন, আমি এত বড় ক্ষতির শিকার হলেও আমাকে কোনো সাহায্যের আওতায় আনা হয়নি। এ কারণে আমি সরকারি-বেসরকারি কোনো সাহায্যই আজ পর্যন্ত পাইনি।

দেশের প্রবীণ বৌদ্ধ ধর্মীয় নেতা রামু কেন্দ্রীয় সীমা বিহারের অধ্যক্ষ এবং একুশে পদকপ্রাপ্ত ব্যক্তিত্ব শ্রীমত সত্যপ্রিয় মহাথের বলেন, বর্তমান সরকার ২১ কোটি টাকা ব্যয়ে সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে মাত্র ১০ মাসেই পুড়ে যাওয়া বৌদ্ধমন্দির ও বিহারের নির্মাণ কাজ শেষ করেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসব বিহার আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করে আমাদের মনের কষ্ট কিছুটা হলেও ঘুচিয়েছেন।

রামু কেন্দ্রীয় সীমা বৌদ্ধ বিহারের সহকারী অধ্যক্ষ প্রজ্ঞানন্দ ভিক্ষু জানান, সরকারি উদ্যোগে দেশবাসীর সহযোগিতায় পুণরায় ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোতে বিহার নির্মাণ করা হয়েছে। এটা নিঃসন্দেহে সাধুবাদ পাওয়ার যোগ্য। তিনি বলেন, এ কাজটি করা না হলে সম্প্রীতি আর আস্থা দুটোতেই অনেক তফাত থেকে যেতো।

কক্সবাজার পুলিশ সুপার ড. কে এম ইকবাল হোসেন জানান, বৌদ্ধমন্দির ও বিহারে হামলার ঘটনার তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে প্রধান অভিযুক্ত হিসেবে উত্তম বডুয়ার নাম রয়েছে। সেদিনের ঘটনার ব্যাপারে উত্তম বড়ুয়াসহ অন্যদের বিরুদ্ধে এ-সংক্রান্ত মোট ১৯টি মামলা দায়ের করা হয়েছিল। সব মামলার চার্জশিট দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে একটি মামলার নিষ্পত্তি হয়েছে। এখন সব মামলা আদালতে বিচারাধীন রয়েছে।

প্রসঙ্গত, রামুতে উত্তম বড়ুয়া নামে এক যুবকের বিরুদ্ধে ফেসবুকে পবিত্র কোরআন শরিফ অবমাননার অভিযোগ এনে ২০১২ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর রাতে উগ্র ধর্মান্ধ গোষ্ঠী রামুর ১২টি প্রাচীন বৌদ্ধ বিহার ও ৩২টি বসতঘরে অগ্নিসংযোগ করে। এ সময় আরও ৬টি বৌদ্ধ বিহার ও শতাধিক বসতঘরে ভাংচুর ও লুটপাট করা হয়। পরদিন উখিয়া-টেকনাফে আরও কয়েকটি বৌদ্ধ বিহার ও বসতিতে একই ঘটনা ঘটে।

কক্সবাজারের বৌদ্ধ মন্দিরে ভয়াল হামলার বর্ষপূর্তির দিনে অন্যান্য বছরের ন্যায় এবছরও রামুতে দিনব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছে। বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের নেয়া এসব কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে বুদ্ধ পূজা, মহাসংঘদান, শোভাযাত্রা, বিশেষ শান্তি শোভাযাত্রা ও স্মরণ সভা। তবে সীমিত পরিসরে রামু কেন্দ্রীয় সীমা বিহারে এসব কর্মসূচি পালন করা হবে বলে জানান আয়োজক কমিটির কর্মকর্তা নিতীশ বড়ুয়া।

Facebook Comments Box

শেয়ার দিন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো
© All rights reserved © 2019 bibartanonline.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com
themesbazarbibart251
error: Content is protected !!