স্বপন কুমার বড়ূয়া
সাধারণ সম্পাদক
বাংলাদেশ বৌদ্ধ সমিতি যুব
হাজার বছরের ঐতিহ্য ঋদ্ধ বাংলাদেশের বৌদ্ধ সমাজ। বৌদ্ধরা এক বর্ণাঢ্য আলোকিত
কৃষ্টি,সভ্যতা,ইতিহাস,ঐতিহ্যের উত্তরাধিকারী।এদেশের বৌদ্ধরা স্রোতের তোড়ে ভেসে আসা কোন জাতি গোষ্টী নয়।এদেশের মাটির গভীরে বৌদ্ধদের শেকর প্রোতিত রয়েছে। বৌদ্ধরা এদেশের আদি নিবাসী।এই গাঙ্গেয় বদ্বীপের মাটির পরতে পরতে ছড়িয়ে রয়েছে হাজার বছরের বৌদ্ধ সভ্যতার নিদর্শন। বৌদ্ধ রাজারা এই বাংলাকে ৫০০ বছর শাসন করেছিলো। কিন্তু কালের আবর্তনে বিবর্তিত হয়ে আজ বৌদ্ধরা সংখ্যায় অত্যন্ত নগন্য হিসেবে বসবাস করছি এই বাংলাদেশে।কিন্তু সংখ্যায় কম হলেও সংগঠন প্রিয় বৌদ্ধদের রয়েছে শত শত সংগঠন। যা সত্যি গবেষনার বিষয়। কথায় আছে বৌদ্ধরা এক সাথে ১০ জন হলেই সৃষ্টি করে একটি সংগঠন।এটির ভালো মন্দ দু’টি দিকই রয়েছে। ভালো দিক হচ্ছে ছোট-বড় সকল সংগঠন নিজ নিজ সামর্থ্য অনুযায়ী বৌদ্ধ সামাজ সদ্ধর্ম বিনির্মানে কাজ করে যাচ্ছে। খারাপ দিক হচ্ছে কারো সাথে কারো সমন্বয় নেই,ঐক্য নেই।নেই কোনো সমন্বিত প্রয়াশ। যে যার খেয়াল খুশি মতো চলছি। নানান মত আর নানান পথের পথিক আমরা।কারো চেয়ে কেউ কম নই।আমি অমুকের চেয়ে কম কিসের,আমি তমুকের চেয়ে বড়,সমুক এমন কি বৌদ্ধ নেতা হইছে তার কথা শুনতে হবে।এই হলো আমাদের বর্তমান অবস্হা।
যদি নিজেদের মধ্যে সমন্বয় বা ঐক্য থাকতো তাহলে এই বৌদ্ধ সমাজ গগন আরো বেশী আলোকিত হতো,সমৃদ্ধ হতো,বিকশিত হতো। বর্তমানে আমরা যেন স্রোতে ভাসা মাঝিহীন এক নৌকা।স্রোতের তোড়ে লক্ষ্যহীন ভাবে দিক্ বিদিক ছুটে চলছি। গন্তব্য কোথায় জানিনা।আমরা আর অনৈক্য চাইনা,নবীন- প্রবীন সকলের সমন্বয় চাই, সমন্বিতভাবে ঐক্যবদ্ধ হয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে চাই। জাতির বৃহত্তর স্বার্থে অন্তত যেকোনো দূর্যোগকালীন মূহুর্তে একতাবদ্ধ হয়ে সকলের সমন্বয়ে ছোট-বড় সব সংগঠনের মতামত গ্রহণ করে একটি সিদ্ধান্তে আমাদের উপনীত হতে হবে।এখন নিজেদের মধ্যে ভূল বুঝাবুঝির সময় নয়।আর যেকোনো বৃহত্তর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করার আগে সবার মতামত নেয়া উচিত বলে আমি মনে করি।বিশেষ করে চট্টগ্রামে যেহেতু সিংহভাগ বৌদ্ধরা বসবাস করে এবং বেশীরভাগ বৌদ্ধ সংগঠন চট্টগ্রামের সেহেতু চট্টগ্রামে অবস্হিত সকল সংগঠনের মতামত নিয়ে যদি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয় তাতে ভুল বুঝাবুঝি অবকাশ থাকেনা।এ ব্যাপারটা আমাদের মাথায় রাখতে হবে।সব কিছু বিবেক দিয়ে ঠাণ্ডা মাথায় চিন্তা করতে হবে।বুদ্ধি দিয়ে ভালো-মন্দ বিচার বিশ্লেষন করে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।হুট করে কোন সিদ্ধান্ত নেওয়াও ঠিক নয়, সমাজে এর প্রভাব কতটুকু পড়বে তাও বিবেচনায় আনতে হবে।যাক,এখন ঐক্যবদ্ধ হয়ে থাকার সময়।আমাদের ভবিষ্যত প্রজন্মদের কথা চিন্তা করে সকলের মধ্যে সমন্বয় সৃষ্টি করে সম্মুখ পানে এগিয়ে যেতে হবে।আর তা যদি না হয়, আমাদের যে গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস, ঐতিহ্য, কৃষ্টি, সভ্যতা রয়েছে তা অন্ধকারের অতল গহ্বরে তলিয়ে যাবে একদিন।
সকলের শুভ বুদ্ধির উদয় হউক।বুদ্ধ শাসন চির স্হিতি হউক।