চট্টগ্রাম: ‘ধর্ম যার যার রাষ্ট্র সবার । সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এ স্বাধীন বাংলাদেশে আমি চাই প্রবারণা পূর্ণিমায় বৌদ্ধদের ফানুস উড়ুক ।’
বুধবার (২৭ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতির মাধ্যমে চট্টগ্রাম-৮ (চান্দগাঁও-বোয়ালখালী) আসনের সংসদ সদস্য মঈনউদ্দিন খান বাদল এসব কথা বলেন ।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের বৌদ্ধ সম্প্রদায় কেন ফানুস উড়াবে না ? এই প্রশ্ন আমাকে বারবার নাড়া দিচ্ছে । বৈশ্বিক রাজনৈতিক কারণে বাংলাদেশের কোনো ধর্মীয় অনুষ্ঠান থমকে যেতে পারে না । বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সব ধর্মের মানুষের মধ্যে নিরাপদ ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি গড়ে তোলার জন্য নিরলসভাবে কাজ করছেন । এমতাবস্থায় বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা ফানুস উত্তোলন না করার সিদ্ধান্ত একদিকে বাংলাদেশের জনসাধারণের নিরাপত্তাকে যেমনি প্রশ্নবিদ্ধ করছে, ঠিক তেমনি বাংলাদেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিকেও প্রশ্নবিদ্ধ করছে ।’
তিনি আরও জানান, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যেকোনো পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের শান্তি ও সম্প্রীতি বজায় রাখার ব্যাপারে চুল পরিমাণ ছাড় দেননি । তাই বাংলাদেশের বৌদ্ধদের বলবো এই ফানুস উত্তোলন শুধু উৎসব নয় এটি মহামানব গৌতম বুদ্ধের কিছু স্মৃতি এবং বিশেষ দিনকে স্মরণ করিয়ে দেয় । পাশাপাশি বৌদ্ধ সভ্যতাকে ধারণ করে রাখার একটি ধর্মীয় রীতি । যেটি বর্তমানে ধর্মীয় গণ্ডি পেরিয়ে উৎসবে পরিণত হয়েছে । সিদ্ধার্থ গৌতম সংসার ত্যাগ করে অনোমা নদীর তীরে উপস্থিত হয়ে নিজের কোমরে সংরক্ষিত রাজকীয় তলোয়ার দিয়ে নিজহস্তে স্বীয় মাথার কেশ রাশি (চুল) কর্তন করে সত্যক্রিয়া করার লক্ষ্যে বলেছিলেন, আমার হাতের মুঠোতে কর্তন করা যেই কেশ রাশি রয়েছে তা আমি উপরের দিকে ছুড়ে দিচ্ছি, সত্যিই যদি আমার বুদ্ধত্ব জ্ঞান লাভের হেতু থাকে, তাহলে উক্ত কেশ রাশি নিচের দিকে পতিত না হয়ে উপরের দিকে অর্থাৎ আকাশের দিকে গমন করবে । যা সত্যিই উক্ত কেশ রাশি আর নিচের দিকে পতিত না হয়ে আকাশের দিকেই উড়ে যায় । তখনি তথাগত গৌতম বুদ্ধ আত্মবিশ্বাসী হয়েছিলেন আমি ভবিষ্যতে বুদ্ধত্ব জ্ঞান লাভ করব । পরবর্তীতে নানান ঘটনা পরিক্রমায় সিদ্ধার্থ গৌতম বুদ্ধত্ব জ্ঞান লাভ করেছিলেন ।
বুদ্ধের স্মৃতি বিজড়িত প্রবারণা পূর্ণিমার তাৎপর্যা ব্যাখ্যা করে সংসদ সদস্য মঈন উদ্দিন খান বাদল আরও বলেন, এ স্বাধীন বাংলাদেশে বৌদ্ধ সভ্যতার নির্দশন বহমান থাকবে । এরই প্রেক্ষিতে বাংলাদেশে এই বার্তা দিতে চাই মুসলিম, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান সবাই হাতে হাত রেখে আমরা যেমন বাংলাদেশ স্বাধীন করেছি । তেমনি সবাই হাতে হাত রেখে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে । তেমনি দেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিকে বেগবান করতে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা তাদের ধর্মীয় নিয়ম নীতি অনুসারে প্রবারণা পূর্ণিমায় ফানুস উড়াবে । সরকারের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী যেকোনো পরিস্থিতিতে সর্বাত্মকভাবে বৌদ্ধদের পাশে থাকবে বলে আমি আশাবাদী ।