রামুতে মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্শা স্টিফেনস ব্লুম বার্নিকাট বলেছেন, আমি এখানে এসে খুব শান্তি অনুভব করছি। বৌদ্ধিক কারুকার্য খচিত মন্দির দেখে আমার খুব ভাল লেগেছে। ২০১২ সালে যখন রামু সহিংসতা হয় তখন আমরাও নিয়মিত খোঁজখবর রেখেছিলাম। সেসময় যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমাদের প্রতিনিধিও বাংলাদেশে এসেছিলেন। বাংলাদেশ অসাম্প্রদায়িক চেতনা থেকে সৃষ্টি। আমরাও চাই আপনারা সবাই ভাল থাকেন। আজ বুধবার (১ ফেব্রুয়ারি) বিকালে রামু কেন্দ্রীয় সীমা বিহার পরিদর্শন কালে তিনি এ কথা বলেন।মার্কিন রাষ্ট্রদূত বার্নিকাট বুধবার বিকাল সাড়ে ৩টায় রামুতে বৌদ্ধ বিহারে পৌঁছালে কেন্দ্রীয় সীমা বিহার পরিচালনা পরিষদ সাধারণ সম্পাদক তরুন বড়ুয়া ফুলের তোড়া দিয়ে স্বাগত জানান। এ সময় কেন্দ্রীয় সীমা বিহারের শীলপ্রিয় ভিক্ষু, প্রজ্ঞানন্দ ভিক্ষু, রামু থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) প্রভাষ চন্দ্র ধর সহ স্থানীয় বৌদ্ধরা উপস্থিত ছিলেন।
মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্শা স্টিফেনস ব্লুম বার্নিকাট রামু কেন্দ্রীয় সীমা বিহারে বৌদ্ধ ভিক্ষুদের সাথে প্রার্থনা করেন, পরে বিহারাধ্যক্ষ একুশে পদক প্রাপ্ত, উপ-সংঘরাজ পন্ডিত সত্যপ্রিয় মহাথের’র সাথে সৌজন্য সাক্ষাতে মিলিত হন। উপসংঘরাজ পন্ডিত সত্যপ্রিয় মহাথেরকে ‘ন্যাশনাল গ্যালারি অব আর্ট’ বইটি উপহার দেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্শা স্টিফেনস ব্লুম বার্নিকাট।পন্ডিত সত্যপ্রিয় পাঠাগারে সৌজন্য বৈঠকে পন্ডিত সত্যপ্রিয় মহাথের নিজের লেখা ও অনুবাদ করা বেশকয়েকটি বই মার্কিন রাষ্ট্রদূতের হাতে তুলে দেন। বৈঠকে আমাদের রামু ডটকম সম্পাদক প্রজ্ঞানন্দ ভিক্ষু বৌদ্ধ ভিক্ষু ও বৌদ্ধদের জীবন কথা, বিহার ও রামু মানুষের সম্প্রীতির কথা মার্কিন রাষ্ট্রদূতকে জানান।
রামুর সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির কথা, এ এলাকার জনসাধারনের সহযোগিতার কথা শুনে উচ্ছসিত হন মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্শা স্টিফেনস ব্লুম বার্নিকাট। একই সাথে ২০১২ সালে সংগঠিত সহিংস ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন তিনি।
মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্শা স্টিফেনস ব্লুম বার্নিকাট বলেন, আমরা চেষ্টা করছি সবাই জানুক উপলব্ধি করুক অহিংসার কথা। ভয় থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। অহিংসার কথা আমরা সবার কাছে পৌঁছে দিতে চাই। আপনার শান্তিতে থাকবেন। বাংলাদেশ এটার জন্য কাজ করছে। আমরাও বাংলাদেশকে এব্যাপারে সহযোগিতা দিয়ে আসছি।
পন্ডিত সত্যপ্রিয় মহাথের বলেন, আপনি রামু পরিদর্শনে আসাতে আমরা অত্যন্ত আনন্দিত। আসলে খারাপ লোকদের কোন নির্দিষ্ট ধর্ম হয়না। তাদের কাছে কোন ধর্ম থাকতে পারেনা। তারা পৃথিবীর দেশে দেশে সর্বত্র। আমরা ভাল আছি। সরকার আমাদের প্রতি অত্যন্ত আন্তরিক। বিশেষ করে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নিজেও আমাদের খোঁজ রাখেন।
তিনি আরো বলেন, বর্তমান সরকার আমাদের অনেক সাহায্য-সহযোগিতা করেছেন। আমরা নিরাপদে আছি। রামুতে সব ধর্মের মানুষ একত্রে বসবাস করছি। তবে মনের শংকাও দূর হতে চায়না।
মার্কিন রাষ্ট্রদূত বার্নিকাট বিকাল ৫টা পর্যন্ত রামু কেন্দ্রীয় সীমা বিহারে অবস্থান করেন। এসময় তিনি বিহার প্রাঙ্গনের বিভিন্ন মন্দির দেখেন এবং ভিক্ষু, পূজারী বৌদ্ধদের সাথে কথা বলেন।
এসময় মার্কিন রাষ্ট্রদূত বার্নিকাটের সফর সঙ্গী হিসেবে সাংস্কৃতিক কর্মকর্তা কেলি রায়ান, মি. ওয়েল, রায়হানা সুলতানা, ঢাকা এলপিসি প্রধান জাবেদ করিম, কক্সবাজার সরকারি কলেজের প্রফেসর আরিফ ইলাহী সহ নিরাপত্তা কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সুত্র: আমাদের রামু