1. pragrasree.sraman@gmail.com : ভিকখু প্রজ্ঞাশ্রী : ভিকখু প্রজ্ঞাশ্রী
  2. avijitcse12@gmail.com : নিজস্ব প্রতিবেদক :
বুধবার, ০৭ জুন ২০২৩, ০৪:৫৬ পূর্বাহ্ন

শুভ হোক পরমপূজ্য শ্রাবক বুদ্ধ শ্রীমৎ সাধনানন্দ মহাস্থবির বনভান্তের ৯৮ তম জন্মদিন

প্রতিবেদক
  • সময় শনিবার, ৭ জানুয়ারী, ২০১৭
  • ১৫৭৬ পঠিত

সুপ্রিয় চাকমা শুভ,  রাঙামাটি।।

আজ পরমপূজ্য শ্রাবক বুদ্ধ শ্রীমৎ সাধনানন্দ মহাস্থবির বনভান্তের ৯৮ তম জন্মজয়ন্তী। তিনি ৮ই জানুয়ারী ১৯২০ সালে রাঙামাটি জেলার মগবান ইউনিয়নের মোরঘোনা নামক স্থানে জন্ম গ্রহন করেন। তাঁহার পিতার নাম হারুমোহন চাকমা এবং তিনি পূণ্যবতী মহয়সী বীরপুদি চাকমার গর্ভে জন্ম লাভ করেন। পৃথিবীর মানুষকে বিভিন্ন অপকর্মের কাজ হতে সৎ পথে নিয়ে আসার জন্য বৌদ্ধ জাতিকে করে তুলেছেন সৎপথে সম্মৃদ্ধ। তাঁহার ভাই-বোন সর্বমোট ৪ জন। তিনি ছিলেন ভাই-বোনদের মধ্যে জোষ্ঠ পুত্র। ১৯৪৯ সালে পটিয়া নিবাসী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক গজেন্দ্র লাল বড়ুয়ার মাধ্যমে ফেব্রুয়ারি মাসে চট্গ্রামেরর নন্দ কানন বৌদ্ধ বিহারে ফাল্গুনী পূর্নিমা তিথিতে শ্রীমৎ দীপঙ্কর ভিক্ষুর কাছে প্রবজ্যা গ্রহন করেন।

১৯৫০ সালে নিজে জন্মভূমি ধনপাতা বালুখালী ইউনিয়নের মগবান নামক স্থানে চলে আসেন। এবং সেখানে তিনি তাঁহার শীল,সমাধি,প্রজ্ঞা, সম্ম্যক জ্ঞান লাভ করেন। অনেক বছর নিজ মাতৃভূমিতে অবস্থান করেন। সৎ পথে নিয়ে আসার জন্য তিনি সৎ উপদেশ, স্বধর্ম দেশনা প্রদান করেন। ১৯৬০ সালে নিশি মোহন চাকমার আমন্ত্রনে (ফাং) তিনি চলে যান দীঘিনালা উপজেলার “”বনাশ্রম”” নামক বিহারে। সেখান হতেই তিনি ভিক্ষু জীবন শুরু করেন। এবং সেখানে কঠোর সাধনায় ১০ বৎসর অতিবাহিত করেন। এবং পড়ে বাঘাইছড়ি উপজেলার খেদারমারা বৌদ্ধ বিহারে চলে যান এবং ১৯৭০ হতে ১৯৭৪ সালে পুরো চার বছর রাঙামাটি লংগুদু উপজেলার তিনটিলা স্থানে থেকে বৌদ্ধ ধর্ম প্রচার করেন।

১৯৭৪ সালে স্বনামধন্য চাকমা রাজ পরিবারের পক্ষে রাজা ত্রিদিব রায়ের মাতা বিনীতা রায় ও চাকমা চীফ সার্কেল বেরিস্টার দেবাশীষ রায়ের মাতা আরতি রায়, কুমার সুমিত রায়, ও পাড়ার গণ্যমান্য ব্যক্তিগনের আমন্ত্রনে (ফাং) বর্তমান “রাজ বন বিহারে” চলে আসেন। এবং “রাঙামাটি রাজ বন বিহারে” ১৯১২ সাল পর্যন্ত দীর্ঘসময় অতিবাহিত করেন। যা বর্তমানে বাংলাদেশের অন্যতম সুনাম ধন্য তীর্থ ধর্মীয় স্থান নামে বিখ্যাত। যা ৩৩ একর জায়গার উপর গড়ে তোলা হয় রাজবন বিহার। যা বর্তমানে বাংলাদেশের আনাচে-কানাচের স্থান হতে দর্শন করতে আসে বিভিন্ন বৌদ্ধ ধর্মালম্বী সহ বিভিন্ন পূর্ণার্থী এবং তাঁরই প্রচেষ্টায়, সাধনায় তিনি স্বশিষ্য শ্রীমৎ নন্দপাল মহাস্থবির ভিক্ষুকে (বর্তমান মহাথেরো) সেখানে প্ররন করেন। এবং ১৯৮১ সালে ১৪ই ফেব্রুয়ারি মাসে “মহাথেরো” হিসেবে ইপসম্পাদা লাভ করেন।

এছাড়া রাজবন বিহারে থাকাকালীন সময়ে তিনি বিভিন্ন রোগে অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁহার স্বাক্ষাৎ পাওয়ার জন্য অসুস্থতার জন্য তদারকি করতেন গণ্যমান্য ব্যক্তি বর্গ। এমনকি প্রশাসন হতে রাঙামাটি জোন কমান্ডার, সংসদ সদস্য শ্রী ঊষাতন তালুকদার, ব্যারিস্তার দেবাশীষ রায়, বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতাকর্মী সহ বিভিন্ন গুনী ব্যাক্তি তাঁহার দর্শনের জন্য সমাবেত হতেন। পুষ্প হাতে নিয়ে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করতেন এবং তাঁহার অবস্থা খারাপ লক্ষ্য করে রাঙামাটি রাজবন বিহার ভিক্ষু সংঘ, রাঙামাটি কার্যনির্বাহী পরিষদ, রাঙামাটি প্রশাসনের উদ্যেগে উন্নত চিকিৎসার জন্য স্বনামধন্য ঢাকা স্কয়ার হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য পদক্ষেপ নেওয়া হয় এবং ২০১২ সালে ২৭শে জানুয়ারি রোজ শুক্রবার সকাল ১১ টা ৩০ মিনিট সময়ে রাঙামাটি রাজবন বিহার হতে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় উন্নত চিকিৎসার জন্য এবং ১২ টা ১৫ মিনিটে সার্কিট হাউজ হেলিপ্যাড থেকে হেলিকপ্তার যোগে ঢাকার উদ্দেশ্য রাঙামাটি জোন হতে রওনা হন।

তাছাড়া উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা স্কয়ার হাসপাতালে ৩ দিন চিকিৎসাধীন অবস্থায় রত ছিলেন এবং কঠোর প্রচেষ্টায় মাধ্যমেও তাঁহার চিকিৎসার কোন উন্নতি লক্ষ্য করা যায় নি। অবশেষে ৩০শে জানুয়ারী ২০১২ সালে রোজ সোমবার বিকাল ৩ টা ৫৭ মিনিটে দেহ ত্যাগ করে পৃথিবীর মানুষকে কাঁদিয়ে চির জীবনের জন্য পরিনির্বান পথে চলে যান। লক্ষকোটি মানুষ তাঁকে এক পলক দেখার জন্য হাতে পুষ্প নিয়ে শ্রদ্ধা জানাতে ছুটে চলে আসে রাজ বন বিহারে। এবং মধ্যেরাত হয়ে যায় তার দেহ রাঙামাটি রাজ বন বিহারে পৌছাতে। ভিক্ষু সংঘ সহ হাজার হাজার পূর্ণার্থী অশ্রু ভেজা নয়নে শ্রদ্ধেয় শ্রীমৎ বনভান্তের পথে চেয়ে হাতে পুষপ নিয়ে জড়ো হয় রাঙামাটি রাজ বন বিহারে।

তাঁহার এই স্মৃতিটুকু জীবনের সাথে জড়িয়ে রাখতে প্রতিবছর রাঙামাটি রাজবন বিহারে আয়োজন করে ধর্মীয় বিভিন্ন অনুষ্ঠান। তাঁর উদ্দেশ্য পূজারী পূর্ণার্থীরা রাত জেগে কেক কাটার অপেক্ষায় প্রহর গুনে।

Facebook Comments Box

শেয়ার দিন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো
© All rights reserved © 2019 bibartanonline.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com
themesbazarbibart251
error: Content is protected !!