1. pragrasree.sraman@gmail.com : ভিকখু প্রজ্ঞাশ্রী : ভিকখু প্রজ্ঞাশ্রী
  2. avijitcse12@gmail.com : নিজস্ব প্রতিবেদক :
মঙ্গলবার, ০৩ অক্টোবর ২০২৩, ১০:২৪ অপরাহ্ন

প্রতিপত্তি পূজা বলতে বুদ্ধ কি বলেছেন?

প্রতিবেদক
  • সময় মঙ্গলবার, ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৭
  • ১৩১৯ পঠিত

ইলা মুৎসুদ্দী:  কোন পুণ্যার্থী সুখকামী ব্যক্তি যদি বুদ্ধ, ধর্ম ও সংঘের শরণাগত হয়ে দায়িত্ব কর্তব্য নামক ব্রত শীল প্রতিপালন করেন; শমথ ও বিদর্শন কর্মস্থান ভাবনায় নিজেকে সমর্পিত করেন, তার সেই ত্যাগ-তিতিক্ষা দ্বারা অর্জিত বুদ্ধের শিক্ষা-উপদেশ এবং ধর্ম-দর্শন পৃথিবীতে দীর্ঘস্থায়ি হয় শুধু নহে, নিজেও জীবন দুঃখের চির অবসানের দ্বারা পরম সুখ-পরমা শান্তি নির্বাণের অধিকারী হয়ে থাকেন। এভাবে বুদ্ধ তথাগতের ধর্ম বিনয় সুরক্ষার দায়িত্ব পালনকে বলা হয় ‘প্রতিপত্তি পূজা’ বা সর্বোত্তম, সর্বশ্রেষ্ঠ পূজা।
মহাপরিনির্বাণ শয্যায় শায়িত বুদ্ধকে স্বর্গের দেব-ব্রহ্মারা যখন দিব্যপুষ্প, দিব্য সুগন্ধি আর দিব্য বাদ্য সহকারে পূজা করছিলেন তখন সেবক আনন্দকে বুদ্ধ বলেছিলেন –
“হে আনন্দ ! এভাবে পূজা, সৎকার ও সম্মান গৌরব দ্বারা তথাগতের যথার্থ পূজা হয় না। হে আনন্দ ! যে ভিক্ষু বা ভিক্ষুনী, উপাসক বা উপাসিকা, ধর্মানুধর্ম প্রতিপন্ন, সামীচি প্রতিপন্ন হয়ে ধর্মানুযায়ী জীবন গঠনকারী হয়, সেজনই তথাগতকে প্রকৃত সৎকার করে, গৌরব করে, সম্মান করে এবং পরম পূজায় পূজা করে। হে আনন্দ! তদ্বেতু তোমাদের শিক্ষা করা উচিত যে, আমরা ধর্মানুধর্ম প্রতিপন্ন, সামীচি প্রতিপন্ন হয়েই জীবন যাপন করবো।”
ক্ষুদ্র-মহৎ যাবতীয় শীল সংযমতা সাধনে নিরন্তর উৎসাহী এবং শ্রদ্ধা গৌরবশীল থাকা, সাধু সজ্জন বয়োজ্যেষ্ঠ গুণ জ্যেষ্ঠ, গুরু উপাধ্যায় ও মাতা-পিতাদির সেবা-যতœ, সম্মান-সৎকার করা, দরিদ্র অসহায়দের দান সহায়তাদি প্রদান করা, ইত্যাদি কুশল কর্মীকে ধর্মানুধর্ম প্রতিপন্ন বলা হয়। আত্ম হিতকামী মানবের পক্ষে এ সকলই সম্পাদন উচিত বলে সমীচি প্রতিপন্ন বলা হয়।
এ প্রসঙ্গে বুদ্ধ বলেছেন, ভিক্ষু, পরিষদ, ভিক্ষুনী পরিষদ, উপাসক পরিষদ, উপাসিকা পরিষদের মধ্যে প্রতিপত্তি পূজা যতদিন বিদ্যমান থাকবে, ততদিন বুদ্ধ শাসন নভো মণ্ডলে পূর্ণ চন্দ্রের মতো দ্যেদীপ্যমান থাকবে।
রাজগৃহের অরণ্যে আত্ম নিবেদিত হয়ে তদগত চিত্তে ধ্যান করে মহাকত্যায়ন স্থবির অরহত্ব লাভ করলেন। সেক্ষণে তাঁর চিত্তে ভাবনা জাগলো; “ আজ উপোসথ দিবস। আমি কি সেই উপোসথে যোগদানের এখন কোন প্রয়োজন আছে? এখন তো আমার যাবতীয় কর্ত্তব্য সমাপ্ত হয়েছে। এখন আমি শুদ্ধ, বিশুদ্ধ, বিমুক্ত; আমার কি আপত্তি দেশনাদির কোন প্রয়োজন আছে?
ভগবান বহু দূর হতে মহাকত্যায়নের এই চিত্ত বিতর্ক জ্ঞাত হলেন। তৎ মুহুর্তে তিনি তথায় উপস্থিত হয়ে বল্লেন “হে মুক্তপুরুষ ! হে আমার পুত্র ! তোমাদের ন্যায় মহাভিক্ষুদের পক্ষে এমন চিন্তা অনুচিত। সাধারণ ভিক্ষুদের কাছে তোমরাই তো আদর্শ স্থানীয়। সেই তোমরাই যদি তথাগত নির্দেশিত ধর্ম-বিনয়ের প্রতি-গারবতা প্রদর্শন না করো অন্যেরা তাতে অনুপ্রাণিত হবে কি করে? হে ভিক্ষু ! তুমি উপোসথে গমণ করো, উপোসথ কর্ম সম্পাদন করো।”
বুদ্ধ তথাগতের এই শিক্ষা এই উপদেশে অনুপ্রাণিত হয়ে আয়ুস্মান অরহত মহাকত্যায়ন সঙ্ঘ উপোসথ কর্মে যোগদান করলেন, উপোসথ কর্ম সম্পাদন করলেন। মহাভিক্ষু কত্যায়নের দ্বারা এভাবে দুই প্রকারেই বুদ্ধ তথাগতকে শ্রেষ্ঠ প্রতিপত্তি পূজা প্রদান করা হলো।

Facebook Comments Box

শেয়ার দিন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো
© All rights reserved © 2019 bibartanonline.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com
themesbazarbibart251
error: Content is protected !!