1. pragrasree.sraman@gmail.com : ভিকখু প্রজ্ঞাশ্রী : ভিকখু প্রজ্ঞাশ্রী
  2. avijitcse12@gmail.com : নিজস্ব প্রতিবেদক :
  3. wp-configuser@config.com : James Rollner : James Rollner
মঙ্গলবার, ১৫ অক্টোবর ২০২৪, ০৯:১৯ অপরাহ্ন

হিন্দু শরণার্থীদের অভিযোগ ‘রোহিঙ্গা জঙ্গিদের’ বিরুদ্ধে

প্রতিবেদক
  • সময় রবিবার, ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৭
  • ৬২৮ পঠিত

সুলাইমান নিলয়,

রাখাইন রাজ্যে হত্যা, লুটপাট, বাড়ি পোড়ানোর জন্য যখন রোহিঙ্গারা দুষছে করছে মিয়ানরমারের তখন পালিয়ে আসা হিন্দু শরণার্থীরা তাদের উপর হামলার জন্য দায়ী করছে ‘রোহিঙ্গা ’।

রাখাইনে সাম্প্রতিক সহিংসতার পালিয়ে আসা ৪ লাখ শরণার্থীদের মধ্যে শ’ পাঁচেক হিন্দু রয়েছেন, যারা বৌদ্ধপ্রধান মিয়ানমারের বাংলাদেশ লাগোয়া রাজ্যটির বাসিন্দা।

কক্সবাজারের উখিয়ায় আশ্রয় নেওয়া এই শরণার্থীদের মধ্যে একজন হিন্দু শনিবার হত্যাকাণ্ডের শিকার হন। তাকে মুসলিম রোহিঙ্গারা খুন করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

তার আগে ওই শরণার্থী শিবির এলাকা ঘুরে কয়েকজন হিন্দু শরণার্থীর সঙ্গে কথা বললে তারা বলেন, রাখাইনে সহিংসতার মধ্যে তাদের উপর হামলা চালিয়েছিল ‘রোহিঙ্গা জঙ্গিরা’।

গত ২৫ অগাস্ট রাখাইনে সেনা ও পুলিশ ফাঁড়িতে ‘আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি (এআরএসএ)’র হামলার পর শুরু হয় সেনা অভিযান। তারপর শরণার্থীদের ঢল নামে বাংলাদেশ সীমান্তে।

ওই অভিযানে রোহিঙ্গাদের নির্বিচারে হত্যা, ধর্ষণ ও বাড়ি পোড়ানো হয় বলে পালিয়ে আসা শরণার্থীরা জানান। ওই শরণার্থীর মিছিলে যোগ দেন সহিংসতায় ঘর হারানো হিন্দুরা।

হিন্দু সম্প্রদায়ের ব্যক্তিদের কাছে তাদের উপর হামলাকারীর পরিচয় জানতে চাইলে তারা সবাই ‘কালা পার্টি’র কথা বলেন। তাদের অন্তত ১০ জন বলেন, হামলকারীরা বার্মিজ, রাখাইন ভাষার পাশাপাশি রোহিঙ্গা ভাষায়ও কথা বলছিল।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন বলেন, “বার্মিজরা সাধারণত রোহিঙ্গা ভাষা জানে না। কালো কাপড়ে মুখ বাঁধা থাকলেও তাদেরকে দেখে রোহিঙ্গাই মনে হয়েছে।”

হিন্দুদের মধ্যে এক তরুণকে পাওয়া গেল, যিনি কোররবানির ঈদের আগে জীবিকার প্রয়োজনে বাংলাদেশে এসেছিলেন। সংঘাতের খবর পাওয়ার পর তার আর ফেরা হয়নি, বাংলাদেশে বসেই তিনি মা-বোন আর ভাতিজার মৃত্যুর খবর পান।

পালিয়ে আসা নিজ সম্প্রদায়ের অন্যদের দেওয়া তথ্য তুলে ধরে এই তরুণ সরাসরিই বলেন, হিন্দুদের উপর হামলা চালিয়েছিল ‘রোহিঙ্গা জঙ্গিরা’।

“ওরা পোশাক পরেছে কালা, চোখ দুইটা দেখা যাচ্ছিল। একটা অস্ত্র, একটা বল্টু-এগুলো নিয়ে মারধর করেছে। কাডি ফেলছে।”

আক্রমণকারীরা রোহিঙ্গা এটা কীভাবে বোঝা গেল- এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “ওনারা (প্রতিবেশী) বলছে, বাড়িতে কে কে হামলা দিছিল। ওনারা বলেছে, জঙ্গিরা আছিল, রোহিঙ্গারা আছিল।”

মংডুর সাববাজারে যে এলাকায় এই তরুণের বাড়ি, সেখানে রোহিঙ্গারাই সংখ্যাগরিষ্ঠ ।

দেশে ফিরতে ভীত এই হিন্দু তরুণ বলেন, “আমার বাবা-মাকে কেটে ফেলছে, আমার ভয় লাগছে না? এত লোক পালিয়ে এসেছে এখানে, আমি একলা কীভাবে যাব?”

রোহিঙ্গারা তো চলে এসেছে- বলা হলে তিনি বলেন, “সবাই চলে আসছে, না কি সেখানে (কেউ কেউ) থাকছে সেটা বুঝতে পারছি না।”

মিয়ানমারে সহিংতার মুখে পালিয়ে আসা হিন্দু শরণার্থীদের উখিয়ার কুতুপালং রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরের কাছে হরি মন্দির ও লোকনাথ মন্দিরের পাশে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে।
মিয়ানমারে সহিংতার মুখে পালিয়ে আসা হিন্দু শরণার্থীদের উখিয়ার কুতুপালং রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরের কাছে হরি মন্দির ও লোকনাথ মন্দিরের পাশে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে।

হিন্দু শরণার্থী শিবিরে থাকা রাখাইনের চিকনছড়ির এলাকার এক প্রৌঢ় বলেন, “সেখানে (রাখাইনে) জঙ্গি পার্টি একটা ঢুকছে। সরকারের সাথে রোহিঙ্গা বলার দাবি আদায় করতে সন্ত্রাস ঢুকছে। এই সন্ত্রাসরাই আমাদেরকে নির্যাতন করতে আছে।”

তিনি বলেন, “আমি বলেছিলাম, আমরা হচ্ছি অল্প সংখ্যক। আমরা হিন্দু। (নিজেদেরকে) রোহিঙ্গা বলতে পারব না।”

হামলার বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন, “পাড়ার ৫০-৬০ জন মানুষকে সন্ত্রাসী-জঙ্গি পার্টিরা ৬-৭ দিন বন্দি করে রাখছে। পানিও খেতে পারব না। সাত দিন পর জঙ্গ শুরু হয়েছে, লড়াই বেঁধেছে, তখন আমরা রাস্তা পেয়েছি (পালানোর)।

“সামনে দিয়ে একটা খাল আছে, সেই খালে ঝাঁপ দিয়ে, নদীর মাঝে ঝাঁপ দিয়ে বনে ঢুকেছি। পাহাড়ে উঠে দেখি, আমাদের বাসা সব জ্বালিয়ে দিয়েছে।”

এর আগে ১৯৯১ সালে শরণার্থী হয়ে বাংলাদেশে এসেছিলেন এই হিন্দু ব্যক্তি। তখনও রোহিঙ্গাদের একটি দল হামলা চালিয়েছিল বলে তার দাবি।

বাংলাদেশে আগে থেকে ৪ লাখের বেশি রোহিঙ্গা রয়েছে। তাদের জঙ্গি তৎপরতাসহ নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ার কথা বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে।

আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি নামে যে সংগঠনটি কয়েক বছর আগে গড়ে উঠেছে, তার সঙ্গে আন্তর্জাতিক জঙ্গি গোষ্ঠীর যোগাযোগের সন্দেহও করেন অনেকে। হামলার পর সেনা অভিযানের মুখে দলটি যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দেয়।

মিয়ানমারে বালুখালী থেকে আসা এক হিন্দু বৃদ্ধ বলেন, দুই পক্ষের লড়াই যখন শুরু হয়, তখন তাদের (হিন্দুদের) অস্তিত্বের কথা কারোরই খেয়াল থাকে না।

সুত্র: Bdnews24

Facebook Comments Box

শেয়ার দিন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো
© All rights reserved © 2019 bibartanonline.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com
themesbazarbibart251
error: Content is protected !!