রাঙামাটি সদরের উলুছড়ায় পরম পুজ্য ভদন্ত সাধনানন্দ মহাস্থবির বনভান্তের স্মৃতি ভাবনা কেন্দ্র নির্মাণ কল্পে ক্রয়কৃত ভুমি দানোৎসর্গ উপলক্ষে শহরের পারমী বৌদ্ধ বিহারে সংঘদান, অষ্টপরিষ্কার দান, ভুমি দান ও সদ্ধর্ম আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
গত ১৪ই জানুয়ারি শনিবার সকালে পারমী বৌদ্ধ বিহারের দেশনালয়ে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন পুজ্য বনভান্তের শিষ্য বৌদ্ধরত্ন উপাধিপ্রাপ্ত ধর্মীয় গুরু শ্রীমৎ নন্দপাল মহাস্থবির।ধর্ম দেশনায় তিনি বলেন, ভুমিকে আশ্রয় করে মানুষের জন্ম, ভুমিকে আশ্রয় করে গড়ে ওঠা, ভুমিকে আশ্রয় করে মৃত্যু। ভুমি না হলে কোন কিছুই সম্ভব নয়। এজন্য ভুমি দান জ্ঞানীগণকে আকর্ষণ করে। ভুমি দানের পুণ্য অতুলনীয়। ভুমি দানে ভুমিকা রাখতে পারলে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা আনন্দ লাভ করে।
পৃথিবীতে অনেক অনেক ভুমিহীন মানুষ রয়েছে তাদের কত কষ্ট এবং সমস্যা রয়েছে। এই যে সংখ্যালঘু চাকমাদের অবস্থার দিকে তাকিয়ে দেখুন। এক সময় চাকমাদের কত জায়গা জমি ছিল। রাজা ছিল, তারা রাজ্য শাসন করেছে বলে ইতিহাসে উল্লেখ আছে। কিন্তু বর্তমানে ভুমি হারিয়ে চাকমাদের এদিক-ওদিক চলে যেতে হচ্ছে, পালিয়ে যেতে হচ্ছে। ভারতে, বার্মায়, বাংলাদেশেও এ্কই অবস্থা।
পাপের কারণে কিংবা পুণ্যের অভাবে এমন হচ্ছে। পুণ্য থাকলে সর্বত্র আধিপত্য করা যায়। পুণ্যের প্রভাব থাকলে মনুষ্যলোক এবং দেবলোকে আধিপত্য করা সম্ভব হয়। তাই ভুমি দান করে বুদ্ধ শাসনের উন্নতিতে সকলকেই সাধ্যমত ভুমিকা রাখা উচিত। যারা আজকের এই ভুমি দানোৎসর্গ অনুষ্ঠানের পুণ্য কাজে ভুমিকা রাখছেন তাদের সাধুবাদ জানাই।তিনি আরো বলেন, চাকমাদের মধ্যে কুল প্রদীপ চাকমা একজন দাতা বুদ্ধ শাসনে বিরাট ভুমিকা রাখছেন।
ভারতের বুদ্ধগয়ায় বন বিহারে একটি চারতলা ভবন নির্মাণ করে দিচ্ছেন। ইতিমধ্যে দ্বিতল ভবন পর্যন্ত কাজ শেষ হয়েছে।অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বরকল বন বিহারের অধ্যক্ষ শ্রীমৎ শুভবর্দ্ধন মহাস্থবির, শ্রীমৎ প্রিয়ানন্দ মহাস্থবির ও অন্যান্য ভিক্ষুরা। এতে আরো বক্তব্য রাখেন অবসর প্রাপ্ত উপ-সচিব প্রকৃতি রঞ্জন চাকমা, বনভান্তে স্মৃতি ভাবনা কেন্দ্রের উদ্যোক্তা সুন্দর্য্য চাকমা, বিহারী চাকমা প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে খাগড়াছড়ির জেলার দিঘীনালা, রাঙামাটি সদর ও যমচুগ বনাশ্রম ভাবনা কেন্দ্র এলাকা থেকে যারা বনভান্তের স্মৃতি ভাবনা কেন্দ্রের ভুমি ক্রয়ের জন্য শ্রদ্ধাদান দিয়েছেন সে সকল পুণ্যার্থীরা অংশ নেন।