বান্দরবান সদর উপজেলার খৈয়া পাড়ায় গত বৃহষ্পতিবার ৯ মার্চ বিকেল থেকে শুরু হওয়া নানা অনুষ্টানমালায় দুইদিন ব্যাপী খৈয়া পাড়া বৌদ্ধবিহারের উদ্বোধন ও তাবতিংশ মেলা ‘ বা স্বর্গারোহন মেলা সমাপ্ত হয়।বুদ্ধত্ব লাভের পর মহামতি গৌতম বুদ্ধ সর্বোচ্চ বা সপ্তম স্বর্গে অবস্থানরত নিজ মাতা মহামায়া দেবীকে ধর্ম নির্দেশনা দেওয়ার জন্যে সেখানে আসেন। এ ঘটনা স্মরণে এই মেলার আয়োজন করা হয়। প্রবীণরা বলেছেন, পর্বটি ধর্মীয় অনুষ্ঠানিকতার হলেও আশপাশের বিভিন্ন গ্রাম থেকে শিশু-কিশোরসহ নানা বয়সী শত শত নারী-পুরুষের অংশ গ্রহনে ‘তাবতিংশ মেলা’ লোকজ মেলায় রূপ নেয়।
তাবতিংশ মেলা বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের একটি অন্যতম ধর্মীয় অনুষঙ্গ। তবে সব এলাকায় এর আয়োজন হয়না। ফলে যে গ্রামে এর আয়োজন হয়, সেখানে সবাই অংশ নেন।
গত বৃহষ্পতিবার দুপুরে গিয়ে দেখা গেছে, তাবতিংশ পূজার জন্যে খৈয়া পাড়া গ্রামের এক প্রান্তে বাঁশ-কাঠ এবং লোকজ উপকরণ ব্যবহার করে নির্মাণ করা হয়েছে সাত তলা বিশিষ্ট একটি মন্দির। রঙিন কাগজ সেঁটে স্বর্গ সিঁড়িকে আরও বর্ণিল ও কারুকার্যময় করে তোলা হয়েছে। প্রতিটি তলাকে এক একটি স্বর্গের আবহে সাজিয়ে তোলার পর সপ্তম তলায় স্থাপন করা হয়েছে পবিত্র বুদ্ধ মূর্তি।
আয়োজকদের পক্ষ থেকে জানানো হয়, বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা সিঁড়ি বেয়ে বেয়ে বিভিন্ন স্বর্গ অতিক্রম শেষে সপ্তম তলায় অবস্থিত সর্বশ্রেষ্ঠ স্বর্গে পৌঁছে প্রদীপ পূজা দেবেন এবং ভিক্ষুদের কাছ থেকে দেশনা গ্রহন করবেন। অন্য ধর্মাবলম্বীরাও সিঁড়ি বেয়ে স্বর্গারোহন করতে পারবেন।
খৈয়া পাড়া তাবতিংশ মেলা আয়োজক কমিটির সভাপতি চিত্ত কুমার তঞ্চঙ্গ্যা জানান, বৃহষ্পতিবার বিকেল ৪টা থেকে ধর্মদেশনার মধ্য দিয়ে তাবতিংশ মেলা শুরু হবে। রাতভর চলবে পূজা-প্রার্থনা এবং বাঁশের সিঁড়ি বেয়ে স্বর্গারোহন এবং প্রদীপ পূজা শেষে সেখান থেকে নেমে আসা। আজ শুক্রবার দুপুর ২টায় বিশেষ ধর্ম দেশনা এবং সম্মিলিত প্রার্থনার মধ্য দিয়ে মেলা শেষ হয়।