1. pragrasree.sraman@gmail.com : ভিকখু প্রজ্ঞাশ্রী : ভিকখু প্রজ্ঞাশ্রী
  2. avijitcse12@gmail.com : নিজস্ব প্রতিবেদক :
  3. wp-configuser@config.com : James Rollner : James Rollner
শুক্রবার, ০১ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:৩৯ পূর্বাহ্ন

প্রকৃত বৌদ্ধ কে?

প্রতিবেদক
  • সময় শুক্রবার, ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৭
  • ২৬৫০ পঠিত

ভদন্ত আনন্দমিত্র মহাথের

বোধি বা প্রজ্ঞা সাধনায় নিরত প্রজ্ঞাবান ব্যক্তিই প্রকৃত বৌদ্ধ। প্রজ্ঞাবান ব্যক্তি কখনও দুঃশীল হতে পারেন না। দীর্ঘ নিকায়ের সোণদণ্ড সূত্রে বুদ্ধ বলেছেন – “যত্থ পঞ্ঞা, তত্থ সীল; যত্থ সীলং তত্থ পঞ্ঞা। সীল পঞ্ঞতো লোকস্মিং অগ্গমক্খাযতীতি”। অর্থাৎ – যথায় প্রজ্ঞা তথায় শীল; যথায় শীল তথায় প্রজ্ঞা। প্রজ্ঞাবানই শীলবান, শীলবানই প্রজ্ঞাবান। শীল এবং প্রজ্ঞার দ্বারাই জগতে শ্রেষ্ঠত্ব লাভ হয়।

বুদ্ধ অঙ্গুত্তর নিকায়ের দশম অধ্যায়ে এক সূত্রে বলেছেন – দশবিধ কুশল কর্ম সম্পাদন দ্বারাই প্রকৃত বৌদ্ধ হয়। যথা :-

১. বুদ্ধ, ধর্ম ও সংঘের শরণাগত হওয়া। সে শরণাগমণ জন্মগত বৌদ্ধের ন্যায় প্রথাগত না হয়ে ত্রিরত্নের জ্ঞান অর্জন জনিত ত্রিরত্নের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা ও ভক্তিযুক্ত হতে হবে।
২. ধর্মকে অধিপতি করে ধর্মকেই জীবনের সর্বশ্রেষ্ঠ আশ্রয়রূপে গ্রহণ করে জীবন যাপন করা। ধর্মের প্রতি প্রগাঢ় শ্রদ্ধাবশতঃ তিনি বিশ্বাস করেন- “ধম্মমেব তিসম্পদং”। ধর্মই মনুষ্যদের নির্বাণ সম্পত্তি প্রদায়ক। ‘ধম্মেনা হীনা পশু ভিসিমানা’। ধর্মহীন ব্যক্তি বলবান, সুন্দর ধনী এবং শিক্ষিত হলেও পশু সদৃশ। কিন্তু ধর্মপ্রাণ ব্যক্তিদের কেহ কেহ ধর্মের জন্য জীবনও বলি দিতে পারেন। তাই বলা হয়েছে-

ধনে চজে যো পণ অঙ্গ হেতু
অঙ্গং চজে জীবিতরক্খুমানো,
ধনং অঙ্গং জীবিতঞ্চিাপি সব্বং,
চজে নরো ধম্ম মনুস্সারন্তো।

ধার্মিক, জ্ঞানী ব্যক্তি অঙ্গ রক্ষার জন্য দুঃখার্জিত ধন, জীবন রক্ষার জন্য অঙ্গ এবং ধর্ম রক্ষার জন্য ধন, অঙ্গ ও জীবন সবই ত্যাগ করেন।

৩. ধন-সম্পত্তি, মান-সম্মান, আত্মীয়-স্বজন, অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ এমন কি জীবন বিনাশেও তিনি বিজ্ঞান ভিত্তিক ও প্রজ্ঞা প্রধান বৌদ্ধধর্ম ত্যাগ করে অন্য ধর্ম গ্রহণ করেন না।
৪. প্রাণীহত্যা, চুরি, ব্যাভিচার এবং মিথ্যা, পিশুন, নির্দয় ও বৃথা বাক্য ত্যাগ করে কায়-বাক্যের শুদ্ধতা রক্ষা করে শীলবান হন।
৫. তিনি দর্শন, শ্রবণ, ঘ্রাণ, আস্বাদন ও স্পর্শের মঙ্গল হয় এমন ভ্রান্ত ধারণার বশবর্তী না হয়ে সৎ কর্মে মঙ্গল ও অসৎ কর্মে অমঙ্গল হয়- এ সত্যে বিশ্বাসী হয়ে সম্যক দৃষ্টি সম্পন্ন হন। তিনি ঈর্ষা বিহীন হয়ে এবং শঠতা বঞ্চনাদি পাপকর্ম বাদ দিয়ে সম্যক জীবিকায় জীবন যাপন করেন।

৬. তিনি সম্যকদৃষ্টি সম্পন্ন হয়ে সবার সহিত সম্প্রীতি বজায় রেখে সম্মিলিতভাবে জীবন যাপন করেন। সম্যকদৃষ্টি অর্থে সবাইকে সমান ভাবে দেখা নয়, সম্যকরূপে দেখা।অর্থাৎ যে যেমন তাকে তেমন ভাবে দেখা।

৭. তিনি কৃপণ না হয়ে উদার দাতা হন। তিনি আপন অবস্থানুসারে সধর্ম্মের প্রচার ও প্রসারে এবং সমাজের হিতার্থে দান করেন।

৮. তিনি সংঘ আসার মনে করে সংঘের উন্নতিকামী হয়ে জীবন যাপন করেন।

৯. তিনি বুদ্ধশাসনের পরিহানি দেখে তার অভিবৃদ্ধির জন্য সচেষ্ট হন।

বৌদ্ধধর্ম প্রজ্ঞা ও বীর্য (বীরত্ব) প্রধান। উন্নতির দিকে এগিয়ে যেতে হলে বীর্য প্রয়োগের প্রয়োজনীয়তা বেশী। প্রজ্ঞা ভালো-মন্দ’র দেখে আর বীর্য বাধান পর বাধা অতিক্রম করে উন্নতির দিকে এগিয়ে নিয়ে যায়। এ কারণে বোধিপক্ষীয় ধর্মে বীর্যের স্থান সবচেয়ে বেশী। প্রকৃত বৌদ্ধ হতে হলে প্রজ্ঞা ও বীর্য এই দুই শক্তিতে শক্তিবান হতে হবে।

জগতের সকল প্রাণী সুখী হউক,
দুঃখ হইতে মুক্ত হউক।

Facebook Comments Box

শেয়ার দিন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো
© All rights reserved © 2019 bibartanonline.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com
themesbazarbibart251
error: Content is protected !!