প্রিয়াল বড়ুয়া: কন্থক বুড্ডিস্ট ইউনিটির উদ্যোগ এ গরিব অসহায় পথ শিশু ও দুরস্ত পথ মা বোনদের শীতাধিক্য দুর্ভোগ থেকে রক্ষার্থে ৩(তিন) দিনের শীত বস্ত্রাদি ও কম্বল বিতরণ কর্মসূচি সফল ভাবে সম্পন্ন হয়েছে।
প্রথম দিনে চট্টগ্রাম রেলওয়ে এবং নগরীর আউটার স্টেডিয়াম এ ছিন্নমূল বস্তিবাসীর মাঝে “শীত বস্ত্র” বিতরন করা হয়।
দ্বিতীয় দিনে রাস্তায় ছুটে চলা পথশিশুদের সাথে আনন্দ আয়োজন ও শীতের পিঠা খাওয়ানো।
এবং চট্টগ্রাম ষোলশহর এলাকায় ছিন্নমূল বস্তিবাসীর ছোট্ট সোনামনিদের শীত বস্ত্র (সুয়েটার) বিতরন করা হয়। তৃতীয় দিনে চট্টগ্রাম শহর অঞ্চলে প্রদক্ষিন করে ফুটপাতে শুয়ে থাকা অসহ্য শৈত্যপ্রবাহে মধ্যরাতে কষ্ট পাওয়া হত দারিদ্র মানুষদের কে শীতের “উঞ্চ কম্বল” জড়িয়ে দিয়ে, গরিবের মুখে হাসি এনেছে কন্থক।
রেল স্টেশন কিংবা বিশাল দালানের শহরের ফাঁকে পথের ধূলোয় যাদের সংসার ও পথের মধ্যেই যাদের বসবাস তাদের সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছি আমরা বৌদ্ধ “কন্থক” তরুনেরা।
মধ্যরাতের শৈত্যপ্রবাহে যে ফকিরটা রাতে ঠান্ডা তে কাঁপে, যেই টোকাই ছেলে টা একটু উষ্ণতার আশায় আগুন জ্বেলে বসে থাকে , সেই গরিব মা টা যে তার সন্তান কে নিজের আঁচল দিয়ে উষ্ণতা দেওয়ার বৃথা চেষ্টা করে তাদের জন্য মানবতার দৃষ্টিতে রাত্রি ১২ টার পর ঘুমন্ত যাদুর চট্টগ্রাম শহরে “কন্থক” তরুনেরা রাজপথে। তরুনের শক্তিতে সকল বাধা শীতের তীব্রতা উপেক্ষা করে “কন্থক বুড্ডিস্ট ইউনিটি” চট্টগ্রামে মধ্যরাতে শীতের অসহ্য শৈত্য প্রবাহে কষ্টে থাকা সেসব মানুষদের “উঞ্চ কম্বল” বিতরন করে।সবাই মানবতার কথা বলি, কিন্তুু বাস্তবতায় অসহায়ের পাশে দাঁড়ানোটা মানবতার প্রথম সূত্র। রাত ১২ টা থেকে ভোর ছয়টা পর্যন্ত রিকশা যোগে নগরী প্রদক্ষিন করা হয়, পথে যাকেই শৈত্য প্রবাহে তীব্রতায় কাতরাতে দেখেছি তাকেই কন্থকের স্নেহ দ্বারা “কম্বল” জড়িয়ে দিয়েছি। চট্টগ্রামের চেরাগী পাহাড়, মেহেদীবাগ,দামপাড়া, গোলপাহাড়, জিইসি, গরিবুল্লাশাহ মাজার, ২ নং গেইট, বায়োজিদ, অক্সিজেন, অনন্যা আবাসিক, বদ্দারহাট,খাজা রোড,কাপাসগোলা,রাত্তারপোল,চকবাজার,দেওয়ান বাজার, আন্দরকিল্লা, সিনেমা প্যালেস, মার্কেট, সিটি কলেজ,মাদারবাড়ি,আইসফেক্টরী,মোগলটুলি, পাঠানটুলি, কমার্স কলেজ,মাঝির ঘাট, সদরঘাট, আলকরন, ফিরিঙ্গিবাজার, পাথরঘাটা, চাক্তাই, নতুনব্রীজ এ আমরা চলমান ফুটপাথে অসহায়দের পাশে দাঁড়িয়ে নিজেদের মনের তৃপ্তি পূরন করেছি। এসব এলাকায় একমাত্র তাদেরকেই কম্বল দেয়া হয়, যাদের অবস্থা আসলেই করুন,পরনে বস্ত্র থাকলেও শীতের প্রকোপ ঠেকানোর কোন গরম কাঁথা/কম্বল কিছুই নেই।
শীতার্ত মানুষ, শৈত্যপ্রবাহ শব্দগুলো দেখছি প্রতিবছর। দেখছি প্রতিদিন সংবাদপত্রে, টিভিতে এই তীব্র শৈত্যপ্রবাহে শিশু,বৃদ্ধ সহ অনেক মানুষ মারা যাচ্ছে। প্রতিদিন ঘর থেকে বের হলে শীতের ঝাঁকুনিটা খেলে উপলব্ধি করছি কি প্রবল শীত পরেছে, কত মানুষ কষ্টে আছে।তখন মনে হয় এই মানুষগুলোর পাশে দাঁড়ানো দরকার।তাদের জন্য সাহায্যের হাত বাড়ানো দরকার।কিন্তু ব্যস্তদিন শেষে বাসায় ফিরে কম্বলের ভিতরে ঢুকে গেলে ভুলে যাচ্ছি সকালের উপলব্ধিটা, কিন্তু শীতার্ত ঐ মানুষগুলোর কথা চট্টগ্রামের সুপরিচিত সামাজিক ও প্রগতিশীল বৌদ্ধ সংগঠন “কন্থক বুড্ডিস্ট ইউনিটি” ভুলে নি। আমরা কন্থক বৌদ্ধ তরুনেরা ভুলি নি। আমরা সর্বদা সামাজিক সেবায় নিয়োজিত। যেই মানুষগুলো ঠিক মত দুই বেলা খাবার যোগার করতে পারে না, শীতবস্ত্র কেনার মত যাদের সামর্থ্য নেই, তাদের পাশে আমরা দাঁড়িয়েছি।
মানবতার স্নেহ থেকে আমরা কন্থক বুড্ডিস্ট ইউনিটি সংগঠন থেকে প্রতি বছরের ন্যায় আমাদের এ আয়োজন করেছি। মানুষ মানুষের জন্য। সবাই সবার বিপদে এগিয়ে আসবে এইটাই হল মনুষ্যত্তের প্রথম শর্ত।
এই অসহায় মানুষদের পাশে দাড়িঁয়ে আমরা মানবতার চাদরে জড়িয়ে শীতার্ত দারিদ্রতাকে জয় করেছি।
জয় হোক মানবতার
জয়তু “কন্থক বুড্ডিস্ট ইউনিটি”।