এস প্রিয়রত্ন ভিক্ষু;
-করুনামন তথাগত ভগবান বুদ্ধ মাতা-পিতার অনন্ত গুনের কথা ব্যক্ত করেন,বুদ্ধ বলেন পৃথিবীতে সবার অগ্রে মা বাবা,কোন সময় কোন কালে সন্তানেরা সুদ করতে পারে না,বুদ্ধ বলেন কোন সন্তান যদি চিন্তা করে আমার মা বাবাকে সরা পৃথিবীবি কাদে করে পরি ভ্রমন করাব,কিংবা নিজের শরিরের চামড়া কেটে তাদের জন্য পাদুকা তৈরি করে দিব অথবা সব সময় মাথায় করে রাখব,এমন কি বুদ্ধ ভিক্ষুদের কে ও বলেছেন মাতা পিতা যদি অক্ষম হয়ে যায় তাদের যদি তোমারা সেবা কর এতে তোমার অকুশল হবে না। বু্দ্ধ আরো বলেছেন সব কিছু যদি সম্পাদন করলেও মাতা পিতার অনন্ত গুন কোন সময় সুদ করতে পারে না।
-তাই তথাগত ভগবান বুদ্ধ অঙ্গুত্তর নিকায়ে পালিতে বলেছেন –
ব্রহ্মাতি মাতা -পিতারো পূব্বাচারিয়াতি বুচ্চরে
অহুনেয়্যো চ পুত্তানং পজায় অনুকম্পকা।(সব্রক্ষক সুত্তং)
-মাতা পিতা ব্রম্মা থেকে ও শ্রেষ্ট এবং তাঁদেরকে পূর্বাচার্যরুপে বলা হয়। কারন জীবনের অস্তিত্ব মাতা-পিতার সাহায্যেই হয়ে থাকে। মাতা পিতার থেকেই সন্তান সন্ততিরা প্রাথমিক জ্ঞান লাভ করে থাকে। এজন্য সর্বাগ্রে মাতা পিতার প্রতি ছেলে মেয়েদের পুজা – আরাধনা সমর্পন করা উচিত । বৌদ্ধ ধর্মে মহাব্রাহ্মা হচ্ছেন একজন উচ্ছস্তরের দেবতা, যিনি ব্রম্মলোকের অধীশ্বর। তিনি সর্বদা জীব -জগতের প্রতি মৈত্রী – করুণা- মুদিতা -উপেক্ষা ভাব পোষণ করে অবস্থান বা বিহার করেন। তাই বৌদ্ধধর্মে মৈত্রী করুণা- মুদিতি- উপেক্ষা এ চার ভাবনাকে “ব্রক্ষাবিহার ভাবনা” বলা হয়। যেদিন থেকে মাতার গর্ভ লক্ষণ প্রকাশ পায়, যেদিন থেকে মাতা পিতা অহোরাত্র পুত্রকন্যার প্রতি অপার মৈত্রী -করুণা- মুদিতা -উপেক্ষার ভাব পোষন করে বলে মাতা পিতাকে ব্রম্মজ্ঞানে পুজা -অর্চনা করা, করেছেন। মাতা পিতার মৈত্রী করুনা সত্যিই অচিন্তনীয় ও অপ্রমেয়। তাঁরা নিজেদের প্রানের বিনিময়ে সন্তান সন্ততির প্রান ভিক্ষা করে থাকেন। মাতা পিতা ব্যতীত অন্য কারো দ্বারা এ কাজ এ পৃথিবীতে সম্ভব নয়।
বিশেষ দৃস্টব্য :- মাতা পিতা হচ্ছে করুনার আধার, তাই সকল ধর্মে মাতা,পিতাকে অগ্রে স্থান দিয়েছে,মাতা পিতাকে বিভিন্ন ভাবে আমরা অগ্রদিয়ে ডাকি-ধরনী, বেহেস্ত, স্বর্গ,ইশ্বর,মহাব্রহ্মা হিসাবে আমরা জ্ঞাত করি।
জগতের সকল প্রানী সুখী হোক
দুঃখ থেকে মুক্তি লাভ হোক
লেখক – ভদন্ত এস প্রিয়রত্ন ভিক্ষু।
উপাধ্যক্ষ ইপিজেড সার্বজনীন বৌদ্ধ বিহার।
ইপিজেড, চট্রগ্রাম