1. pragrasree.sraman@gmail.com : ভিকখু প্রজ্ঞাশ্রী : ভিকখু প্রজ্ঞাশ্রী
  2. avijitcse12@gmail.com : নিজস্ব প্রতিবেদক :
বুধবার, ২৯ নভেম্বর ২০২৩, ০২:৫৮ অপরাহ্ন

রোহিঙ্গাদের নিয়ে আতঙ্কে কক্সবাজারের বৌদ্ধরা

প্রতিবেদক
  • সময় শুক্রবার, ২২ সেপ্টেম্বর, ২০১৭
  • ১৪৮৪ পঠিত

বিবর্তন ডেস্ক: সহিংসতার কারণে মিয়ানমার থেকে চার লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে৷ অসহায় রোহিঙ্গাদের পাশে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশ৷ তবে এ পরিস্থিতি শঙ্কারও জন্ম দিচ্ছে৷ এএফপিকে সে কথাই জানিয়েছেন কক্সবাজার এলাকার বৌদ্ধরা৷

বৌদ্ধ অধ্যুষিত মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে আশ্রয় দেয়ায় অনেক বাংলাদেশি ক্ষুদ্ধ বলে জানাচ্ছে বার্তা সংস্থা এএফপি৷ বিশেষত কক্সবাজারের যেসব এলকায় তাঁদের আশ্রয় দেয়া হয়েছে, সেখানে অনেকেই উদ্বিগ্ন বলে এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে৷ সে এলাকায় অতীতে বৌদ্ধ সংখ্যালঘুদের ঘর-বাড়ি ও মন্দিরে হামলার ঘটনা ঘটেছে৷ ২০১২ সালে এক বৌদ্ধ তরুণ ফেসবুক পোস্টে কোরানের অবমাননা করেছেন- এমন অভিযোগ তুলে হামলা চালানো হয়েছিল ৩০০ বছরের পুরোনো এক বৌদ্ধ মন্দিরে৷ লুটপাট করার পর জ্বালিয়ে দেয়া হয়েছিল সেই মন্দির৷

কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার কুতুপালং শরণার্থী শিবিরে বায়োমেট্রিক নিবন্ধনের জন্য রোহিঙ্গাদের লাইন৷ কুতুপালং ছাড়াও টেকনাফ ও উখিয়ার বিভিন্ন এলাকার কয়েকটি কেন্দ্রে চলছে এই নিবন্ধন কার্যক্রম৷

কতুপালং শরণার্থী শিবিরে রোহিঙ্গাদের বায়োমেট্রিক নিবন্ধনে কাজ করছেন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সদস্যরা৷ একেকটি কেন্দ্রে দিনে গড়ে ৭০০ জনের মতো রোহিঙ্গার বায়োমেট্রিক নিবন্ধন হচ্ছে৷

ভদন্ত প্রজ্ঞানন্দ ভিক্ষু ওখনও সেই রাতের কথা মনে করে শিউরে ওঠেন৷ হামলাকারীরা মন্দিরে ঢুকে মূর্তি ও অন্যান্য মূল্যবান জিনিসপত্র লুট করতে শুরু করার আগেই তিনি প্রাণ রক্ষার্থে পালিয়ে যান৷ তবে কাছাকাছি এক জায়গায় লুকিয়ে থেকে সবই দেখেছিলেন৷

এএফপিকে তিনি বলেন, ‘‘লুটপাট শেষ হয়ে গেলে তারা মন্দিরে আগুন ধরিয়ে দেয়৷’’ ২০১২ সালের পর পুড়িয়ে দেয়া কেন্দ্রীয় সীমা বিহার মন্দির পুনর্নির্মাণ করা হয়৷

এমনিতে সেখানে সংখ্যাগুরু মুসলিমদের সঙ্গে সংখ্যালঘু বৌদ্ধরা মিলেমিশেই থাকেন৷ দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে রয়েছে সম্প্রীতি৷ তাই পাঁচ বছর আগের বিভীষিকার রাতের কথা স্মরণ করতে গিয়ে বিস্ময় নিয়েই তিনি বলছিলেন, ‘‘এমন ঘটনা ঘটতে পারে তা আমার কল্পনারও বাইরে ছিল৷ কারণ, এখানকার মুসলমানদের সাথে আমাদের বেশ ভালো সম্পর্ক৷’’

মিয়ানমারের রাখাইন থেকে বাংলাদেশেই আশ্রয় নিচ্ছে বেশিরভাগ রোহিঙ্গা শরণার্থী৷ এত সংখ্যক মানুষকে আশ্রয় দেওয়া অবশ্যই বিশাল চ্যালেঞ্জ৷ আন্তর্জাতিক ত্রাণ সংগঠনের সঙ্গে সমন্বয়ের উদ্যোগ চলছে৷ শরণার্থীদের পরিচয় নিশ্চিত করতে তাদের আঙুলের ছাপ সংগ্রহ নিয়ে তথ্যভাণ্ডার গড়ার কথা চলছে৷শের উত্তর পূর্বে বিদ্রোহীদের মোকাবিলা করতে এবং চীনের প্রভাব সীমিত রাখতে ভারতের একের পর এক সরকার মিয়ানমারের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখার চেষ্টা করে চলেছে৷ বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও প্রথম মিয়ানমার সফরে গিয়ে সে দেশের সরকারের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন৷ রাখাইনের অর্থনৈতিক উন্নতির লক্ষ্যেও প্রকল্পে অংশ নিচ্ছে ভারত৷

সাবেক ব্যবসায়ী মনোদা বড়ুয়াও বললেন একই কথা৷ পাশে দাঁড়িয়ে থাকা দু’জনকে দেখিয়ে তিনি বলেন, ‘‘ওরা মুসলমান৷ ওদের সঙ্গে আমরা খাওয়া-দাওয়া করি, একসঙ্গে লেখাপড়া করি৷ আমাদের চার পাশে অনেকগুলো মুসলিম গ্রাম৷’’ দুই মুসলমানের মধ্যে একজনের নাম মোহাম্মদ ইসমাইল৷ এএফপি-কে তিনিও জানালেন, স্থানীয় মুসলমান এবং বৌদ্ধদের মধ্যে ভালো সামাজিক সম্পর্কের কথা৷

দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে সম্পর্ক ভালো হলে কেন ২০১২ সালে এমন ভয়াবহ হামলা হলো? মোহাম্মদ ইসমাইল মনে করেন, সেবার হামলাটি হয়েছিল মূলত বহিরাগতদের কারণে৷

গত কিছুদিনে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে চার লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা এসেছে বাংলাদেশে৷

তাদের আগমনে স্থানীয়দের মাঝে নতুন করে দেখা দিয়েছে আতঙ্ক৷ প্রকৃতি বড়ুয়া বললেন, ‘‘আমরা আতঙ্কে আছি৷ লোকজন বলাবলি করছে, মুসলমানরা নাকি আমাদের ওপর হামলা চালাবে৷’’

মিয়ানমারে বৌদ্ধরা সংখ্যাগুরু হলেও বাংলাদেশে মোট জনসংখ্যার শতকরা এক ভাগেরও কম বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী৷ কক্সবাজারের বৌদ্ধ অধ্যুষিত এলাকায় ইতিমধ্যে অতিরিক্ত ৫৫০ জন পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে৷ তারপরও রাঙ্গা বাবু চাকমা জানালেন, তাঁর বাড়িতে ইতিমধ্যে একবার আগুন লাগানোর চেষ্টা হয়েছে৷

Facebook Comments Box

শেয়ার দিন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো
© All rights reserved © 2019 bibartanonline.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com
themesbazarbibart251
error: Content is protected !!