বিবর্তন ডেস্ক: যশোরের বেনাপোল সীমান্তে একজন বৌদ্ধ ভিক্ষুকে হেনস্তা করার দায়ে তিন তরুণকে আটক করেছে পুলিশ। ভারত থেকে দেশে ফেরার পর গতকাল মঙ্গলবার ওই তরুণেরা তাঁকে ভয় দেখিয়ে তাঁর ভিডিও করেন। পরদিনই তিনি প্রাণভয়ে ভারতে পালিয়ে যান।
হেনস্তার শিকার ওই ভিক্ষুর নাম জ্ঞান মিত্র ভিক্ষু । এখন তিনি শিলিগুড়িতে অবস্থান করছেন। বৃহস্পতিবার বিকেলে সংবাদ মাধ্যমকে তিনি বলেন, ‘আমি চিকিৎসার জন্য এ বছরের মার্চে ভারতে যাই। মঙ্গলবার বেনাপোল সীমান্ত থেকে দেশে আসি। পানি কিনতে একটি দোকানে গেলে আচমকা কয়েকজন তরুণ আমাকে ঘিরে ধরেন। তারপর একটা গাড়িতে আমাকে তোলা হয়। তাদের শিখিয়ে দেওয়া কয়েকটি বাক্য উচ্চারণ করতে বলেন। ওই সময় তাঁরা পুরো ঘটনা ধারণ করেন।’
জ্ঞান মিত্র বলেন, তাঁরা এ সময় তাঁকে শারীরিকভাবে আঘাত করার ভয় দেখাচ্ছিলেন। তিনি কাউকে কিছু না জানিয়ে পরদিনই আবার ভারতে ফিরে যান।
জ্ঞান মিত্র ভিক্ষুর বাড়ি চট্টগ্রামের বাঁশখালী শিলকুপে। বাড়িতে তাঁর পক্ষাঘাতগ্রস্ত মা ছাড়া আর কেউ নেই। তিনি তাঁর নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন।
বৃহস্পতিবার বিকেলের দিকে ওই ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যায়। ‘তুই’ সম্বোধন করে ওই ভিক্ষুকে রোহিঙ্গাদের ওপর হামলার জন্য দায়ী উগ্রবাদী বৌদ্ধ ও অং সান সু চির বিরুদ্ধে বক্তব্য দিতে বলা হয়।
ঘটনাটি জানাজানি হওয়ার পরই বেনাপোল থানার পুলিশ স্বপ্রণোদিত হয়ে একটি সাধারণ ডায়েরি করে। রাতে যাঁদের আইডি থেকে এই ভিডিওটি ছড়ানো হয়েছে, তাঁদের আটক করে পুলিশ।
বেনাপোল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অপূর্ব হাসান জানান, তাঁরা ওই ঘটনায় যে তিনজনের সম্পৃক্ততা পেয়েছেন, তাঁদের ধরেছেন। তাঁরা হলেন রিয়াজুল ইসলাম মণ্ডল, মো. আমিন হোসেন, মো. তৌফিক আহমেদ। এই ঘটনায় আর কারও সম্পৃক্ততা পেলে তাঁকেও ধরা হবে বলে জানিয়েছেন ওসি। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত আটক ব্যক্তিদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছিল।
আটক করা তিনজনের মধ্যে মো. আমিন হোসেন ছাত্র, অন্য দুজন ব্যবসা করেন। মো. তৌফিক আহমেদ সুজনের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে ঢুকে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতাদের সঙ্গে তাঁর ছবি দেখা গেছে।