ইলা মুৎসুদ্দী
বাংলা ভাষাভাষী বৌদ্ধদের জন্য অনন্য দিন।
ঠিক কবে থেকে বাংলায় ত্রিপিটক অনুবাদ করা শুরু হয়েছিল তার দিনক্ষণ সুনির্দিষ্ট করে বলা সম্ভব নয়। তবে যাঁর মাধ্যমেই শুরু হোক না কেন সবারই ঐকান্তিক প্রচেষ্টা ছিল পূর্ণাঙ্গ ত্রিপিটক একদিন বাংলায় অনুবাদ হবে। পূজ্য প্রজ্ঞালোক মহাস্থবির, পূজ্য আর্যবংশ মহাস্থবিরেরা রেঙ্গুন বৌদ্ধ মিশন প্রেস তৈরি করেছিলেন মূলতঃ এ লক্ষ্যেই। পরবর্তীতে পূজ্য প্রজ্ঞাবংশ মহাথের এবং তাঁর শিষ্যবৃন্দ, পূজ্য সাধনানন্দ মহাস্থবির বনভান্তে এবং তাঁর শিষ্যবৃন্দ সহ আরো অনেকেই এগিয়ে আসেন এই কাজে।
অতঃপর শুক্রবার সেই কাংখিত দিন। সে দিন থেকে থেকে আমরা বলতে পারব পূর্ণাঙ্গ ত্রিপিটক বাংলায় প্রিন্ট ভার্সনে প্রকাশিত হয়েছে। ৩০ ডিসেম্বর শুক্রবার রাংগামাটি রাজবন বিহার এবং সাতকানিয়া থানাধীন করইয়ানগর গ্রামে একযোগে মোড়ক উন্মোচন হবে অভিধর্ম পিটকের পঞ্চম গ্রন্থ এবং ত্রিপিটকের অননূদিত শেষ গ্রন্থ কথাবত্থু ।
রাঙ্গামাটিস্থ রাজবন বৌদ্ধ বিহারে মোড়ক উন্মোচন করবেন রাজবন বিহারের আবাসিক প্রধান, পূজ্য বনভান্তের শিষ্যসংঘের প্রধান ভদন্ত প্রজ্ঞালংকার মহাথের।
করইয়ানগরে গ্রন্থটির মোড়ক উন্মোচন করবেন সাতকানিয়া লোহাগাড়া ভিক্ষু সমিতির কার্যকরী সভাপতি ভদন্ত শীলানন্দ মহাথের, শীলঘাটা জ্ঞানপাল রত্নপ্রিয় অরণ্য কুঠিরের পরিচালক পূজ্য প্রজ্ঞেন্দ্রিয় মহাথের সহ গুণোত্তম ভিক্ষুসংঘরা। বইটির মোড়ক উন্মোচন উপলক্ষে করইয়ানগরে অনুবাদকের গ্রামের বাড়ীতে অষ্টউপকরণ সহ সংঘদান ও মহাসতিপট্ঠান সূত্র পাঠের আয়োজন করা হয়েছে।
প্রায় হাজার পৃষ্ঠার বইটি অনুবাদ করেছেন উজ্জ্বল বড়ুয়া বাসু। বইটিতে ভূমিকা লিখেছেন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন সাংঘিক ব্যক্তিত্ব ভদন্ত প্রজ্ঞাবংশ মহাথেরো। অভিমত দিয়েছেন প্রফেসর ড. সুকোমল বড়ুয়া ও প্রফেসর অর্থদর্শী বড়ুয়া। শাসন সদ্ধর্মের কল্যাণে বইটি বিনামূল্যে বিতরণ করা হবে। পরিশেষে বলতে চাই, আজ থেকে আর কেউ বলতে পারবে না পূর্ণাঙ্গ ত্রিপিটক বাংলায় নেই। আমরা এখন বাংলায় পূর্ণাঙ্গ ত্রিপিটক পড়ার সুযোগ পাব। সকলের মধ্যে সম্যক দৃষ্টি উৎপন্ন হোক।